কর্মপ্রার্থীরা বেশ কিছু সুযোগের সংবাদে আনন্দিত হবেন। বিদ্যার্থীরা পরিশ্রমের সুফল নিশ্চয় পাবে। ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ... বিশদ
গলওয়ান পরবর্তী সময়ে চীনের হ্যাকারগোষ্ঠী অত্যন্ত সক্রিয়। দুনিয়াদারিতেও তারা এখন এগিয়ে। শত্রু দেশের সামরিক ভাণ্ডারেই বেশি নজর তাদের। কাজ একটাই, গোপন তথ্য, সামরিক কৌশল হাতিয়ে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মিকে সরবরাহ করা। এই মুহূর্তে তাদের বড় টার্গেট ভারত। আর এবার চরবৃত্তিতে চীনা সংস্থাগুলি হ্যাকারদের দোসর হতে পারে... এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না গোয়েন্দারা। সন্দেহের তালিকায় মূলত গাড়ি ও মোবাইলের যন্ত্রাংশ নির্মাণকারী সংস্থাগুলি। ভারতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লগ্নিও করেছে তারা। উৎপাদন ইউনিট রয়েছে কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আবার লালফৌজের সঙ্গেও সংস্থাগুলির মধুর সম্পর্ক। চীনের বাহিনীকে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘টেকনিক্যাল সাপোর্ট’ দিয়ে থাকে। ভারতের অভ্যন্তরীণ তথ্য হাতাতে কৌশলে এই সংস্থাগুলিকে কাজে লাগাতে পারে চীন। সেই আশঙ্কা থেকেই সংস্থাগুলির উপর কড়া নজরদারি গোয়েন্দাদের। তালিকায় রয়েছে ১৫টি সংস্থা। ইতিমধ্যেই তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে ভারতের সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন এজেন্সি। সংস্থাগুলিতে কারা আসছেন, তাঁরা কী করছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য কী—এই সব বিষয়ে নানা তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে।
কীভাবে সংস্থাগুলি চরবৃত্তির কাজ করতে পারে? চীনের বহু সংস্থা ভারতে বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রে লগ্নি করেছে। এর জন্য এ দেশের সংস্থাগুলির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে তারা। আবার কোনও চীনা সংস্থা সরাসরি বিনিয়োগও করেছে। গাড়ির যন্ত্রাংশ, মোবাইল সহ বিভিন্ন জিনিস চীন থেকে এনে এখানে ‘অ্যাসেম্বলিং’ এর কাজ করে। ছোট ছোট উৎপাদন ইউনিটও খুলেছে বিভিন্ন রাজ্যে। এইসব সংস্থাগুলিতে ভারতীয়রাই কাজ করেন। নিয়ন্ত্রণ করে চীন। প্রযুক্তিগত বিষয়টি দেখভালের জন্য চীনের বিশেষজ্ঞদের ইউনিটগুলিতে আসতে হয়।
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, গাড়ি, মোবাইল কিংবা পাওয়ার সেক্টরের সঙ্গে জড়িত চীনা সংস্থাগুলি লালফৌজের বিভিন্ন কাজ করে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘রিপেয়ারিং জব’ ছাড়াও বহু সামগ্রী তৈরি করে দেয় পিএলএকে। সেই কারণে সংস্থাগুলির কর্তাদের সঙ্গে চীনা বাহিনীর শীর্ষ কর্তাদের যোগাযোগ বেশ ভালো। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, এই সব সংস্থার কর্মীদের চর হিসেবে নিযুক্ত করে ভারতের ভিতরের তথ্য জানতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে চীন। সে ক্ষেত্রে কৌশল হিসেবে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে বরাত বাড়ানোর টোপ দিচ্ছে চীনা সংস্থাগুলি। সেখানে ঘুরপথে দেদার টাকাও ঢালতে চাইছে তারা। কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি চা বাগানে চীন ঘুরপথে লগ্নি করতে চেয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তা এজেন্সির তৎপরতায় তাদের সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বছর দু’য়েক আগের ঘটনা। উত্তরবঙ্গে পাসপোর্ট ও ভিসা ছাড়া এক চীনা নাগরিক ধরা পড়েন। জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন, চর হিসেবে তাঁকে নিযুক্ত করেছিল চীন। উত্তরবঙ্গে ভৌগোলিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের খবর জানতেই তিনি এসেছিলেন। সেই তথ্য চীনের হাতে তুলে দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য ছিল। এরই পাশাপাশি ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে যে সকল চীনা নাগরিক এদেশে সম্প্রতি এসেছেন, তাঁদের সম্পূর্ণ জীবনপঞ্জি জোগাড় করছেন গোয়েন্দারা। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনও স্থানে তাঁরা বারবার ভিজিট করেছেন কি না, সেখান থেকে ছবি বা অন্য কোনও নথি সংগ্রহ করেছেন কি না, তারও খোঁজখবর চলছে।