শ্রীনগর, ২২ সেপ্টেম্বর (পিটিআই): জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করার পর কেটে গিয়েছে টানা ৪৯ দিন। এখনও থমথমে উপত্যকা। স্বাভাবিক হয়নি মানুষের জীবনযাত্রা। এই পরিস্থিতিতে অস্থায়ীভাবে সাপ্তাহিক বাজার বসল শ্রীনগরের রাস্তায়। রবিবার ভোর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর দোকানদার শহরের একাধিক স্থানে আনাজ সামগ্রী নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসেন। প্রয়োজনীয় আনাজ ও অন্যান্য সামগ্রী কিনতে ভিড়ও করেন প্রচুর মানুষ। তবে ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও শ্রীনগরের বড় বাজারটি বন্ধই ছিল। পাশাপাশি অন্যান্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বিগত দিনগুলির মতোই বন্ধই ছিল। উপত্যকাজুড়ে দেখা মেলেনি কোনও সরকারি বাসের। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়ার জন্য উপত্যকাবাসীকে ভরসা করতে হচ্ছে সেই বেসরকারি গাড়ির উপর। তবে তার সংখ্যাটাও খুবই কম। এদিকে আবার এই সুযোগে বেসরকারি গাড়ির চালকরা ভাড়াও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। রাজধানী শ্রীনগর সহ বেশকিছু স্থানে গুটিকয়েক অটোর দেখা মিলেছে। তবে ভাঙচুর ও পাথর নিক্ষেপের আতঙ্কে বাস ও গাড়ি বের করতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন চালকরা। এছাড়াও ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে দোকানপাট খুললেই হুমকি দিচ্ছে জঙ্গিরা। দোকান না খোলার নির্দেশ দিয়ে রাত বিরেতে সাঁটিয়ে দিচ্ছে হুমকি পোস্টার। জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের প্রতিবাদে দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে একাধিক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। অন্যদিকে গুজব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ সেই ৫ আগস্ট থেকে বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। সরকারের তরফে স্কুল খোলা রাখলেও সন্তানদের পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না অভিভাবকরা। কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার পর থেকে রাজ্যের তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা ও মেহবুবা মুফতি এখনও গৃহবন্দি রয়েছেন।
এদিকে জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমানার কাছ থেকে এক পাকিস্তানি যুবককে গ্রেপ্তার করল পুলিস। জম্মুর আইজিপি মুকেশ সিং বলেন, ধৃত পাক যুবকের নাম বাশরাত আলি। তার বয়স আনুমানিক ২০ বছর। পাকিস্তানের শিয়ালকোটে তার বাড়ি। সে সীমান্ত পেরিয়ে চান্দু চেক গ্রাম দিয়ে আর এস পুরা সেক্টরে প্রবেশ করেছিল। এলাকায় বেগতিকভাবে ঘুরোঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় গ্রামবাসীদের। পরে তাঁরাই ওই যুবককে আটক করে পুলিসের হাতে তুলে দেন। পুলিস জানিয়েছে, ধৃত যুবকের কাছে অস্ত্র কিংবা সন্দেহজনক কিছু মেলেনি। তবে কেন সে ভারতে প্রবেশ করেছে, তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এদিকে শীতের আগে কাশ্মীরে মোতায়েত সিআরপিএফ জওয়ানদের থাকার জন্য বিশেষ আশ্রয় কেন্দ্রের ব্যবস্থা করছে কেন্দ্র সরকার। তুষারপাত ও প্রবল ঠান্ডার থেকে রেহাই পেতে পলি ইউরিথেন ফোম (পিইউএফ) দিয়ে ওই আশ্রয় কেন্দ্রগুলি তৈরি করা হবে। উপত্যকায় আধা-সামরিক বাহিনী থাকার জন্য এরকম ৪০টিরও বেশি এরকম পিইউএফ তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।