কর্মের প্রসার ও উন্নতি হবে। ব্যবসায়ীদের দিনটি অনুকূল। অর্থকড়ি প্রাপ্তি যোগ শুভ। অর্থ সঞ্চয় বাড়বে ... বিশদ
করিম বেঞ্চারিফা : আমি এখন কলকাতা থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে। পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দ্বীপরাষ্ট্র গিনি প্রজাতন্ত্রের সুপার ডিভিশন লিগের ক্লাব হাফিয়া এফসি’র কোচিংয়ে ব্যস্ত। ভারত ছেড়েছি প্রায় ছ’বছর হয়ে গেল। কিন্তু মোহন বাগান-ইস্ট বেঙ্গলের খবরাখবর রাখার চেষ্টা করি। ভারতীয় ফুটবলের মক্কাকে কি ভোলা যায়!
রবিবার রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখছি, মোহন বাগান সমর্থকরা সুখস্মৃতিতে ভাসছেন। ২০০৯’এর ২৫ অক্টোবর আমার কাছেও চিরস্মরণীয়। ওইদিন আমার প্রশিক্ষণে মোহন বাগান পাঁচ গোল দিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্ট বেঙ্গলকে। দেখতে দেখতে এক যুগ অতিক্রান্ত। কিন্তু মনে হয়, এই তো সেদিনের কথা। সেই সাফল্যকে মনে রাখার জন্য সবুজ-মেরুন সমর্থকদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ওই সাফল্যের জন্যই শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবটির ইতিহাসে আমার নাম লেখা রয়েছে। চিডিও প্রথম ফুটবলার হিসেবে ডার্বিতে চারটি গোল করেছিল। যে রেকর্ড এখনও অম্লান। স্পষ্ট মনে পড়ছে, ম্যাচের আগে ইস্ট বেঙ্গলের বাইচুং ভুটিয়া ও মোহন বাগানের ব্যারেটো চোট সমস্যায় ভুগছিল। তবে শাপমুক্তির ম্যাচে নামতে মরিয়া ছিল ব্রাজিলিয়ান তারকাটি। অদম্য জেদই ছিল ওর মূলধন। আমাদের পাঁচটি গোলের মধ্যে দু’টিতে ব্যারেটোর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। ম্যাচ ফিট না হলেও ৫৫ মিনিট মাঠে ছিল ও। পক্ষান্তরে, বাইচুং শেষ পর্যন্ত খেলার ঝুঁকি নেয়নি। সেই মরশুমেই মোহন বাগান কর্তাদের সঙ্গে মনোমালিন্য ঘটায় ও ইস্ট বেঙ্গলের জার্সি গায়ে তোলে। বাইচুং না খেলায় আত্মবিশ্বাস বাড়ে সুরকুমার সিং, মার্কোস, জেমস সিংদের। ইস্ট বেঙ্গলের আলভিটোও সেদিন পুরো ফিট ছিল না। ম্যাচের পর মোহন বাগান অন্ত প্রাণ সুব্রত ভট্টাচার্যও বলেছিলেন,‘৩৪ বছর পর পাঁচ গোল খাওয়ার জ্বালা ভুললাম।’ কারণ, ১৯৭৫ সালে শিল্ডে পাঁচ গোল খাওয়ার ম্যাচে উনি খেলেছিলেন। ৯০ হাজার দর্শকের সামনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীকে পাঁচ গোল দেওয়ার পাশাপাশি তিন পয়েন্ট পাওয়াটাও আমার কাছে ছিল অত্যন্ত মূল্যবান। তখন মোহন বাগান খেতাবি লড়াইয়ে ছিল। ডার্বিতে পিছিয়ে পড়েও পাঁচ গোল করা দলের কোচ হিসেবে গর্ববোধ করি। ৫-৩’এর ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গলও তুল্যমূল্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা মেলে ধরেছিল। ওই মহাম্যাচের পরেই আমাদের খেলা ছিল শিলংয়ে। ডার্বি জয়ের পরের ম্যাচ সবসময় কঠিন। কারণ, ফুটবলাররা আত্মতুষ্ট হয়ে পড়ে। কিন্তু লাজংকে আমরা হারিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০০৯-১০ মরশুমে আই লিগ জিততে পারিনি। যে আক্ষেপ চিরদিনই থাকবে। সেবার আই লিগের মধ্যেই গুয়াহাটিতে ফেডারেশন কাপের আসর বসেছিল। বছরের শেষদিনে আয়োজিত সেমি-ফাইনালে ইস্ট বেঙ্গলের কাছে হেরেছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই ফোকাস নড়ে গিয়েছিল। এটা অজুহাত নয়। কঠিন বাস্তব। যাক, সুখের স্মৃতির দিনে আর ওই ম্যাচ নিয়ে ভেবে লাভ নেই। মোহন বাগান ভালো খেলুক। আরও সাফল্য পাক, এই কামনাই করি।