অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
বাঁকুড়ার বিজেপি সংসদ সদস্য সুভাষ সরকার বলেন, হীড়বাঁধের কিছু কর্মী এদিন আমার অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কিন্তু, সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে আমার কিছুই করার নেই। আমি বিষয়টি দলের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানাচ্ছি। পরবর্তী পর্যায়ে তাঁরা যে নির্দেশ দেবেন, আমরা সেই মতো কাজ করব।
প্রসঙ্গত, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলায় মোট ২৬টি মণ্ডল রয়েছে। যার মধ্যে বাঁকুড়া নগর মণ্ডলের সাংগঠনিক নির্বাচন হয়নি। ২৫টি মণ্ডলের মধ্যে ২০টিতে এবার মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনের জন্য দলের একাধিক কর্মী তাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেন। যারমধ্যে ১২টি মণ্ডলে ১০ থেকে ১২ জন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, দলীয় সংবিধান মেনে ভোটাভুটি বা সর্বসম্মতভাবে কোনও আলোচনা ছাড়াই নভেম্বরের শেষে নতুন মণ্ডল সভাপতিদের তালিকা ঘোষণা করা হয়। নতুন তালিকায় মেজিয়া, শালতোড়া-১, গঙ্গাজলঘাটি, ছাতনা-১, খাতড়া-২, রাইপুর-১, সারেঙ্গা-২, তালডাংরা-২, রানিবাঁধ-১, ইন্দপুর-১, বাঁকুড়া-১ ব্লকের ২ ও বাঁকুড়া-২ ব্লক সহ মোট ১২টি মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন করা হয়। নতুন মণ্ডল সভাপতির তালিকা প্রকাশের পরেই বেশ কয়েকটি জায়গায় বিষয়টি নিয়ে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়। তালিকা প্রকাশের পরেই অবিলম্বে সভাপতি পরিবর্তনের দাবিতে সবার প্রথমে জেলার সবথেকে বেশি মনোনয়নপত্র জমা পড়া ছাতনা-১ মণ্ডলের কর্মীরা সংসদ অফিসে জেলা সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান।
পরবর্তী পর্যায়ে ছাতনা-৩ নম্বর মণ্ডল, বাঁকুড়া-২ নম্বর মণ্ডল ও এদিন হীড়বাঁধ মণ্ডলের সদস্যরা বিক্ষোভে শামিল হন। শুধু তাই নয়, সিমলাপাল ও তালডাংরা মণ্ডলের কর্মীরাও একই কারণে ক্ষেভে ফুঁসছেন। যে কোনও দিন তাঁদেরও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।
হীড়বাঁধ মণ্ডল সূত্রে জানা গিয়েছে, মণ্ডল সভাপতি হওয়ার জন্য এবার তাঁদের মণ্ডলে মোট ১২টি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। বিদায়ী সভাপতি গোপাল হেমব্রমের পাশাপাশি তার আগের সভাপতি উত্তমকুমার মণ্ডল, বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক চণ্ডী চট্টোপাধ্যায় সহ ১২ জন মনোনয়নপত্র জমা দেন। চণ্ডীবাবু বলেন, আমাদের মণ্ডলে ৭০টি বুথ ও ১৪টি শক্তিকেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে ৬০ জন বুথ সভাপতি ও ১০ জন শক্তিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিদায়ী তথা দল থেকে ঘোষণা করা সভাপতি গোপাল হেমব্রমকে চান না।
চণ্ডীবাবুর অভিযোগ, দলীয় সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ভোট বা আলোচনার মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু, এবার তা করা হয়নি। কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই দলের কিছু নেতা নিজেদের পছন্দের লোকদের মণ্ডল সভাপতির পদে বসিয়ে দিয়েছেন। তার প্রতিবাদে প্রথমে তাঁরা বিষয়টি দলের অভ্যন্তরে জেলা নেতৃত্ব ও সংসদ সদস্যকে জানান। কিন্তু, অভিযোগ জানানোর পর এক সপ্তাহ কেটে গেলেও তাঁদের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়েই এদিন সংসদ সদস্যের অফিসের সামনে হাজির হয়ে অবিলম্বে মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তনের দাবি জানানো হয়।
চণ্ডীবাবু বলেন, জেলা নেতৃত্বের কেউ উপস্থিত না হওয়ায় আমরা সংসদ সদস্যর অফিসের সামনে ধর্নায় বসি। পরে সংসদ সদস্য ফোন করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন। তারপরেই আমরা এদিনের মতো আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি। তবে আমাদের দাবি, না মানা হলে ফের আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।