বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যার বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
বসু বিজ্ঞান মন্দিরের বায়োফিজিক্স বিভাগের পিএইচডি গবেষক শ্রুতি মুখোপাধ্যায়, সিঙ্গাপুরের নানইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস-এর অমরাবাদি হরিকিশোর এবং বসু বিজ্ঞান মন্দিরেরই বায়োফিজিক্স বিভাগের প্রধান অনির্বাণ ভুঁইঞা রয়েছেন এই গবেষণার পিছনে। সেটি প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা এলসভিয়ারের ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব বায়োলজিক্যাল ম্যাক্রোমলিকিউলসে। স্যালিসাইলিক অ্যাসিডে করোনা সারবে, এই সিদ্ধান্তে কীভাবে আসা গেল? অনির্বাণবাবু জানান, ২০১৫ থেকেই সার্স কোভ-১ নিয়ে তাঁর গবেষণা ছিল। নভেল করোনা ভাইরাস বা সার্স কোভ-২ নিয়ে গবেষণায় তা কাজে দিয়েছে। তিনি জানান, ভাইরাসের এনভেলপ প্রোটিন চৌম্বকীয় গুণের কারণে কোষের মধ্যে সেটিকে ঢুকতে সাহায্য করে। ঠিক কোন ধাপে তা কোষের সঙ্গে বন্ধন গড়ে তোলে, সেই জায়গাটি চিহ্নিত করতে পেরেছেন তাঁরা। সেই বন্ধন গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় কীভাবে বাধা দেওয়া যায়, শুরু হয় সেই পথের খোঁজ। তা করতে সাহায্য করেছেন দীর্ঘদিন জিভিকে সংস্থার ওষুধ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী হরিকিশোর। বিভিন্ন লিগান্ড (বিশেষ আণবিক উপাদান) নিয়ে শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। শুরু হয় বিশেষ ভার্চুয়াল ফিল্টার প্রক্রিয়া। দেখা যায়, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড কিছুটা রূপভেদে সেই কাজ করতে সক্ষম। তারা এনভেলপ প্রোটিনের সঙ্গে বন্ধন গড়ে তুলে তাকে কোষের সঙ্গে সম্পর্কস্থাপনে বাধা দিচ্ছে। ব্রুকার ৭০০ মেগাহার্ৎজ নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স (এনএমআর) যন্ত্রের সাহায্যে এই প্রক্রিয়ার পারমাণবিক ছবি তোলা সম্ভব হয়। একটি বিশেষ লিগান্ড সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। শ্রুতি জানান, ওই লিগান্ডটিকেই আরও কার্যকর করে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। সবচেয়ে কার্যকর লিগান্ডটিই হবে করোনার ওষুধ।
তবে, সেটা বলার আগে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার ধাপ পেরতে হবে। ওই জিনিসটি ভাইরাসের এনভেলপ প্রোটিনকে কার্যত নিষ্ক্রিয় করার ভূমিকা নিলেও তা সুস্থ কোষে প্রভাব ফেলবে কি না, দেখা প্রয়োজন। কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলে তার আরও পরিবর্তন করতে হবে। এর জন্য আগে ল্যাবরেটরির জীব— যেমন ইঁদুর, গিনিপিগ, হ্যামস্টার বা বানরের উপরে প্রয়োগ করতে হবে। দিল্লির রিজিওনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজিতেও বেশকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার দরকার আছে। সেগুলি খরচসাপেক্ষ। তাই বসু বিজ্ঞান মন্দিরের দেওয়া ১০ লক্ষ টাকা তার জন্য যথেষ্ট নয়। গবেষকরা বলছেন, ওষুধের মূল উপাদান খুবই সস্তার। তাই এটা সাধারণ মানুষের নাগালেই থাকবে। এই গবেষণায় অনুদান প্রদানকারী কোনও সংস্থা এগিয়ে এলে তা সবার পক্ষেই ভালো হবে।