গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ পাওয়ার সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই জেলাশাসকের সই করা এই চিঠি রিপোর্ট আকারে রাজ্যের অ্যাডিশানাল চিফ সেক্রেটারি তাল্লিন কুমারের কাছে পাঠানো হয়েছে। নবান্ন এব্যাপারে আগেই রিপোর্ট তলব করেছিল। ঝাড়গ্রামের মতো পিছিয়ে পড়া এলাকার সংসদ সদস্যের এরকম ভূমিকা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
যদিও এব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছে জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে জানতে জেলা পরিকল্পনা ও রূপায়ণ আধিকারিক অয়ন নাথকে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জেলাশাসক পি মোহন গান্ধী বলেন, এব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারব না। যদিও জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, সম্প্রতি উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি ভিডিও কনফারেন্সে রাজ্যের কর্তারা উমা সোরেনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রশাসনের কর্তারা রাজ্যের এক কর্তাকে বারবার বোঝান, তাঁরা সাধ্যমতো সব চেষ্টা করেছেন। একাধিক চিঠি পাঠিয়েছেন। সবরকম সহযোগিতার কথাও বলেছেন। কিন্তু, অন্যদিক থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এরপরেই এব্যাপারে জেলাশাসকের লিখিত রিপোর্ট চাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এদিন জেলাশাসকের স্বাক্ষরের পরেই নবান্নে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। এব্যাপারে উমা সরেনের বক্তব্য জানার জন্য তাঁকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত আছি। এ নিয়ে পরে কথা বলব।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে সংসদ সদস্য হিসেবে সব চেয়ে কম টাকা খরচের ব্যাপারে প্রথম সারিতেই নাম রয়েছে উমা সোরেনের। বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে শাসকদল। মুখ্যমন্ত্রীও একাধিকবার এই বিষয়ে সতর্ক করেছেন ঝাড়গ্রামের এই সংসদকে। কিন্তু কাজ যে হয়নি, তা এই ঘটনায় পরিষ্কার। গত বছর ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভায় উমা সোরেন কড়া ধমক খান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁকে ধমক দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তোমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তুমি কারও সঙ্গে মেশো না, কথা বলো না। তাহলে তুমি কিসের জনপ্রতিনিধি? কিসের এমপি? মানুষ যদি তোমার সঙ্গে যোগাযোগই করতে না পারে, তাহলে ভেবে দেখো, জনপ্রতিনিধি হিসেবে তুমি কী?
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রত্যেক সংসদ সদস্য বছরে ৫ কোটি টাকা পান। প্রথমে আড়াই কোটি টাকা দেওয়া হয়। তা খরচ করার পর আবার আড়াই কোটি টাকা দেওয়া হয়। প্রথমে টাকা ঠিকমতো খরচ করতে না পারলে পরের দফায় টাকা পাওয়া যায় না। উমাদেবী ২০১৪-’১৫ সালে এবং ২০১৫-’১৬ সালে মোট ১০ কোটি টাকা পেয়েছিলেন। তার মধ্যে থেকে ৬ কোটি টাকা খরচ করেছেন। বাকি ৪ কোটি টাকা এখনও খরচ করে উঠতে পারেননি। ফলে পরের কোনও বছরের টাকাই তিনি পাননি।
৪ কোটি টাকা পড়ে থাকার ব্যাপারে জেলা প্রশাসন বারবার জানানোর পর তিনি একটি প্রকল্প জমা করেন। মিটারপিছু বাড়ি বাড়ি এলইডি আলো লাগানোর প্রকল্প জমা দেওয়া হয়। কিন্তু এমপি ল্যাডে কাজ করার গাইড লাইন অনুযায়ী সে কাজ করা যায় না। ঠিক হয়, রাস্তায় আলো লাগানো হবে। কিন্তু, পরে সেই কাজ নিয়ে তিনি আর উৎসাহ দেখাননি বলে অভিযোগ। এরপর টাকা খরচের ব্যাপারে আবার তাঁকে বলা হলে হাইমাস্ট আলো লাগানোর প্রকল্প পাঠান তিনি। কিন্তু, জায়গা চিহ্নিত না করেই প্রকল্প জমা দেন। জেলা প্রশাসন থেকে ৬টির মতো চিঠি দিয়ে তাঁকে জায়গা চিহ্নিত করতে বলা হয়। কিন্তু কোনও উত্তর আসেনি। ফলে সেই চার কোটি টাকাও পড়ে আছে।