কাজকর্মে প্রতিকূলতা কেটে ক্রমোন্নতি। সন্তানের আচরণে ও মতিগতি নিয়ে চিন্তা। অর্থাগম হবে। ... বিশদ
পূর্বপুরুষের ভিটে ভেঙে দেবে রেল। সেই আতঙ্কেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এদিন ভোরে মারা যান মহম্মদ করিম শেখ(৯১)। তা সত্ত্বেও উচ্ছেদ অভিযান চলায় রেলের অমানবিক ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। উল্লেখ্য, স্টেশনের পশ্চিম ও মধ্য রেলওয়ে কলোনিতে গত ১০জুন রেলের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ নোটিস দেওয়া হয়। তারপরই কলোনিগুলির বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সোমবার পরবের মধ্যেই বিষাদের ছায়া দেখা যায়। এদিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ স্টেশন ম্যানেজার, রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও আরপিএফ বাহিনী গিয়ে কলোনিতে উচ্ছেদ অভিযান চালায়। পাঁচটি ঝুপড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। বাকিদের সময় দেওয়া হয়েছে। সেগুলিও পরে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে।
বহু বছর ধরে ঝুপড়িতে কোনওরকমে মাথা গুঁজে থাকে বহু পরিবার। কেউ ট্রেনে হকারি করেন, কেউ আবার স্টেশনে কুলি বা মুটিয়ার কাজ করেন। এদিন তাঁদের ঝুপড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। ঝুপড়িবাসী আজম শেখ বলেন, উচ্ছেদের নোটিস পাওয়ার পরই আমার দাদু মহম্মদ করিম শেখ অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমরা হাসপাতালে ভর্তিও করেছিলাম। কিন্তু এদিন ভোরে আতঙ্কেই দাদু মারা গেল। আমরা রেলের কাছে কাকুতিমিনতি করলাম। তাও আমাদের কথা শুনল না।
পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সাহা বলেন, পুনর্বাসনের জন্য আমরা রেলের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু রেল আমাদের কথা শুনল না। ওই আতঙ্কেই এক বৃদ্ধ মারা গিয়েছেন। তাও রেল উচ্ছেদ অভিযান চালাল। আমাদের নেতৃত্বের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। একজন নেতাকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়। কলোনির বাসিন্দা পরিমল শেখ, জিয়ার আলি শেখ, ফতেমা বিবি বলেন, আমাদের অন্য কোথাও ঘর করে থাকার সামর্থ্য নেই। এখানেই ত্রিপল খাটিয়ে থাকব। ছেলেপুলে নিয়ে আমরা কোথায় যাব? ঘরের জিনিসপত্র সব ভাঙা ঝুপড়ির তলায় চাপা পড়ে আছে। বাচ্চার খাবারও চাপা পড়ে আছে। এখন আমরা কী খাব? এদিন কয়েকজনকে বলতে শোনা যায়, রেলের জায়গায় অনেকেই ব্যবসা করছেন। রেল তাদের উচ্ছেদ না করে নিরীহ দুঃস্থ বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করল।
কাটোয়ার স্টেশন ম্যানেজার কল্যাণ সিনহা বলেন, এতে আমাদের কিছু করার নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ আমরা কার্যকর করেছি। রেলের বহু উন্নয়নমূলক কাজ করা হচ্ছে। তাই উচ্ছেদ করে সেখানেও কাজ করা হবে। আরপিএফ অফিসার আশুতোষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাধা দিতে গেলে ধস্তাধস্তি তো হবেই। এটাতে কিছু করার নেই। আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সফল হয়েছি। আগে থেকেই ঝুপড়ি খালি করার নোটিস দিয়েছিলাম। যারা শোনেনি তাদের ঘর ভাঙা হয়েছে।