নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকি ও তাঁর গাড়ির চালক রবীন মণ্ডলকে খুন করতে দুটি দলে ভাগ হয়ে যায় অভিযুক্তরা। একটি দলে তিনজন। অন্য দলে ছিল দুজন। ধৃত বাপি ও জাহির গাজিকে জেরা করে এই তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারী অফিসারদের। ভিকির নির্দেশেই যে দুটি দলে ভাগ হয়ে তারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে তা পুলিসকে জানিয়েছে। তবে মূল অভিযুক্ত ধরা না-পড়া পর্যন্ত স্পষ্ট হবে না খুনের সময় কার ঠিক কী ভূমিকা ছিল। ভিকির খোঁজে দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হলেও তার খোঁজ মেলেনি।বাপি ও জাহিরকে অফিসাররা জেনেছেন বাড়িতে ভিকির সঙ্গে পাঁচজন ঢোকে। দুতলায় সুবীরবাবুর ঘরে যায়। উপরের ঘরে ছিলেন চালক রবীন মণ্ডল। দরদাম নিয়ে গোলমাল শুরু হওয়ার পর ভিকি তার সঙ্গীদের বলে দুটি দলে ভাগ হয়ে যেতে। সে জানায় বড়সড় ঘটনা ঘটতে চলেছে। তাই দুটি দলে ভাগ হয়ে কাজ করতে হবে। ধৃত দুজনের দাবি ভিকি তাদের নিয়ে কর্পোপেট কর্তার ঘরে ছিল। তিনজনে মিলে খুন করে সুবীর চাকিকে। আর দুজন উপরে উঠে গিয়ে রবীনকে খুন করে নীচে নেমে আসে। খুনের পর ভিকি সুবীরবাবুর ঘরে বসে তার সঙ্গীদের বলে দেয় কীভাবে পালাতে হবে এবং কোন রাস্তা দিয়ে তারা স্টেশনে পৌছবে। সেই পরিকল্পনামতোই তারা বাইরে বেরিয়ে এসে ঢাকুরিয়া স্টেশনে আসে চারজন। সেখান থেকে ট্রেন ধরে পালায় দক্ষিণ ২৪ পরগনা। আর ভিকি ফার্ন রোডে কনস্ট্রাকশন সাইটে কাজে চলে যায়। সুবীর চাকি খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ভিকিও এখনও অধরা। অনলাইনে ভিকি কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে কি না তাই নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।
কী কী নামে সে ফেসবুকে প্রোফাইল খুলেছিল সেগুলি নিয়ে তথ্য জোগাড় করার কাজ শুরু হয়েছে। গোয়েন্দাদের বক্তব্য ভিকি বুঝে গিয়েছে তার মোবাইলে ফোনের উপর নজরদারি চালাচ্ছে পুলিস। তাই মোবাইলের ব্যবহার প্রায় করছে না। তার থেকেই অফিসাররা অনুমান করছেন সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে সে তার পরিচিত ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। তাদের কাছে টাকা চেয়ে বার্তা পাঠাতে পারে। পাশাপাশি পুলিসের গতিবিধিও জানার চেষ্টা করবে। এক্ষেত্রে অন্যের মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহার করবে। সংশ্লিষ্ট মোবাইলের আইএমইআই বা কম্পিউটারের আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করে সহজেই জেনে ফেলা সম্ভব ভিকি কোথায় লুকিয়ে রয়েছে। সেই সূত্রেই তার কাছে পৌঁছনো সহজ হবে। গোয়েন্দাদের অনুমান ভিকির পক্ষে আর খুব বেশিদিন বাইরে লুকিয়ে থাকা সম্ভব নয়। অনেকেই তাকে চিনে ফেলেছে। তাই স্থানীয় গ্রামবাসীদের মাধ্যমেই তার লুকিয়ে থাকার খবর পুলিসের কাছে যাবে বলে আশাবাদী গোয়েন্দারা।