সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার (বাবলা) বলেন, বোর্ড মিটিং না করে কীভাবে অর্থ খরচ হয়েছে তা নিয়ে যাতে কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে তা আমরা দেখব।
পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান নরেন্দ্রনাথ তেওয়ারি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে অভিযোগপত্র জেলা সভানেত্রী ও জেলার দলীয় পর্যবেক্ষকের কাছে জমা দিয়েছি। তদন্ত কমিটি ডাকলে আমি তাদের সামনে হাজির হব। এব্যাপারে কমিটিকে সহযোগিতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় তথ্যও দেব।
এদিকে নীহারবাবু বলেন, সাত মাস আগে পুরসভার শেষ বোর্ড মিটিং হয়। বোর্ড মিটিং ডাকলেই কয়েকজন কাউন্সিলর পরিকল্পনামাফিক তা পণ্ড করে দেন। বিশৃঙ্খলা এড়ানোর জন্য আমি বোর্ড মিটিং ডাকিনি। তবে যে কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ‘চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল’ বা সিআইসি-র সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, এবছর বাজেট পেশের তিন দিনের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে যায়। ফলে বোর্ড মিটিং ডাকার সময় পাইনি। এদিকে, বাজেট পেশ না হলে সরকারি টাকা খরচের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা খরচের জন্য চাপ দিচ্ছিল। বাধ্য হয়ে আমরা বাজেট প্রস্তাব পুরদপ্তরে পাঠিয়ে দিই। সেখান থেকে কোনও আপত্তি করা হয়নি। ফলে আমি কাজ করে চলেছি।
প্রসঙ্গত, ইংলিশবাজার পুরসভায় দীর্ঘদিন ধরেই ‘সাপ-লুডো’ খেলা চলে আসছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে অন্যান্য কাউন্সিলারদের টানাপোড়েন যেন এই পুরসভার ভবিতব্য হয়ে উঠেছে। নীহারবাবুর পূর্বসূরীদের সঙ্গে কাউন্সিলারদের বনিবনা না হওয়ার বিষয়টি এখনও আলোচিত হয়। পুরসভার মধুভাণ্ড কার দখলে থাকবে তা নিয়ে দুই পক্ষের দড়ি টানাটানি হয়। চেয়ারম্যানরা কাউন্সিলারদের এড়িয়ে কর্তৃত্ব নিজের দখলে রাখেন। অন্যদিকে, কাউন্সিলাররাও সুযোগ বুঝে চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরাতে উঠেপড়ে লাগেন। ফলে উপরে উপরে হেসে কথাবার্তা বললেও ভিতরে দুই পক্ষের সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায় হয়ে যায়।
আগস্ট মাসে নীহারবাবুর বিরুদ্ধে ইংলিশবাজার পুরসভার সিংহভাগ তৃণমূল কাউন্সিলার বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁরা জোটবদ্ধ হয়ে অনাস্থা আনেন। অনাস্থাপত্রে সই করা কাউন্সিলারদের মধ্যে কয়েকজনের আবার একে অপরের সঙ্গে ‘সাপে-নেউলে’ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ‘শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু’ এই আপ্তবাক্য মেনে তাঁরা নীহারবাবুর বিরুদ্ধে একজোট হয়েছিলেন। বর্তমানে দলের নির্দেশে বাকিরা নরম হলেও এক কাউন্সিলর নীহারবাবুকে পদ থেকে সরাতে উঠেপড়ে লেগেছেন। তাঁর সঙ্গে নীহারবাবুর বৈরিতা সম্প্রতি শহরে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। অথচ ওই কাউন্সিলরের সঙ্গে বর্তমান চেয়ারম্যানের একসময় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। দুই নেতা একজোট হয়ে রাজনীতির ময়দান কাঁপিয়েছিলেন। এদিকে বর্তমানে তৃণমূলের এই অন্তর্কলহের সুযোগে বিরোধীরা ইংলিশবাজার পুরসভা দখলের ছক কষছে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে অবিলম্বে শাসক দলের নেতারা কঠোর না হলে তৃণমূলকে যে আগামী পুর নির্বাচনে বেগ পেতে হবে তা একপ্রকার নিশ্চিত।