কর্মপ্রার্থীদের ক্ষেত্রে শুভ। যোগাযোগ রক্ষা করে চললে কর্মলাভের সম্ভাবনা। ব্যবসা শুরু করলে ভালোই হবে। উচ্চতর ... বিশদ
রাজনৈতিক মহলের মতে, কোচবিহারে তৃণমূলের রাজনীতিতে এক বিচিত্র পরিমণ্ডল তৈরি হচ্ছে। একদিন যাঁরা দলের অন্দরে অন্যদের দমিয়ে রাখতেন তাঁরা এখন কার্যত রিজার্ভ বেঞ্চে বসে রয়েছেন। অন্যদিকে দলের অন্দরে যাঁদের মতামতের এতদিন কোনও গুরুত্ব ছিল না তাঁদের হাতেই এখন দলের রাশ। দলীয় সূত্রে খবর, কার্যত রবি জমানার যবনিকা পতনের জন্য সবরকম তৎপরতাই শুরু হয়ে গিয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতিতে আরও একলা হয়ে যাচ্ছেন সেই রবীন্দ্রনাথবাবু। যিনি তিল তিল করে দলটাকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছিলেন।
পার্থবাবু বলেন, কাউকে কোণঠাসা করার কোনও প্রশ্নই নেই। রবীন্দ্রনাথবাবুর পরামর্শে, তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বেই দল পরিচালিত হবে। তিনি স্পষ্টভাবেই জানিয়েছেন সবরকমভাবে তিনি সহযোগিতা করবেন। আমাদের মধ্যে কোথাও কোনওরকম দ্বন্দ্ব নেই। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, দল আবার ঘুরে দাঁড়াবে। সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে দলের কাজ করছি।
কোচবিহারে তৃণমূলের রাজনীতিতে কাকা ভাইপোর লড়াই অন্যতম চর্চার বিষয়। কে কাকে কখন কতটা জব্দ করতে পারল তা নিয়ে চায়ের ঠেক থেকে বাড়ির অন্দরমহলেও নানা কাহিনী জমে ওঠে। বিগত দিনে রবিবাবুর দাপটে পার্থবাবু অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে গিয়েছিলেন। এমনকী পারস্পরিক তিক্ততা এমন জায়গাতে গিয়েছিল যে তাঁকে যাতে কেউ কাকা বলে না ডাকে সেব্যাপারেও স্পষ্ট নিদান দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। এমনকী পার্থবাবু যাতে প্রার্থী হতে না পারেন সেজন্য রবীন্দ্রনাথবাবুই কলকাঠি নেড়েছিলেন এমন চর্চাও শাসকদলের রাজনীতিতে নতুন কিছু নয়। তবে বর্তমানে ভোটের ফলাফল বের হতেই যাবতীয় দায় রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘাড়ে চাপানোর জন্য দলের একাংশ উঠেপড়ে লেগেছে। রবীনাথবাবুও তাঁর দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে চেয়ে সম্প্রতি দলনেত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। রাজ্য তৃণমূল তাঁকে দলের জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারিত করেছে। ২১ বছর পর টানা এই পদে থেকে অপসারিত হয়েছেন। সেই আনন্দে বাজিও ফাটিয়েছেন দলের একাংশ। এখন জেলা তৃণমূলের সভাপতি হয়েছেন দলের অন্দরে রবীন্দ্রনাথ বিরোধী গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা বলে পরিচিত বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। দলের রাশ হাতে পেয়েই প্রথমেই কার্যত রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামীদের ডানা ছাঁটার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জেলার সমস্ত ব্লক কমিটিগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেই কমিটিগুলিতে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠরাই এতদিন ছিলেন। সেক্ষেত্রে নতুন যে কমিটি তৈরি হবে সেখানে আদৌ রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠরা সুযোগ পান কিনা সেদিকেও রাজনৈতিক মহলের নজর রয়েছে। এদিকে দলের নিচুতলার কর্মীদের দাবি, জেলা তৃণমূলে এখনও রবীন্দ্রনাথবাবুর বিকল্প তৈরি হয়নি। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেও দেখা গিয়েছে দলীয় পার্টি অফিস উদ্ধারের জন্য তিনি বার বার গ্রামগুলিতে গিয়েছেন। বিক্ষোভের মুখে পড়েও মাটি কামড়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। সেই লড়াকু মানসিকতা কি আদৌ আছে বর্তমানে ক্ষমতাসীন জেলা নেতৃত্বের? রবীন্দ্রনাথবাবুকে সাইড বেঞ্চে বসিয়ে রেখে দল আরও দিশেহারা ও অভিভাবকশূন্য হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কাও দানা বাঁধছে।