কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান নদী মহানন্দা। ভারতের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে গঙ্গার বাম তীরের উপনদী হিসেবে মহানন্দা উল্লেখযোগ্য স্থান অধিকার করে রয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে মালদহ হয়ে এই নদী গঙ্গায় গিয়ে মিশেছে। মহানন্দা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত রয়ে গিয়েছে। সেভাবে সংস্কার না হওয়ায় এই নদী এমনিতেই একাধিক জায়গায় মজে গিয়েছে। তার উপর শহর সংলগ্ন এলাকায় নদীর উপর জবরদখল দিনদিন বাড়তে থাকায় মহানন্দা কার্যত অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগছে। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ সংক্রান্ত আদালতে মামলা হয়। জবরদখলকারীদের হঠিয়ে দিয়ে নদীকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য পরিবেশ কর্মীরা সরব হন। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের বিচারকরা এক রায়ে মহানন্দাকে অবিলম্বে জবরদখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন। সেইমতো কিছু জায়গায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। তবে ইংলিশবাজারে এখনও পর্যন্ত কাউকে সেভাবে কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। পুর কর্তৃপক্ষের একাংশ অবশ্য নদীর জলস্ফীতিকে এজন্য দায়ী করেন। যদিও কয়েকদিন আগে মহানন্দা ফুলেফেঁপে উঠলেও বর্তমানে নদীর জলস্তর অনেকটাই কমে গিয়েছে। ফলে এখনই ব্যবস্থা গ্রহণের উপযুক্ত সময় বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। কারণ, বর্তমানে নদীবক্ষ থেকে জবরদখলকারীরা উঠে উঁচু জায়গায় চলে গিয়েছে। জল কমার সঙ্গে সঙ্গে তারা ফের নদীর চরে গিয়ে বসবাস শুরু করবে। তখন তাদের জোর করতে তুলতে গিয়ে নানা সমস্যা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতির কারবারিরা পথে নামতে পারে বলেও অনেকে আশঙ্কা করছেন। ফলে জবরদখলকারীরা যাতে নদীতে গিয়ে বসতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে পারলেই কাজ হয়ে যাবে বলে পুর কর্তারা মনে করছেন।
মহানন্দা নদী বাঁচানোর জন্য আন্দোলন করছেন, এমন লোকজন অবশ্য জবরদখলের জন্য প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধের একাংশকে দায়ী করছেন। তাঁদের মতে, পুরসভার কাউন্সিলারদের একাংশ ভোটের জন্য অনেককে নদীর জায়গায় বসিয়েছেন। তাঁরা কার্যত একটি করে কলোনি গড়ে তুলেছেন। ওইসব জবরদখলকারীদের কাউন্সিলার ‘নিরাপত্তা’ দেন। পরিবর্তে ওই জনপ্রতিনিধিকে তাঁরা ভোট দিয়ে জেতান। এভাবেই অনেকে ‘গোপন’ বোঝাপড়া করে চলেছেন। এই আঁতাতের কুফল সমগ্র ইংলিশবাজারবাসী ভোগ করছেন। নদীর জল শহরে ঢুকছে। বর্ষায় নিকাশি নালার জলও বের হতে পারছে না। ফলে শহর জলমগ্ন হচ্ছে।
ইংলিশবাজার পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ঝুপড়ির পাশাপাশি নদীর উপর পাকা বাড়িঘরও তৈরি করা হয়েছে। ঝুপড়িতে থাকা গরিব মানুষের কথা বিবেচনা করে অনেকেই জবরদখল উচ্ছেদ নিয়ে বেশি উচ্চবাচ্য করেন না। সেই সুযোগ নিয়ে অবস্থাপন্নরা নদীর জায়গা দখল করে দিব্যি বাস করছেন। কেউ কেউ আবার নদীর উপর বাড়ি তৈরি করে চুটিয়ে ব্যবসা করছেন। অবিলম্বে নদীর সীমারেখা চিহ্নিত করা প্রয়োজন। স্রোত গতিরুদ্ধ হলে শহরের দু’দিক ঘিরে থাকা মহানন্দা একদিন সকলকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।