কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীর ঈর্ষার কারণে সম্মানহানি হবে। ব্যবসায়ীদের আশানুরূপ লাভ না হলেও মন্দ হবে না। দীর্ঘ ... বিশদ
সকাল থেকেই দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছিল। বুধবার বিকেল গড়াতেই ঝোড়ো হাওয়া বইতে থাকে। গোটা শহর অন্ধকার ঢেকে যায়। তুমুল বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় উম-পুনের তাণ্ডবলীলা। মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে শহরের একের পর এক গাছ ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু বাড়ির অ্যাসবেস্টস ও টালির ছাউনি উড়ে গিয়েছে। এছাড়াও ভেঙে পড়েছে রাস্তার পার্শ্ববর্তী হোর্ডিং বোর্ড লাগানোর লোহার কাঠামো। কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের কর্তারা জানিয়েছেন, শহরে প্রায় ২০০টি’র উপরে ছোটবড় গাছ ভেঙে পড়েছে।
আইলা যখন সুন্দরবনের উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়েছিল, সেখানে তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২৫-১৩০ কিলোমিটার। আর কলকাতায় কার্যত আইলার লেজের ঝাপটা লেগেছিল। সেদিন কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ৯০ কিলোমিটারের আশেপাশে। তবু কার্যত লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল শহর। এবার তো শুধু শহরের উপরেই এতটা গতিবেগ বেশি ছিল, যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোথায় কী দাঁড়াবে, কেউ বুঝতে পারছেন না। সেই প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি আজ, বৃহস্পতিবার বোঝা যাবে বলে দাবি কর্তাদের।
কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমে বসে পরিস্থিতি উপরে নজরদারি রাখতে রাখতে প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম বলেন, শহরের বহু জায়গায় বাতিস্তম্ভ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গিয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি একেবারে থামার পর কাজ শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাতে কলকাতার প্রশাসক শহরের বিভিন্ন জায়গায় পরিস্থিতি দেখতে বের হন। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্তাদের কথায়, শহরে ৫৯টি বিপজ্জনক বাড়ি রয়েছে। সেগুলি থেকে লোকজনকে উদ্ধার করে সুরক্ষিত জায়গায় স্থানান্তর করা গেলেও অনেকে যেতে রাজি হননি। প্রায় সাড়ে সাত-আট হাজার লোককে স্থানান্তর করা গিয়েছে। এদিকে এরই মধ্যে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের নূল আলি লেনে মহম্মদ তৌহিদ নামে এক যুবক টেলরিং-এর দোকানে শাটার বন্ধ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়। অন্যদিকে, ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের রিজেন্ট পার্কে একটি পরিত্যক্ত কারখানার দেওয়াল চাপা পড়ে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ আলিপুর, ক্যামাক স্ট্রিট, রেড রোড, ম্যাডক্স স্কোয়ার, রানী দেবেন্দ্রবালা রোড, উল্লাসকর দত্ত সরণী, বোসপুকুর রোড, সি আর অ্যাভিনিউ, টালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, হরিশ মুখার্জি রোড ও বলরাম ঘাট রোড, চেতলা রোড, বিপিন পাল রোড, নিউ ট্যাংরা রোড, জাজেস কোর্ট রোড, গড়িয়াহাট সহ শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় গাছ পড়ে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। এছাড়া, ট্রাফিক সিগন্যাল পোস্ট, বাতিস্তম্ভ উপরে গাছ পড়ে সেগুলি রাস্তায় ভেঙে পড়েছে। শহরে এদিন ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টি হয়েছে। তবে সবক’টি নিকাশি পাম্প এদিন চলেছে। যদিও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের বিস্তীর্ণ অংশে জল জমে গিয়েছে।