অর্থকড়ি প্রাপ্তির যোগটি বিশেষ শুভ। কর্ম সাফল্য ও চিন্তার অবসান। দেবারাধনায় মন। ... বিশদ
গন্তব্য অবশ্য ফলকনুমা রোড। তাই বাসে ওঠাই সুবিধাজনক। সালার জং রোড ধরে, ভিতরের রাস্তা দিয়ে পৌঁছনো যাবে চারমিনারের পিছন দিকে। যাওয়ার পথেই পড়ল শাহ গাউস হোটেল। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই বেশ ভিড়। বটি কাবাব, নিহারি খাওয়ার। সেখানেই একটা কোণার দিকে বেশ উচ্চস্বরে আড্ডা জমিয়েছেন ন’জন যুবক। ইরানি চা খেতে খেতে ভোট নিয়ে চলছে জোর আলোচনা। আগামী ১৩ মে চতুর্থ দফায় তেলঙ্গানার ১৭টি লোকসভা আসনে ভোট। ২০১৯ সালে বিআরএস ১১, বিজেপি ৪, কংগ্রেস ৩ ও মিম ১টি আসনে জিতেছিল। কী হবে এবার? আক্রমের সাফ কথা, ‘এবারে নামেই লড়াই ত্রিমুখী। বিআরএস এখন নখ-দাঁতহীন সিংহ। আসল লড়াই কংগ্রেস আর বিজেপির মধ্যে। তবে এই সিটটা মিমেরই।’
আড্ডায় বসেছিলেন শেখর। পেশায় এলআইসি কর্মী। বাড়ি কাজিপাড়া স্ট্রিটে। কাজের সুবিধার জন্য এখন শহরের অন্য প্রান্ত, হায়াতনগরের বাসিন্দা। তবে ছুটিছাটায় বাড়ি এলেই বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মিস করেন না। সামনের প্লেটে রাখা ওসমানিয়া বিস্কুটে কামড় দিয়ে মাথা নাড়লেন বললেন, ‘প্রথম তিন দফায় সেরকম কিছুই করতে পারেনি বিজেপি। এখানে ভালো সিট না পেলে ৪০০ আসন স্বপ্নই থেকে যাবে। রেবন্ত আন্নার জন্য বিজেপি খুব বেশি সুবিধা করতে পারবে না। তবে সেকেন্দ্রাবাদ সিটটা বিজেপি কিষাণ রেড্ডি জিতে যাবে।’ নিজের জন্য ‘বাদাম কি জালি’ অর্ডার দিচ্ছিলেন শ্রীরাম। কেসিআরের অন্ধ সমর্থকও এখন খানিক মুষড়ে আছেন। বললেন, ‘অঙ্কএতটা সহজ নয়। বিআরএস কিছু সিট পাবে। আর এখানে অনেক আসনেই ভালো সংখ্যায় মুসলিম ভোট আছে। মিম তাতে ভাগ বসালে কংগ্রেসের চাপ। লাভ কিন্তু বিজেপির।’
আলোচনা আরও এগোত। থামল শেখরের কথায়। শুধু চা-বিস্কুট খেলে হবে না। অতএব গন্তব্য শাদাব। মাটন বিরিয়ানি আর পাকিস্তানি চিকেন খেতে খেতে লোকাল খবরের অ্যাপ দেখছিলেন। বললেন, ‘এখানে কিন্তু বিধানসভা ভোটে জিতে ছ’টার মধ্যে চারটে গ্যারান্টি পূরণ করেছে কংগ্রেস। তার জোরেই এবার দুই অঙ্কে পৌঁছে যেতে পারে ওরা।’
রাত সাড়ে ন’টাতেও বেশ জ্যাম। অলিগলির ভিতর দিয়ে বাইক নিয়ে যেতে যেতে আফসোস করছিলেন আক্রম। বললেন, ‘ভাবতেও অদ্ভুত লাগে, এখনও ভোট হয় ধর্মের নামে। কাজের কী ব্যবস্থা হবে, কেউ বলে না। এখানে লোকে সকালে লাইন দিয়ে বসে থাকে দিন মজুরির জন্য। ৮০০ টাকা রোজ। তাও কাজ মেলে না। নেতাদের কাছে এরা শুধুই ভোটব্যাঙ্ক...।’
কথাগুলি শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল, প্রশ্নগুলো সহজ, আর উত্তরও তো জানা!