সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
উল্লেখ্য, ২০০৮ সাল থেকে চালু হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয় ১১ বছর সময়কালে বারবার তীব্র বিতর্কের কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে। কখনও দুর্নীতি, কখনও বিভিন্ন দাবি নিয়ে পড়ুয়া, শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলন আবার কখনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বারবার অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন শিক্ষামহল। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গোষ্ঠী বিন্যাস এই অস্থিরতার সলতে পাকানোর কাজও করেছে বলে জানিয়েছেন উচ্চ শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই।
মালদহ মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষা চৈত্যালি চট্টরাজ বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত অনভিপ্রেত। আমরা নিশ্চয়ই চাইব না মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়েও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। এতদিন ধরে রেজিস্ট্রারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ শূন্য থাকা আশ্চর্যজনক। রেজিস্ট্রার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম মূল পদ। সকলেই নিশ্চয়ই চাইবেন এই পদ স্থায়ীভাবে দ্রুত পূর্ণ করা হোক।
একই মত প্রকাশ করেছেন, গৌড় মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অসীম সরকার। তিনি বলেন, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা দেখে অনেক মেধাবী পড়ুয়াই অন্যত্র পাড়ি দিচ্ছে। কারণ তারা সুষ্ঠু পরিবেশ চায়। তা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে। আর তার জন্য প্রয়োজন পূর্ণ সময়ের রেজিস্ট্রার। এই পদ অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে শিক্ষকদের দিয়ে চালালে সমস্যা মেটার কথা নয়। আমরা চাইব এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে স্থায়ী নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাল ফেরানোর চেষ্টা হোক। মালদহ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মানস বৈদ্য বলেন, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ামকের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ পদ বহুদিন ধরে শূন্য ছিল। সম্প্রতি পরীক্ষা নিয়ামক পদে স্থায়ী নিয়োগ হয়েছে। এবার রেজিস্ট্রার পদেও স্থায়ী নিয়োগ হলে প্রশাসনিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকটাই সুবিধা হবে।
স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগের দাবি তুলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদও। সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, শিক্ষকদের অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে রেজিস্ট্রারের দপ্তর চালানোয় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। পড়ুয়াদের অনেক অভাব-অভিযোগ রয়েছে। স্থায়ী রেজিস্ট্রার ছাড়া সমস্যার সমাধান অসম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীবিন্যাস থেকে মুক্ত হয়ে সকলকে নিয়ে চলার মানসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিকেই এই দায়িত্ব দেওয়া উচিৎ। যাঁর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও সম্পর্ক নেই তিনিই এই দায়িত্ব সুচারুভাবে সামলাতে পারবেন। উপাচার্য স্বাগত সেন বলেন, সম্প্রতি স্থায়ী পরীক্ষা নিয়ামক পদে নিয়োগ হয়েছে। স্থায়ী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের চেষ্টাও চলছে।
উল্লেখ্য, এই রেজিস্ট্রার পদটিকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরেই তীব্র বিতর্ক রয়েছে। শিক্ষক শিক্ষিকাদের একাংশের অভ্যন্তরীণ বলয় সংঘাতের মধ্যে বিতর্কে জড়িয়েছে এই পদটিও। তবে স্থায়ী রেজিস্ট্রার পদে নিয়োগের চেষ্টা যে হয়নি তা নয়। বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখার কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনও কোনও মহল থেকে স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগের প্রক্রিয়াকে বারবার ব্যাহত করা হয়েছে। সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবল অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে তাই আবার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল প্রশাসনিক পদটিতে স্থায়ী নিয়োগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষাজীবীরা।