বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনাচিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় পরিবারের পুরনো রীতি মেনে এবারও কাটোয়ার বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই পুজো হয়েছে। মূলত পূর্ববঙ্গ থেকে আসা মানুষের মধ্যে এই রীতির প্রচলন দেখা যায়। শহরের পানুহাট এলাকায় পূর্ববঙ্গীয় মানুষের বসবাস বেশি। তাই ওই এলাকায় অধিকাংশ বাড়িতে ফলবতী কলাগাছ কেটে লক্ষ্মী রূপে পুজো করা হল। পূর্ণিমা থাকায় আজ, শনিবারও বহু বাড়িতে এভাবেই পুজো হবে।
পানুহাট এলাকার মাধাইতলা পালপাড়ার বাসিন্দা মদন কুণ্ড, ননীগোপাল কুণ্ডু বলেন, আমরা পুরনো প্রথা মেনে দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পুজো করছি। স্থানীয় গৃহবধূ টুনু কুণ্ডু বলেন, আমার শ্বশুরমশাই ছিলেন পূর্ববঙ্গীয়। তাই পরিবারের রীতি মেনে ৬০ বছর ধরে এভাবে মা লক্ষ্মীর আরাধনা করছি। ফল দেয় এমন একটি কলাগাছ পুজোর আগের দিনই কেটে আনা হয়েছে। তারপর কলাগাছটির গোড়ায় আরও চাররকম গাছ বেঁধে দেওয়া হয়। তার মধ্যে থাকে ধান, হলুদ, তুলসি ও মানকচু। এরপর কলাগাছকে নতুন শাড়ি পরিয়ে দেওয়া হয়। সিংহাসনে কলাবউ রেখে লক্ষ্মী রূপে পুজো চলে।
পানুহাটের এক বাসিন্দা বলেন, পূর্ববঙ্গে এভাবেই আমাদের বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো হতো। এখানে আসার পরেও সেই রীতিই চলে আসছে। আমরা এই লক্ষ্মীকে বলি কলাবউ লক্ষ্মী। পালপাড়ার বহু বাড়িতেও একইভাবে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো হয়। এই পুজোর আর এক বৈশিষ্ট্য হল নৌকা। কলার বাজরা কেটে নৌকা তৈরি করে তাতে পঞ্চশস্য, মুদ্রা রাখেন। তারপর পুজো করা হয়। কেউ কেউ এখন পিতলের তৈরি নৌকাও ব্যবহার করেন। অনেক বাড়িতে আবার ছোট ছোট ধানের মড়াই তৈরি করে সাজিয়েও পুজো করা হয়।
কিন্তু কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় কেন এমন অভিনব রীতি চলছে? দেবদেবীদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করা কাটোয়ার এক বাসিন্দা বলেন, কাটোয়া ও পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু অঞ্চলে এভাবে পুজো চলছে। কারণ, লোকপূরাণ মতে, কলাগাছ হল বিষ্ণুর অবতার। ফলবতী কলাগাছ হল বিষ্ণুপ্রিয়া। তাই কলাগাছকেই বিষ্ণুপ্রিয়া লক্ষ্মী হিসেবে পুজো হয়। এছাড়া গাছের মাধ্যমে পুজো হওয়ায় শস্যলক্ষ্মীও মনে করা হয়। নৌকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, লক্ষ্মী যেমন শস্যের দেবী, তেমনই বাণিজ্য ও ধনসম্পদেরও দেবী। তাই বাণিজ্য তরী সাজিয়ে আরাধনা করা হয় বাণিজ্য লক্ষ্মীর। নিজস্ব চিত্র