নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পুরভোটের দিনক্ষণ নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি’র তরজা শুরু হয়ে গেল। রাজ্য সরকার মোটামুটি ঠিক করেছে, কলকাতা ও হাওড়া পুরসভার ভোট হবে ১২ এপ্রিল। বাকি পুরসভার ভোট হবে ২৬ এপ্রিল। এই প্রস্তাবিত দিন নিয়ে আপত্তি জানিয়ে বিজেপি বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করে এপ্রিল মাসের প্রস্তাবিত দিনে ভোট না করে তা পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা মাথায় রেখেই দিনক্ষণ ঠিক করা উচিত। প্রচারের সময় বেশি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি নেতারা। সেই সঙ্গে আপত্তি জানিয়েছে ব্যালটে ভোট করার প্রস্তাব নিয়েও। অবশ্য কমিশন এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি।
পুরমন্ত্রী তথা তৃণমূল পুরদলের আহ্বায়ক ফিরহাদ হাকিম এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, পুরভোটে যারা পিছিয়ে থাকে, পাশ করতে পারে না, তারাই ভোট পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলে। ভোটের দিন চূড়ান্ত করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে আইনে বলা আছে, কমপক্ষে প্রচারের জন্য ১৪ দিন থাকতে হবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ১৪ দিন মাঝে রেখেই ভোট হবে। আর ব্যালটে হবে না, ইভিএমে হবে সেই সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আগে থেকে এত ভয় পাচ্ছে কেন বিজেপি। গত উপনির্বাচনের ফল দেখে কি ভয় পাচ্ছে তারা। যারা সারা বছর পড়াশোনা করে, তাদের কোনও ভয় থাকে না। আমরা সারা বছর পড়ি, তাই আমাদের কোনও ভয় নেই। আমরা ফার্স্ট বয়, ওরা লাস্ট বয়।
অবশ্য ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ওরা এত ভালো ছাত্র যে, ১৭টি পুরসভায় দেড় বছর হল ভোট করতে পারে না। পরীক্ষা দিতে চাইছে না। এতদিন ভোট আটকে রেখেছে। আগে তার উত্তর দিন, তারপর দেখা যাবে, কে ভালো ছাত্র? ভোটে লড়াইয়ের জন্য বিজেপি প্রস্তুত আছে।
এদিকে, কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসে ১০২টি পুরসভার ভোট নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির আগে যেসব পরিকাঠামো তৈরি করা দরকার, সেই কাজও শুরু হয়েছে। ভোটের কাজে যুক্ত থাকার জন্য অফিসার নিয়োগের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ভোটকর্মী তৈরি করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার তিন জেলাশাসকের সঙ্গে ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস। আগামী সপ্তাহে বাকি জেলাগুলির জেলাশাসক, ওসি ইলেকশনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর আইনশৃঙ্খলা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাস রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।