কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
মঙ্গলবার সকালে বীরনগর-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারটোলা এলাকায় নতুন করে ভাঙন শুরু হয়। ভাঙনের তীব্রতা খুব বেশি না থাকলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে বাস্তুহারা হওয়ার আশঙ্কার পাশাপাশি প্রবল ক্ষোভ তৈরি হয়। অনেকেই যখন আতঙ্কিত হয়ে নিজেদের বাড়িঘর সরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই সেখানে এসে পৌঁছয় ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের একটি গাড়ি। সেই গাড়িতে চালক সহ ব্যারেজের চার থেকে পাঁচ জন ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মী ছিলেন। ভাঙন প্রতিরোধের কাজের তত্ত্বাবধান করতে এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু উত্তেজিত জনতা গাড়িটিকে ঘেরাও করে। বিক্ষোভ শুরু করে তারা। এতে ঘেরাও হওয়া গাড়িটি আর এগতে পারেনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলতে থাকেন, ভাঙন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের অধীনে থাকা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা চরম অসন্তোষজনক। ভাঙন প্রতিরোধে তারা সময়োচিত কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এখন বালির বস্তা ফেলে প্রবল ভাঙন আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সুতরাং ব্যারেজের জন্য অধিগৃহীত জমি ভাঙনে বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের জন্য বণ্টন করে দেওয়া হোক। পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত ঘেরাও চালিয়ে যাওয়া হবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে না চাইলেও ব্যারেজের ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরা বিক্ষোভকারীদের জানান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তাঁরা পুনর্বাসন সংক্রান্ত কোনও প্রতিশ্রুতিই দিতে পারবেন না।
এদিকে ঘেরাও ও আটকের কথা গিয়ে পৌঁছয় মালদহ জেলা প্রশাসনের কানেও। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, বিষয়টি ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের আওতাধীন। তবে ঘেরাও করা ঠিক হয়নি। ব্লক প্রশাসনকে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিস সুপার অনীশ সরকার ও বৈষ্ণবনগর থানার আইসি নিম শেরিং ভুটিয়ার নেতৃত্বে এক বিশাল পুলিস বাহিনী হাজির হয়। কিন্তু পুলিসের সামনেও বিক্ষোভ চলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত উত্তেজিত জনতাকে কোনওমতে শান্ত করে ব্যারেজের কর্মীদের থানায় নিয়ে যান পুলিস কর্তারা। ঠিক হয় সেখানেই পুনর্বাসন সংক্রান্ত আলোচনা হবে। তবে তাতে সমাধান সূত্র না মেলায় রাতে ফরাক্কা ব্যারেজের শীর্ষ কর্তাদের বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আবারও রাতের দিকে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়।
বিক্ষোভকারীদের একজন শেখ মুস্তাফা বলেন, ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের ভূমিকা হতাশাজনক। অনেক হয়েছে। ব্যারেজের হাতে অব্যবহৃত প্রায় ২০০ বিঘা জমি রয়েছে লক্ষ্মীপুর মৌজায়। সেখানে আমাদের পুনর্বাসন দেওয়া হোক। বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক তৃণমূল কংগ্রেসের চন্দনা সরকার বলেন, এদিন সাধারণ মানুষের ক্ষোভের প্রতিফলন ঘটেছে। প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপির স্বাধীন সরকার বলেন, মানুষ ক্ষোভ থেকেই হয়ত বিক্ষোভ দেখিয়েছে। তবে বিক্ষোভে সমাধান হয় না। আলোচনার মধ্যে দিয়েই সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে হবে।