অতিরিক্ত পরিশ্রমে শারীরিক ক্লান্তি। প্রিয়জনের বিপদগামিতায় অশান্তি ও মানহানির আশঙ্কা। সাংসারিক ক্ষেত্রে মতানৈক্য এড়িয়ে চলা ... বিশদ
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এনিয়ে এক মাসের মধ্যে জেলায় এই রোগে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও অনেকেই আক্রান্ত রয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগই ঠিক সময়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ রয়েছেন। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জঙ্গিপুর হাসপাতালে সম্প্রতি চার-পাঁচজনের চিকিৎসা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, বেসরকারি নার্সিংহোম ভর্তি থাকা দু’জন মারা গিয়েছে। বিস্তারিত খোঁজ নেওয়ার জন্য বিএমওএইচদের বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের টিম এলাকায় যাবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, সরকার বিষয়টির উপর নজর রেখেছে।
এদিকে নতুন করে ফের দু’জনের মৃত্যুর পর জেলাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
মৃতদের পরিবারের দাবি, পোকা দেখা যাচ্ছে না। কী ধরনের পোকা থেকে এই রোগ হচ্ছে তা বাসিন্দাদের অজানা। জ্বালা না হওয়ায় ক্ষতস্থান প্রথমে চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে জ্বর এবং গায়েব্যথা শুরু হয়ে যাচ্ছে। মৃত ছাত্রীর দাদা মুসিবুর রহমান বলেন, বোনের হঠাৎ করেই জ্বর আসে। মঙ্গলবার বহরমপুরের নার্সিংহোমে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। হাতেপায়ে ব্যথা ছিল, পেটেও ব্যথা ছিল। বুধবার বেসরকারি নার্সিংহোমে রক্ত পরীক্ষা করার পর স্ক্র্যাব টাইফাস ধরা পড়ে। তবে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ঠিকমতো চিকিৎসা করেনি। বুধবার বিকেল পর্যন্ত বোনের শারীরিক অবস্থা ঠিকই ছিল। হঠাৎ করেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর খবর দেয়।
অন্যদিকে, বেলডাঙার কুমারপুরের শ্যামলবাবুও কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। তিনি মাঠে কাজ করতেন। সেখানেই পোকার আক্রমণে তিনি এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন বলে পরিবারের লোকজন মনে করছেন।
মৃতের কাকা বিশ্বনাথ প্রামাণিক বলেন, পোকায় কামড়েছে বলে প্রথমে বুঝতে পারেনি। হঠাৎ করেই ওর জ্বর আসে। মাথাব্যথা ছিল। ভেবেছিলাম, ওষুধ খাওয়ানো হলে ভালো হয়ে যাবে। এমনটা হবে বলে বুঝতে পারিনি। প্রসঙ্গত, এর আগে জেলার নবগ্রামের অমৃতকুণ্ডু গ্রামে স্ক্র্যাব টাইফাসে একজনের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগে ডাঙাপাড়ার আরেকজন মারা যান। জেলায় বিভিন্ন প্রান্তে এই রোগে অনেকেই অসুস্থ রয়েছে।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই পোকা ঝোপ বা কাঠের মধ্যে থাকে। এক সময় দার্জিলিং বা কার্শিয়াংয়ে এই ধরনের পোকার বেশি আক্রমণ হতো। তবে রাজ্যে এর আগেও অনেকেই মারা গিয়েছেন। তখন এই রোগ চিহ্নিত করা যেত না। অজানা জ্বরে মারা গিয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হতো। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দপ্তর জেলায় জেলায় একটি গাইড লাইন পাঠিয়ে আধিকারিকদের রোগ সম্পর্কে সতর্ক করেছে। তারপর থেকেই এই রোগ চিহ্নিত করা যাচ্ছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তাদের মতে, এই রোগে ডেঙ্গুর মতোই উপসর্গ দেখা যায়। জ্বরের সঙ্গে হাতেপায়ে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। গা গোলাতে থাকে। প্রথম অবস্থাতেই এই রোগ ধরা পড়লে তা সেরে যায়। এই রোগের ওষুধ রয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, জ্বর হলেই সরকারি হাসপাতালে রক্ত পরীক্ষা করানো উচিত। মাঠ বা ঝোপ থেকে ফিরে এসে ভালোভাবে স্নান করতে হবে। জামাকাপড় ঝেড়ে নিয়ে পরা উচিত। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, স্ক্র্যাব টাইফাস নিয়ে ব্লকে ব্লকে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।