কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
এদিকে এক সময়ের কয়লা কারবারের কিংপিনদের সিবিআই আদালতে তোলার খবর ছড়িয়ে পড়তেই শিল্পাঞ্চলে আলোড়ন পড়ে যায়। দিল্লির রোহিনী আদালতের ঘটনার কথা মাথায় রেখেই আদালত চত্বরে ঢোকা গাড়ি ও বাইকে তল্লাশি শুরু করে দেয় পুলিস। কোটি কোটি টাকার কারবারে যুক্ত থাকায় ওই ব্যবসায়ীদের শত্রুর অভাব নেই। সেই কথা মাথায় রেখেই আদালতে চত্বরেও বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে, অভিযুক্তদের আনতেই তার অনুগামীদের ভিড় জমে যায় আদালত চত্বরে। সিবিআইয়ের গাড়ি দেখে একদিকে যেমন ছিল অনুগামীদের ভিড়, তেমনই উৎসাহী মানুষও ভিড় জমিয়েছিলেন সেখানে। জয়দেব আসানসোলের বাসিন্দা হলেও তাকে খুব কমই প্রকাশ্যে দেখা গিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যেও তাকে দেখার আগ্রহ ছিল।
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজার ঠিক আগেই কয়লা পাচার নিয়ে মামলা রুজু করে সিবিআই। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে রুজু হওয়া মামলায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে লালার নাম থাকার পাশাপাশি একাধিক ইসিএলের পদাধিকারীরও নাম জড়ায়। সেই মামলাতেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের সমন ঘিরে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় হয়। তদন্তে রাজনৈতিক রং লাগে। বহু প্রভাবশালীকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তদন্তকারী সংস্থা একজনকেও গ্রেপ্তার করতে না পারায় প্রশ্ন উঠছিল। এই অবস্থায় কায়লা কারবারে লালার প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করার অভিযোগ তুলে দক্ষিণবঙ্গের এই চার প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেপ্তার করে তদন্তকারী সংস্থা। নতুন করে কয়লা পাচারের মামলা নিয়ে আলোড়ন শুরু হয়। ঠিক কত কোটি টাকার বেনিয়ম সিবিআইয়ের নজরে এসেছে, তা জানার আগ্রহও ছিল মানুষের। অবশেষে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে এনিয়ে মুখ খোলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৩৭৪কোটি টাকার হদিশ পাওয়া গিয়েছে বলে তাদের দাবি। তদন্তকারী অফিসাররা আদালতকে এও জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ২০১৫-’১৬ সাল থেকে কয়লা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কয়লার কারবার চালিয়েছে। অর্থাৎ শেষ ছ’বছরই এই বিপুল লুটের কাজ হয়েছে বলে তদন্তকারীদের হাতে নথি এসেছে।
এদিন সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার বলেন, এখনও পর্যন্ত ১৩৭৪ কোটি টাকার অবৈধ কারবারের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। অভিযুক্তদের ২০১৫ সাল থেকেই এই কারবারে যুক্ত থাকার প্রমাণ মিলেছে। আমরা সাতদিনের সিবিআই হেফাজতের দাবি করেছি।
অন্যদিকে, অভিযুক্তদের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু এর তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, যে সময়ে এই মামলা রুজু হয়েছে, সেই সময় ধৃতরা প্রত্যেকেই অন্যান্য ব্যবসা করতেন। মামলাটি লালা ও ইসিএলের সহযোগীদের যোগসাজশের। তাহলে কী করে ওরা সংযুক্ত হতে পারে। এছাড়া যখনই ওদের ডাকা হয়েছে, তখনই জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হয়েছে। তাহলে গ্রেপ্তারের কী প্রয়োজন। এর পাশাপাশি অভিযুক্তদের আইনজীবী চারজনেরই মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা করে নিজের মক্কেলদের অসুস্থ বলে দাবি করেন। সব পক্ষের বয়ান শুনে বিচারক ধৃত জয়দেব মণ্ডলের চারদিন ও বাকিদের সাতদিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে ব্যবসায় নিজের গুরুদের পাশে দাঁড়াতে হাজির হয়েছিল এক ঝাঁক অনুগামী। আদালতের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হিমশিম খেতে হয় পুলিসকে। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া দিল্লির আদালতের নজিরবিহীন ঘটনার পরেও আদালতে চত্বরে নিরাপত্তা পরিকাঠামো সেভাবে না থাকায় চাপ বাড়ে পুলিসের। যদিও এদিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।