উচ্চতর বিদ্যায় আগ্রহ বাড়বে। মনোমতো বিষয় নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। ব্যবসা স্থান শুভ। পৈতৃক ব্যবসায় যুক্ত ... বিশদ
পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, মাদক ও জাল নোট বিপুল পরিমাণে ধরা পড়ায় একটি জিনিস পরিষ্কার হয়েছে, তা হল, পুলিস শুধু সতর্কই নেই, নিয়মিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সক্রিয়ও। সেজন্যই এই বিপুল পরিমাণে মাদক ও জালনোট উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মাদক ও জালনোট কারবারিদের এই ঘনিষ্ঠ কার্যকলাপ নিয়ে পুলিস নিজস্ব কায়দায় অভিযান চালিয়ে যাবে ।
আরও যে বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে পুলিসের নজর কেড়েছে তা হল, বাংলাদেশে সরাসরি আফিমজাত বিভিন্ন মাদক পাঠানো। এক পুলিস কর্তা বলেন, সাদা চোখে আগে যেটা ধরা পড়ত তা হল বাংলাদেশে এক বিশেষ ধরনের কাফ সিরাপ পাচারের রমরমা ছিল। প্রতিবেশী ওই দেশে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির উপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ থাকায় ভারত থেকে চোরা পথে পাঠানো ওই কাফ সিরাপ বা কিছু কড়া নেশার ট্যাবলেটের বিপুল চাহিদা আগে থেকেই ছিল। তার সঙ্গে সম্প্রতি পুলিসের নজরে এসেছে ভারত থেকে আফিমজাত মাদক যেমন ব্রাউন সুগার কিংবা আঠা আবার কখনও হেরোইনও রমরমিয়ে পাচার হচ্ছে বাংলাদেশে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে এই মাদক পাঠানোর পিছনে কী কী উদ্দেশ্য কাজ করছে তা নিয়ে রীতিমতো গবেষণা চলছে আধিকারিকদের মধ্যে। জুলাই মাস নাগাদ রাজ্যে নিযুক্ত বিএসএফ কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্তারা রাজ্য পুলিস প্রশাসনের সঙ্গে পাচার সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। পরে ঠিক হয় সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বিভিন্ন চোরা কারবার রুখতে বিএসএফ ও জেলা পুলিস নিজেদের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে চলবে।
পুলিস সুপার জানিয়েছেন, মালদহেও এই সমন্বয় রয়েছে। তাতে ফলও পাওয়া যাচ্ছে।
পুলিস ও বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশে মাদক পাচারের পর কী হচ্ছে তা জানতে চেষ্টা চলছে। জালনোটের বিনিময়ে বাংলাদেশে পাচার করা আফিমজাত মাদক ওই দেশেই ব্যবহার করা হচ্ছে, নাকি তা প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে উন্নত ধরণের মাদকে পরিণত করে চোরাবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ফের ফেরত আসছে ভারতেই, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। মালদহের সীমান্তবর্তী ব্লকের থানাগুলিতে দীর্ঘ দিন ধরে কাজ করে আসা এক পুলিস কর্তা বলেন, আমাদের তদন্তে অনেক নতুন দিক উঠে আসছে। প্রতিটি দিকই নতুন করে আমাদের ভাবাচ্ছে। তাই পরিকল্পনাও তৈরি করা হচ্ছে এই তদন্তের এই নতুন নতুন আঙ্গিকের পরিপ্রেক্ষিতেই।
উল্লেখ্য, মালদহে এক সময় বেআইনি পোস্ত চাষের রমরমা কারবার চলত। প্রতি বছরের অক্টোবর মাস থেকে পরের বছরের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত এই ব্যবসা তুঙ্গে থাকত। এরপর সারা বছর ধরে চলত এই ব্যবসা থেকে প্রাপ্ত বিপুল লাভের টাকা দিয়ে ফের নতুন করে ব্যবসার প্রস্তুতি।
পুরো বিষয়টি কেন্দ্র ও রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছিল প্রশাসন। ২০১২ সাল থেকে বেআইনি পোস্ত চাষ রুখতে জেলায় ব্যাপক অভিযান শুরু হয়। ক্রমশ ধার বাড়তে থাকে অভিযানে। পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত নির্বাচিত সদস্যদেরও যুক্ত করা হয়েছিল অভিযানে। ব্যবহার করা হয়েছিল ড্রোনের মত আধুনিক প্রযুক্তিও। পরবর্তীতে জাল নোটের কারবারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও লাগাতার অভিযান শুরু করে পুলিস। এই দুই অভিযান পাশাপাশি চলতে থাকায় ফলও মিলেছিল যথেষ্টই।
কিন্তু সম্প্রতি জেলাজুড়ে বিপুল মাদক ও জালনোট উদ্ধার ও দুই চক্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ নিয়ে এবার ফের নতুন ধাঁচের অভিযান শুরু হতে চলেছে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।