কাজকর্মে প্রতিকূলতা কেটে ক্রমোন্নতি। সন্তানের আচরণে ও মতিগতি নিয়ে চিন্তা। অর্থাগম হবে। ... বিশদ
প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত মাছের প্রজননকাল। তাই এই সময় সমুদ্র ও নদীতে মাছ ধরা নিষেধ থাকে। নিষেধাজ্ঞা উঠলে জীবনের রসদের খোঁজে সমুদ্রে দলবেঁধে সমুদ্রে পাড়ি দেন মৎস্যজীবীরা। জালে ইলিশ উঠলেই দুটো পয়সার মুখ দেখতে পান মৎস্যজীবীরা। লাভবান হন ট্রলার ও লঞ্চ মালিকরা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূল এলাকার একটি বড় অংশের মানুষের জীবন-জীবিকা মৎস্যশিকারের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। দীঘা, শঙ্করপুর, শৌলা, পেটুয়াঘাট ও বিভিন্ন মৎস্যবন্দর থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার মৎস্যজীবী গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান। দু’মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকাকালীন সময়ে মৎস্যজীবীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্য রাজ্য সরকার চালু হয়েছে ‘সমুদ্রসাথী’ প্রকল্প। ব্যান পিরিয়ডের দু’ মাসে পাঁচ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বর্ষাকালে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনায় পড়ে মৎস্যজীবীদের ট্রলার ও লঞ্চ। প্রাণহানিও ঘটে। তাই মৎস্যদপ্তর ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফে দুর্ঘটনা এড়াতে গভীর সমুদ্রে যাওয়া প্রতিটি ট্রলার, লঞ্চে বিপদসঙ্কেত প্রেরক যন্ত্র (জিপিআরএস ডিভাইস) এবং অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অনেক সময়ে ভুল করে ভারতের জলসীমা পেরিয়ে ট্রলারগুলি বাংলাদেশের মধ্যে ঢুকে পড়ে। সে দেশের পুলিস মৎস্যজীবীদের গ্রেপ্তার করে। এ বিষয়েও মৎস্যজীবীদের সতর্ক করেছে মৎস্যদপ্তর।
জেলা সহ মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) জয়ন্তকুমার প্রধান বলেন, মৎস্যজীবীদের লাইফ জ্যাকেট, বয়া সঙ্গে রাখা যেমন বাধ্যতামূলক, তেমনি লাইসেন্সের কাগজপত্র সহ জীবনবিমার নথিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। মাছ ধরার ক্ষেত্রে ৯০ মিলিমিটারের কম পরিধির ফাঁসযুক্ত জাল ব্যবহার করা যাবে না। ২৩ সেন্টিমিটারের কম দৈর্ঘ্যের মাছ ধরা যাবে না। সমস্ত সরকারি নিয়মনীতি মানার বিষয়ে সতর্ক করতে মাইকে প্রচার করা হয়েছে। দীঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, বেশ কয়েক বছর হল, আশানুরূপ ইলিশ ধরা না পড়ায় মৎস্যজীবীদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি তো রয়েছেই, মাছ ধরার বিভিন্ন সামগ্রীর দামও বেড়েছে। এক্ষেত্রে ইলিশ সহ অন্যান্য মাছ যথেষ্ট পরিমাণে ধরা পড়লে তবেই দুটো পয়সার মুখ দেখা যায়। আমরা আশাবাদী, গত কয়েক বছরের খরা কাটিয়ে এবার ‘রুপোলি শস্য’-এর দেখা মিলবে।