কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
রাজ্যে প্রায় সাড়ে ছশো সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত মাদ্রাসা রয়েছে। আইনি টানাপোড়েনের জন্য গত ২০১৪ সালে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ করতে পারেনি। ফলে সব মাদ্রাসা মিলিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী পদে প্রায় সাড়ে সাত হাজার শূন্যপদ রয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, এভাবেই কি সব শূন্য পদ পূরণ করা হবে?
রাজ্যের মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তর অবশ্য বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছে। দপ্তরের ডিরেক্টর আবিদ হুসেন সোমবার বলেন, এভাবে যে নিয়োগ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেই খবর নানা সূত্রে আমরা পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। যেভাবে নিয়োগ হচ্ছে, তা ঠিক নয় বলে ডিরেক্টরও জানিয়েছেন। হাইকোর্ট মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে অসাংবিধানিক বলে রায় দেওয়ার কয়েক মাস পর সুপ্রিম কোর্ট ওই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। মাঝের ওই কয়েক মাস সময়ের মধ্যে যে মাদ্রাসাগুলি নিজেরা নিয়োগ করেছে, শুধু তাদেরগুলিই বৈধ হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। হাইকোর্টের রায় হয়েছিল ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর। আর সুপ্রিম কোর্ট ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেয় ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ। তার কয়েকদিন আগে ৩ মার্চ তারিখে হাইকোর্টের রায়ের ভিত্তিতে মাদ্রাসার পরিচালন কমিটিগুলিকে সরাসরি নিয়োগ করার ক্ষমতা দিয়ে রাজ্যের মাদ্রাসা দপ্তর একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের উপর সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সরকারি নির্দেশিকাটি অকার্যকর হয়ে যায়।
পূর্ব মেদিনীপুরের একটি মাদ্রাসা লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগের জন্য সোমবার এক প্রার্থীকে ইন্টারভিউয়ে ডেকেছিল। ইন্টারভিউ-এর চিঠিতে ২০১৬ সালের ৩ মার্চ তারিখে মাদ্রাসা দপ্তরের নির্দেশিকাটি উল্লেখ করা হয়েছে। মাদ্রাসা দপ্তরের কর্তা অবশ্য বলছেন, এক্ষেত্রে ওই নির্দেশিকাটি কার্যকর হবে না। ইন্টারভিউ-এর চিঠিতে ২৮ ডিসেম্বরের তারিখ দেওয়া হয়েছে। বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরামের সভাপতি ইসরারুল হক মণ্ডল অভিযোগ করেছেন, আগের তারিখ দিয়ে মাদ্রাসা পরিচালন কর্তৃপক্ষগুলি চাকরির বিজ্ঞপ্তি জারি ও ইন্টারভিউ-এর চিঠি পাঠাচ্ছে। ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কীভাবে মাদ্রাসাগুলি সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া করছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ২০১৫ সালে হাইকোর্টের রায় ও কয়েকমাস পর সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশ জারির মাঝে কয়েকটি মাদ্রাসার পরিচালন কর্তৃপক্ষ যে প্রায় ৪০ জনকে নিয়োগ করেছে, তাদেরটা শুধু বৈধ বলে তাঁর দাবি।
মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী গিয়াসউদ্দিন মোল্লার সঙ্গে যোগযোগ করা হলে তিনি বলেন, দপ্তরের আধিকারিক ও মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে সব বিষয় নিয়ে শীঘ্রই বৈঠকে বসব। গঙ্গাসাগর মেলা সহ কিছু অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও তিনি বিষয়টি সেভাবে দেখার সময় পাননি বলে জানিয়েছেন।