গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে একই পাড়ার বাসিন্দা রাজু দুয়ারির সঙ্গে বিয়ে হয় তানিয়ার। পেশায় ক্যাবচালক রাজু তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গেই একটি ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। সোমবার সকালে সেই বাড়ি থেকেই সিলিং ফ্যানে গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো অবস্থায় রাজুর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। এদিন সকালে তানিয়া স্বামীর ঝুলন্ত দেহ দেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে খবর দেন। এলাকায় এই খবর চাউর হতেই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। তাঁদের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে রাজুর শ্বশুরবাড়ির উপর। যদিও তা বড় আকার নেওয়ার আগেই মানিকতলা থানার পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রাজুর ভাই সুভাষ দুয়ারির অভিযোগ, তাঁর দাদাকে খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজুর স্ত্রী তানিয়া তার পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে যোগাসাজশ করে খুন করেছেন। এই ঘটনায় রাজুর শ্বশুর-শাশুড়িও যুক্ত রয়েছেন বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। রাজুর পরিবারের সদস্যরা জানালেন, বিয়ের পর থেকে বাগমারি এলাকায় ভাড়া থাকতেন ওই দম্পতি। ওই ভাড়াবাড়ি ঠিক করে দিয়েছিলেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনই। তানিয়ার বাবা-মা’ও সেখানে থাকতেন। পড়শিরা দাবি করেছেন, বিভিন্ন কারণে নানা সময়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হতো। রবিবারও কোনও কারণে অশান্তি হয়। চিৎকার- চেঁচামেচি শুনতে পান তাঁরা। তানিয়া অবশ্য পুলিসের কাছে দাবি করেছেন, রবিবার রাতে ঝামেলা হওয়ার পর তিনি তাঁর আট বছরে পুত্রসন্তানকে নিয়ে বেরিয়ে যান। গভীর রাতে ফিরে তিনি বাবা-মায়ের কাছেই ছিলেন। সকালে ঘরে এসে দেখেন, স্বামীর ঝুলন্ত দেহ। এই ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনও ভাবেই জড়িত নন। যদিও ঠিক কী কারণে মৃত্যু, ঘটনার সময় তানিয়া কী করছিলেন— তদন্তকারীদের কাছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিস জানিয়েছে, আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলা দায়ের করে তিনজনকে আপাতত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দ্রুত চলে এলে তদন্তের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।
রাজুর পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, তানিয়ার একাধিক বন্ধু ছিল। সেই সব পুরষদের সঙ্গে প্রায়ই তিনি ফোনে কথা বলতেন। রাজু কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর মাঝেমধ্যেই ওই ভাড়াবাড়িতেও অনেককে আসতে দেখা যেত। সুভাষ দুয়ারির অভিযোগ, ঘরে মদের আসরও বসাত তানিয়া। এ নিয়েই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগে থাকত। তানিয়ার অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন নিয়েই মূলত রাজুর সঙ্গে ঝামেলা হতো বলে দাবি তাঁদের। রবিবার এমন কারণ নিয়ে ওই দাম্পত্য কলহ হয়। পুলিস জানিয়েছে, বাড়ির ভিতরে একাধিক মদের বোতল মিলেছে। এদিকে, রাজু-তানিয়ার ছেলেকে প্রথমে পড়শিদের কাছে রাখা হয়। তারপর রাজুর পরিজনরা তাকে নিয়ে যান।