উচ্চবিদ্যার ক্ষেত্রে সাফল্য আসবে। হিসেব করে চললে তেমন আর্থিক সমস্যায় পড়তে হবে না। ব্যবসায় উন্নতি ... বিশদ
বাড়ির বাইরে মেয়েরা যতটা মুক্ত, বাড়ির ভেতরে কি তাঁরা ততটাই স্বাধীন? অপ্রত্যাশিত কোভিড পরিস্থিতি এই অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে অনেককে। গৃহবন্দিজীবন কাটাতে গিয়ে পুরুষদের মোক্ষম উপলব্ধি — সমীকরণে গলদ রয়েছে বিস্তর। ঘরের কাজে সামান্যই তাঁদের অংশগ্রহণ। রান্নাবান্নার বিশাল ঝক্কি বাদ দিলেও পড়ে থাকে ঘরদোর মোছা, বাসনকোসন ধোয়া, জামাকাপড় গোছগাছ করার মতো একের পর এক গুরুদায়িত্ব। এতদিন এসব একার হাতেই সামলাতে হতো মেয়েদের। কিন্তু কোভিডের ‘সৌজন্যে’ এবার পুরুষও এসবে হাত পাকাতে শুরু করেছেন। রুটি বেলা থেকে শুরু করে ঘরদোর সাফসাফাই — ঘাম ঝরিয়ে রীতিমতো ট্রেনিং নিতে শুরু করেছেন তাঁরা। শিক্ষক স্ত্রীই।
এমনই একজন হলেন পরীক্ষিত যোশি। পেশায় বিজ্ঞাপন এজেন্সির কর্মী। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি, ‘আগে কালেভদ্রে রান্নাঘরে ঢুকতাম। মাঝেসাঝে বাসন ধুয়েমুছে রাখতাম। কাজ বলতে এটুকুই। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে ধারণা অনেকটাই বদলেছে। এখন নিজে রান্না করতে শিখেছি। শাকসব্জির বাজারও আমিই করছি।’ সদ্য শেখা বিদ্যে আর তরতাজা সব্জি পরখ করে কেনার আনন্দে মশগুল পরীক্ষিত। রোজই রেসিপি ঘেঁটে জিভে জল আনা ভেজ ডিশ বানাচ্ছেন তিনি। নম্বর দিচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। কোনওদিন প্রশংসা জুটছে। কোনওদিন ভুল শুধরে দিচ্ছেন ধৈর্যশীলা সহধর্মিণী। এতদিন রান্নায় নুন-ঝালের কমবেশি নিয়ে এন্তার অভিযোগ ছুঁড়ে দিতেন পরীক্ষিত। কোভিড এসে কান মুলে দেওয়ায় তিনিই এখন অনুগত ছাত্র!
পরীক্ষিত একা নন। করোনা আবহে তাঁর মতো আরও অনেকের হুঁশ ফিরেছে। যেমন, সাকেত শিন্ডে। এতদিন ভাবতেন, ব্যাগ ঝুলিয়ে বাজার করা আর ফ্যান খারাপ হলে মেকানিক ডেকে আনা মানেই বাড়ির কাজে যথেষ্ট অবদান। লকডাউনে সে ভুল ভেঙেছে। এখন এক হাতে চলে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’, অন্য হাতে ‘ওয়ার্ক ইন হোম’। উঠোন ঝাঁট দেওয়া, ঘর মোছা থেকে শুরু করে বাসন ধুয়ে রাখা— লেটার মার্কস নিয়েই সাকেত সবেতে পাশ করেছেন পরীক্ষক স্ত্রীর কাছে। লকডাউন উঠে গেলেও এই ধারা বদলাবে না। এতদিন ধরে ঘর সামলে রাখা স্ত্রীকে এমন কথাই দিয়েছেন তিনি।
করোনা এসে অনেক কিছু বদলেছে। বাদ পড়েনি চার দেওয়ালের পরিচিত পরিবেশের নকশাটাও। অবশ্যই সদর্থক উপায়ে। ঘরের দায়দায়িত্ব আজ আর শুধুই নারীর মাথাব্যথা নয়। তাতে জরুরি পুরুষের সমান অংশগ্রহণ। বিলম্বিত বোধোদয় হলেও এতে আশার আলো দেখছেন অনেকে।