কর্মপ্রার্থীদের কর্মযোগে বিলম্ব ঘটবে। বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মযোগ আছে। ব্যবসায় যোগ দেওয়া যেতে পারে। কোনও বন্ধুর ... বিশদ
নওদার ত্রিমোহনী গ্রামের আনসারি শেখ চার বছর ধরে দিল্লিতে যাতায়াত করছেন। তাঁর সঙ্গে ওই এলাকার আরও ১২ জন শ্রমিক একটি কারখানায় কাজ করতেন। গণ্ডাচক এলাকায় একটি ছোট বাড়ি ভাড়া নিয়ে তাঁরা থাকতেন। আনসারি শেখ বলেন, সংঘর্ষের সময় বাইরে শুধু গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। দরজা যাতে কেউ না খুলতে পারে তারজন্য পালা করে সেখানে ঠেস দিয়ে বসে থাকতাম। দু’রাত কেউ ঘুমোতে পারিনি। অবশেষে বুধবার পুলিস গিয়ে উদ্ধার করে আমাদের ট্রেনে তুলে দেয়। আরেক শ্রমিক মহম্মদ কালাম বলেন, জেলার অনেক শ্রমিক দিল্লিতে কাজ করেন। তাঁরা কী অবস্থায় রয়েছেন কে জানে। আমরা গণ্ডাচক এলাকায় থাকতাম। বেশ কয়েক বছর ধরেই দিল্লি যাচ্ছি। সবাই এখানে মিলেমিশে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে এমন হবে ভাবতে পারিনি। এলাকার কোনও দোকান খোলা নেই। অধিকাংশ দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় খুব আতঙ্কের মধ্যে ছিলাম। ফোনে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। তবে আমাদের ঘরে কেউ আক্রমণ করেনি। সবকিছু বাইরে হয়েছে। সংঘর্ষ থামার পর পুরো এলাকায় শ্মাশানের নিস্তব্ধতা নেমে আসে। পুলিস এলাকার দখল নেয়। তারাই আমাদের ঘর থেকে উদ্ধার করে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়েছে। আগে বাড়ি ফেরার পর দিল্লি যাওয়ার জন্য মন ছটফট করত। এবার যে ছবি চোখের সামনে দেখলাম তাতে দিল্লিতে আর যাব কিনা তা নিয়ে ভাবতে হবে। এদিকে বৃহস্পতিবার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী দাবি করেন, বাঙালি শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর জন্য তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, বুধবার জেলার ছেলেদের দিল্লিতে আটকে থাকার কথা জানতে পারি। তারপরই আমি আমার দিল্লির অফিসকে সক্রিয় করি। মন্ত্রীকে ফোন করে তাঁদের উদ্ধারের জন্য বলি। তারপরেই পুলিস পাঠিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়। দিল্লিতে বাংলার কারও অসুবিধা হলে তাঁরা আমার অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। সবরকম সহযোগিতা করা হবে।
ঘরের ছেলেরা ঘরে ফেরার ট্রেন ধরায় স্বস্তি ফিরে পেয়েছেন তাঁদের পরিবারের লোকজনও। শ্রমিক অ্যান্টন শেখ বলেন, দিল্লির বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন। গণ্ডাচকের অনেকের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আমরা ঘরে ফিরলেও তাঁদের জন্য চিন্তা হচ্ছে। মহল্লা আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসুক, এটাই চাই।