গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১০ বছর আগে দুবরাজপুর থানার যশপুরের আলপনা বাগদির সঙ্গে ওই থানার দেবীপুরের মিলন বাগদির বিয়ে হয়। প্রথম দিকে সবকিছুই ঠিক ছিল। স্বামী দিনমজুর হলেও একান্নবর্তী পরিবারে খুব একটা অভাব ছিল না। ওই দম্পতির দুটি সন্তানও হয়। কিন্তু এরপরেই ক্রমশ বদলাতে থাকে পরিবারের চিত্র। নানা কারণে অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ ওঠে বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার দাবিতে গৃহবধূর উপর অত্যাচার শুরু করে আলপনাদেবীর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মাঝেমধ্যেই তাঁকে মারধর করা হতো। এই পরিস্থিতিতে ২০১৭ সালের ১৩ মে আলপনাদেবীর বাবা নেপাল বাগদির কাছে মেয়ের মৃত্যুর খবর আসে। তিনি থানায় অভিযোগ করে জানান, ১২মে জামাই সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর মেয়ের সারা শরীরে কুপিয়ে গলায় গামছা দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে। এরপর মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করার পাশাপাশি অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিস মৃতার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি, ও দেওরকে গ্রেপ্তার করে। ঘটনায় অপর দুই অভিযুক্ত মৃতার ভাশুর ও জা পালিয়ে যায়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শরীরের বহু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। সেই থেকে পুলিস নিশ্চিত হয় যে খুন করার আগে গৃহবধূর প্রতি অমানবিক অত্যাচার চালানো হয়। এরপর সিউড়ি আদালতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। বধূর ভাশুর ও তার স্ত্রীকে ফেরার দেখিয়েই পুলিস মামলার চার্জশিট পেশ করে। চিকিৎসক, পুলিস সহ মোট ১৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে শুনানি পর্ব শেষ করা হয়। এদিন জেলা জজের এজলাসে মামলাটি উঠলে ৪৯৮(এ), ৩০২, ৩৪ সহ একাধিক ধারায় চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। এই ধারাগুলিতে দোষী হলে ফাঁসি, যাবজ্জীবন সহ কী কী সাজা হতে পারে তা আসামীদের শোনানো হয়। এর পরে মৃতার স্বামী মিলন বাগদিকে বিচারক প্রশ্ন করেন সাজা নিয়ে কিছু বলার আছে? কিন্তু সম্পূর্ণ নীরব থাকে সে। দেওর কাঞ্চন বাগদি ও শ্বশুর নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করে। কিন্তু এজলাসেই কান্নায় ভেঙে পড়ে অসুস্থ হয়ে যায় বধূর শাশুড়ি পার্বতী বাগদি। আজ শুক্রবার এই মামলার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।
সরকারি আইনজীবী তপন গোস্বামী বলেন, গৃহবধূকে নৃশংসভাবে খুনের দায়ে স্বামী সহ মোট চারজনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক। আজ, শুক্রবার সাজা ঘোষণা হবে।