যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
রবিবার সন্ধ্যে ৬টা ২ মিনিটে এরোফ্লোটসের সুখোই সুপারজেট ১০০ বিমান (এসইউ-১৪৯২)-টি সেরেমেতিয়েভো বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। গন্তব্য ছিল রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমের মুরমনস্ক শহর। উড়ানের কয়েক মিনিট পর বিমানে কিছু সমস্যা লক্ষ্য করেন পাইলট ও ক্রু মেম্বাররা। এরপরই জরুরি অবতরণের জন্য বার্তা পাঠান পাইলট। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় বিমানটি অবতরণ করতে সক্ষম হন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দুর্ঘটনার বেশ কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বিমানবন্দরে অবতরণের সময়ই বিমানের পিছনদিকের অনেকটা অংশ দাউদাউ করে জ্বলছে। গোটা চত্বর ঘন কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। বিমানের সামনের আপত্কালীন দরজা দিয়ে স্কিড করে যাত্রীরা নেমে আসছেন এবং সেখান থেকে ছুটে পালানোর চেষ্টা করছেন। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায়, যাত্রীরা ভয় পেয়ে চিত্কার-চেঁচামেচি ও কান্নাকাটি করছেন।
এই অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে এখনও সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে, বিমানের চালক ও যাত্রীদের মতে, বাজ পড়ার কারণেই বিমানটি দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। মস্কোর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে সেই সময় বজ্রবিদ্যুত্ সহ প্রবল ঝড় চলছিল। ফলে এই বাজ-তত্ত্বকে অনেকেই সমর্থন করছেন। কিন্তু, এখনই কোনও সিদ্ধান্তে আসতে রাজি নন তদন্তকারীরা। তাঁরা মূলত তিনটি বিষয় খতিয়ে দেখছে। এগুলি হল, খারাপ আবহাওয়া, পাইলটের অনভিজ্ঞতা এবং যান্ত্রিক ত্রুটি। তাঁদের মতে, এই তিনটির মধ্যে কোনও একটি কারণে ওই পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ইতিমধ্যেই এরোফ্লোটসের এই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স ও দুটি রেকর্ডার উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তে এইগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছে।
স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে পাইলট এভদোকিমভ জানিয়েছেন, বাজ পড়ার পরই সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর আপত্কালীন রেডিও কমিউনিকেশনের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সংযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তাই জরুরি অবতরণের জন্য বার্তা পাঠান পাইলট। তবে, বাজ সরাসরি বিমানে আঘাত করেছিল কি না, তা নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাতে পারেননি তিনি। যাত্রীদের মধ্যেও অনেকেই এই বাজ-তত্ত্বকেই সমর্থন করছেন। বিমানে থাকা দিমিত্রি ক্লেবুশকিন, পোয়োটর ইগোরভ একই কথা জানিয়েছেন। মৃত্যুর এত কাছ থেকে ফিরে আসার পর এখনও আতঙ্ক পিছু করছে তাঁদের। এই দুই যাত্রীর কথায়, যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই বাজ পড়ে। খুব খারাপভাবে বিমানটি অবতরণ করেছিল। বেঁচে থাকব, ভাবতেই পারিনি।
এই ঘটনার পর প্রচুর বিমানকে মস্কোর অন্যান্য বিমানবন্দরে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিনের ঘটনায় মৃতদের মধ্যে একটা বড় অংশই মুরমনস্ক প্রদেশের। সেখানে তিনদিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে সুখোই সুপারজেট-১০০ বিমানটি উড়ান শুরু করে। ২০১২ সালে ইন্দোনেশিয়ার একটি এয়ার শোতে অংশ নেওয়া সুপারজেট একটি আগ্নেয়গিরিতে ধাক্কা মারে। বিমানে থাকা ৪৫ জনই প্রাণ হারান।