কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
ঠিক কী বলেছিলেন ইমারন? রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার ভাষণে তিনি বলেন, ‘মুজাহিদিন’কে ‘হিরো’র সঙ্গে তুলনা করে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান তাঁদের হোয়াইট হাউসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। পুরনো একটি খবরের কথা উল্লেখ করে ইমরান জানান, ‘রেগান মুজাহিদিনদের আমেরিকার ফাউন্ডিং ফাদার বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের হিরো বলেন।’ এখানেই প্রমাদ। তথ্যটি সম্পূর্ণ ভুল বলে দাবি করেছেন অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ, ভুল তথ্য দিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মতো গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে দেশের মুখ পুড়িয়েছেন ইমরান। পাকিস্তানের সাংবাদিক ঘরিধ ফারুকি ট্যুইটারে লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক স্তরে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। কারণ তিনি ‘ফেক নিউজ’ থেকে তথ্য পরিবেশেন করেছেন।’ প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটারকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ইমরানকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন বিরোধী দলনেতা মারিয়াম নওয়াজ শরিফ। তাঁর দাবি, ‘ইমরানকে বরখাস্ত করা হোক। স্পিচ রাইটারকে নয়।’ ইমরানকে অযোগ্য বলেও কটাক্ষ করেন মারিয়াম। ইমরানের সমালোচনা করেছেন আফগান শিক্ষাবিদ তথা কূটনীতিক মহম্মদ সাইকল। তিনি বলেন, ‘অস্বীকার করে পার পাওয়া যাবে না। এখন পাকিস্তানের মুখোশ খোলার পালা।’ আর এক পাক সাংবাদিক নিলান ইনায়েত মনে করিয়ে দেন, এই প্রথম নয় এর আগেও ইমরান এমন ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন। ২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কে একটি অধিবেশনেও মুজাহিদ নিয়ে এই তথ্য পেশ করেন ইমরান। তিনি দাবি করেন, সোভিয়েত সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্যই মুজাহিদদের প্রশংসা করেছিলেন রেগান। বহু পাক নাগরিকই মনে করছেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের মঞ্চে তালিবানকে তুলে ধরে আর ভারত বিরোধিতা না করে দেশের উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনায় জোর দিতে পারতেন পাক প্রধানমন্ত্রী ।
আফগানিস্তান দখলে তালিবান ও হাক্কানি নেটওয়ার্ককে সরসারি সাহায্য করেছে পাকিস্তান। তালিবানের সমর্থনে প্রকাশ্যে মুখ খুলতেও শোনা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট-বালুচিস্তান অঞ্চলটিকে এখন প্রতিবেশী দেশগুলির বিরুদ্ধে জঙ্গিদের কাজে লাগানোর আঁতুড়ঘর হিসেবে পরিচিত। জঙ্গিরা এই সব এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর প্রতিবাদে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভ দেখালেন কাশ্মীর ও গিলগিট-বালুচিস্তানের রাজনৈতিক কর্মীরা। তাঁদের হাতে ছিল পাক বিরোধী পোস্টার। প্ল্যাকার্ড ও লাউডস্পিকারে পাক বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, ‘সন্ত্রাসের কাঠামো ভেঙে ফেলতে হবে। জোর করে দখলদারি বন্ধ করতে হবে।’ সাংবাদিকদের অত্যাচার ও খুন বন্ধ করতে হবে পাকিস্তানকে।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর ও গিলগিট প্রদেশে অত্যাচারের অভিযোগ নতুন নয়। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা বারবার এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এর মধ্যেই গিলগিট-বালুচিস্তানকে প্রদেশ হিসেবে ঘোষণা করে পাক প্রশাসন। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে নির্বাচন হয়। স্থানীয়দের দাবি, তারপর থেকেই অত্যাচার বেড়েছে। সেই অনুযায়ী মার্চ মাসে জি-বি অ্যাসেম্বলি একটি প্রস্তাব পাশ করে, সেখানে অন্তর্বর্তী প্রদেশের মর্যাদা দাবি করা হয়।
এর পর থেকেই স্থানীয়রা ইমরান প্রশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন? তাঁদের অভিযোগ, ইমরান খানের দল বিধানসভা দখল নেওয়ার পর পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। মানুষ বেশি অত্যাচারিত হচ্ছেন। জুন মাসে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামেন বিক্ষোভ দেখানোর সময় সরকারি কর্মীদের উপর ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিস। যা নিয়ে প্রবল অসন্তোষ দেখা দেয় জনমানসে। এমনকী পর্যাপ্ত পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগে স্থানীয় মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন। তাঁদের অভিযোগ, খাবার জল পর্যন্ত ঠিকমতো পাওয়া যায় না। -ফাইল চিত্র