কাজকর্মে প্রতিকূলতা কেটে ক্রমোন্নতি। সন্তানের আচরণে ও মতিগতি নিয়ে চিন্তা। অর্থাগম হবে। ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একদা সাঁতুড়ি ব্লক বিজেপির শক্ত ঘাঁটি ছিল। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লকের ছয়টি পঞ্চায়েতের মধ্যে চারটি পঞ্চায়েতে বিজেপি বোর্ড গঠন করেছিল। পঞ্চায়েত সমিতি বিজেপি পেলেও ২ সদস্য তৃণমূলে যোগদান করায় হাতছাড়া হয়েছিল। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপি প্রার্থী ব্লক এলাকা থেকে রেকর্ড ভোট পেয়েছিল। তাই প্রাক্তন সাংসদ সুভাষ সরকার রঘুনাথপুর বিধানসভা এলেই সাঁতুড়ি ব্লকে আসতেন। তবে গত লোকসভার পরেই তৃণমূল নেতৃত্ব তাঁদের ভুলগুলি শোধরানোর চেষ্টা করে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার অভিযান চালায়। ২০২১ বিধানসভায় তৃণমূল তার ফল হাতে হাতে পায়। সেই সময় রঘুনাথপুর বিধানসভার বিজেপি বিবেকানন্দ বাউড়ি প্রায় ৪৫০০ ভোটে জিতেছিল। তবে সাঁতুড়ি ব্লকে বিজেপি নয়, তৃণমূলের প্রার্থীকে প্রায় ৩৬০০ ভোটে লিড দিয়েছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্লক এলাকায় বিজেপি ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদে তৃণমূল জয়ী হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁতুড়ি ব্লকটি (রঘুনাথপুর বিধানসভা) বাঁকুড়া লোকসভার মধ্যে রয়েছে। এবারের লোকসভায় সাঁতুড়িতে বিজেপি নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছিল। ত্রিপুরার মন্ত্রীকে এনে অঞ্চলগুলিতে সভা করেছিল। প্রার্থীকে নিয়ে হুডখোলা গাড়িতে গ্রামে গ্রামে করা হয়েছিল প্রচার। জে পি নাড্ডাকে এনে গড়শিকা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাসডিমা ময়দানে জনসভা করেছিল। তবে সেই জনসভায় তেমন ভিড় হয়নি। ফলে সেখানেই বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক যে ফিরছে না, তা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতারা বড় কোনও জনসভায় করেননি। তাঁরা বাড়িতে বাড়িতে প্রচারে জোর দেন। কয়েকদিন দলীয় প্রার্থী অরূপ চক্রবর্তীকে নিয়ে হুডখোলা গাড়িতে প্রচার সারেন। বুথস্তর থেকে প্রচার হওয়ায় তৃণমূলের ফল ভালো হয়। খারাপ ফলাফল প্রসঙ্গে রঘুনাথপুর বিধানসভার বিজেপি কনভেনর অরূপ আচার্য বলেন, আমরা আদিবাসী ও মুসলিম ভোট টানতে ব্যর্থ হয়েছি। বিজেপিতে ভোট দিলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ হয়ে যাবে। তৃণমূল প্রচারে আদিবাসীদের সেই কথা বুঝিয়েছে। তার জন্য ব্লক এলাকার ৩৩টি আদিবাসী বুথের মধ্যে মাত্র একটি বুথে আমরা জিতেছি। অন্যদিকে দু’টি মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামে আমরা ভোট পেয়েছি ২০০টি। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস ৩৬০০টি ভোট পেয়েছে। ভোটারদের সঠিকভাবে বোঝাতে না পারায় আমরা হেরেছি।
যদিও সাঁতুড়ি তৃণমূল ব্লক সভাপতি রামপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, সাঁতুড়ি ব্লকের মানুষ দেখেছেন পাঁচ বছর পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় থেকে বিজেপি কীভাবে দুর্নীতি করেছে। এখন ওদের নিজের লোকেরাই ওদের দলে নেই। তাই উন্নয়নের স্বার্থে মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে।