অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগটি বিশেষ শুভ। কর্ম সাফল্য ও চিন্তার অবসান। দেবারাধনায় মন। ... বিশদ
নীলাকুরঞ্জি ফুলের নামেই নাকি নীলগিরি পর্বতের নামকরণ! সে ফুল নাকি ফোটে একযুগ অন্তরে। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হয় পাহাড়ের গায়ে! পাহাড় স্নান করে মেঘভাঙা জলে। আর সিঁদুরের মতো গা বেয়ে গলে পড়ে লাল মাটি। যত উপরে ওঠা শুরু হয়, ততই বাড়তে থাকে ঠান্ডা, বদলে যায় দৃশ্যপট। পাহাড়ের গায়ে ভেড়ার লোমের মতো ঘন হয়ে ওঠে চা বাগান। চা পাতায় নরম রোদ পড়ে চকচক করে পান্নার মতো!
গাড়ি চলেছে কুন্নুর রোড ধরে। বৃষ্টি পড়লেই, কুন্নুর রোডে মাঝেমধ্যেই ধস নামে। তাই অনেক পর্যটক কোটাগিরির রাস্তা ধরে আসেন। সেই রাস্তা অবশ্য ১০ কিলোমিটার বেশি। তবে শৈলশহর কুন্নুর ছুঁয়ে উটি পৌঁছনোর অন্য আকর্ষণ। রাস্তায় প্রায় সবসময় দেখা মিলবে বানরকুলের। কপাল ভালো থাকলে দেখতে পাবেন গৌর, লেপার্ড এমনকী হাতিও! কুন্নুর পেরতে পেরতে ঘড়িতে চারটে। বিকেল নামতে শুরু করেছে পাহাড়ে। ঘোরলাগা পথে হঠাৎ ব্রেক। আদিম বনানীর ফাঁক দিয়ে ধোঁয়া ধোঁয়া আলো ধরে কখন যেন পৌঁছে গিয়েছি স্টারলিং উটি ফার্ন হিল রিসর্টে। ইস্! আরও কিছুটা গেলে মন্দ হতো না বোধহয়।
এখানে সকালের রোদ স্বচ্ছ আয়নার মতো। আধো চোখে দরজা খুললে হুড়মড়িয়ে ঢুকে পড়বে হিম বাতাস, নাম না জানা পাখিদের কিচির-মিচির। ব্যালকনির নীচে টুকরো ঘাস জমিতে ফুটেছে ‘জিমিকি পো’, গ্রামোফোনের মতো দেখতে ‘রেডিও পো’ অর্কিড। রয়েছে ম্যাগনোলিয়া, রডোডেনড্রনও! এর পরেই ধাপে ধাপে নেমে গিয়েছে খাদ। পাহাড়ের মাথায় মেঘ লেগে আছে তাতা ফুলের সাদা পাপড়ির মতো। ‘তাতা’ শব্দের অর্থ দাদুর মাথা! শুকিয়ে গেলে গোল তাতা ফুলের পাপড়ি সাদা হয়ে যায়। তাই অমন নামকরণ। চোখ বুঁজে একবুক বাতাস দিয়ে উড়িয়ে দিতে হয় পবিত্র এই ফুলের মিহি পাপড়ি। মনে মনে প্রার্থনা করতে হয় কিছু একটা। পাখির কিঁচিরমিচির বাদ দিলে, শব্দ বলতে কানঘেঁষে বাতাসের শুনশান বয়ে যাওয়া। শিরশিরে বাতাস, বয়ে যাওয়া শূন্যতা ধুয়ে দেয় ফেলে আসা কংক্রিট শহর, তার মলিন ধুলো। তারপর মন চাইলে ওই পাইন বনে খোঁজাই যায় ১২ বছর পর ফুটে ওঠা নীলাকুরঞ্জি।
কীভাবে যাবেন: কলকাতা থেকে কোয়েম্বাটুর যাওয়ার ফ্লাইট বুক করে একদিনেই পৌঁছানো যায় উটি। সড়কপথে কোয়েম্বাটুর থেকে উটি যেতে সময় লাগে ঘণ্টা তিনেক। গাড়ি ভাড়া আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার। হাতে সময় থাকলে দেখে নিন দোদাবেত্তা শৃঙ্গ, উটি লেক, পায়কারা জলপ্রপাত, বোটানিক্যাল গার্ডেন, টোডা উপজাতির গ্রাম।