পারিবারিক বা শেয়ার প্রভৃতি ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম ও সঞ্চয় যোগ। ব্যবসা ও কর্মক্ষেত্রে অগ্রগতি। মনে ... বিশদ
ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে দেশের যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে গোটা বিশ্ব কুর্নিশ করে, তার নাম ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, সংক্ষেপে আইআইটি। এক বঙ্গ সন্তানের মস্তিষ্কপ্রসূত উচ্চশিক্ষার এই গর্বের প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু ১৯৫০ সালে। দেশের প্রথম আইআইটি’র ক্যাম্পাস তৈরি হয় বাংলার খড়্গপুরে। পরবর্তী সাত দশকে এই প্রতিষ্ঠানের উত্থান, জনপ্রিয়তা ও উৎকর্ষ দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ২৩টি আইআইটিতে দেশের অন্যতম সেরা মেধাবী পড়ুয়ারা পড়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন। এর অন্যতম কারণ, আইআইটি পাশ করা কোনও পড়ুয়াকে চাকরির জন্য কার্যত দরজায় দরজায় কড়া নাড়তে হয় না। বরং ছাত্র জীবনের শেষ লগ্নে তাঁদের মেধা কিনতে ক্যাম্পাসের দরজায় হাজির হন তাবৎ নিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা। প্রায় প্রতি বছরই দেখা যায়, আইআইটি’র কোনও পড়ুয়া প্রথম চাকরিতে যোগ দিয়েছেন রেকর্ড পরিমাণ বেতনের নজির গড়ে। মোদির রাজত্বে সেই স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানেও বেকারত্বের হাহাকার শোনা যাচ্ছে! ছবিটা প্রকাশ্যে এসেছে আইআইটি’র-ই এক প্রাক্তনীর তৎপরতায়। তথ্য জানার অধিকার আইনে তাঁর প্রশ্নের জবাবে সরকার যা জানিয়েছে তাতে লজ্জায় মুখ ঢাকার জায়গা নেই। দেখা যাচ্ছে ২০২২ সালে দেশের ২৩টি আইআইটি’র ১৭ হাজার ৯০০ পড়ুয়া চাকরির জন্য নাম নথিভুক্ত করান। এঁদের মধ্যে চাকরি পান ১৪ হাজার ৪৯০ জন। বাকি ১৯ শতাংশ চাকরি পাননি। ২০২৩ সালে চাকরি পেতে নাম লেখান ২০ হাজার পড়ুয়া। কাজ পান ১৫ হাজার ৮৩০ জন। চাকরি না পাওয়ার হার সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ২১ শতাংশ। এই ২০২৪-এর ক্যাম্পাসিংয়ে ২১ হাজার ৫০০ জন পড়ুয়া আবেদন করেন। কাজ পান ১৩ হাজার ৪১০ জন। তার মানে কাজ পাননি ৩৮ শতাংশ (৮ হাজার ৯০ জন)। এর অর্থ হল, এক্ষেত্রে দু’বছরে চাকরি না পাওয়া পড়ুয়ার সংখ্যা দু’গুণ বেড়েছে।
আইআইটি’র মতো মোদির নিজের সরকারি মন্ত্রকগুলিতেও নিয়োগের হাল তথৈবচ। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে ইউপিএ আমলের শেষ দিকে অর্থাৎ ২০১৩ ও ২০১৪ সালে মোট স্থায়ী কর্মী ছিলেন যথাক্রমে ১৭.৩ লক্ষ ও ১৬.৯ লক্ষ। মোদি জমানায় ২০১৯ ও ২০২০ সালে তা কমে হয়েছে ১৪.৭ লক্ষ ও ১৩.৭ লক্ষ। অর্থাৎ, প্রায় ৩ লক্ষ কর্মী কমেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে। সব মিলিয়ে সরকারি নিয়োগের হারও আগের জমানার ৪২.৮ শতাংশ থেকে কমে এই জমানায় হয়েছে ৩৭.৪ শতাংশ। এর উল্টোদিকে মোদি জমানায় চুক্তি শ্রমিক বেড়েছে হু হু করে। ইউপিএ আমলের শেষ দু’বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চুক্তি শ্রমিকের হার ছিল যথাক্রমে ১৬.৮ শতাংশ এবং ১৮.৩ শতাংশ। ২০২০ ও ২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে যথাক্রমে ৩৪ ও ৩৫ শতাংশ। মোদির গ্যারান্টির ফানুস চুপসে দিয়ে তথ্য এও জানাচ্ছে, ইউপিএ আমলে দেশের শিক্ষিত বেকারের হার ছিল ২৯ শতাংশ। মোদি জমানায় সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৫.৪ শতাংশ যা লজ্জাজনক। দেখা যাচ্ছে, এই আমলে কাজের সুযোগ যেমন কমেছে, তেমনই শ্রমিকের মজুরিও কমেছে। আরও লজ্জার বিষয় হল, এসবের পরও ভোটে ‘সাফল্যে’র জোরদার প্রচার চালাচ্ছে পদ্মশিবির! কিন্তু স্বঘোষিত ‘দূত’-এর এই কাজে ঈশ্বর কি সন্তুষ্ট হতে পারেন?