কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় সব মিলিয়ে ট্রলারের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার প্রায়। এরমধ্যে সাড়ে তিন হাজার ট্রলার সারা বছর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। প্রতি বছর জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ইলিশ মাছের মরশুম শুরু হয়। সেই মাছের জোগানের জন্য টানা পাঁচমাস বাজার চাঙ্গা থাকে। আমবাঙালি তখন ইলিশ ছাড়া অন্য কোনও মাছ ছুঁতে চান না। গত ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ইলিশ নিয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন ট্রলার মালিক থেকে কয়েক হাজার মৎস্যজীবী। কারণ, দফায় দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পশ্চিমী বাতাসের জেরে ইলিশ পাওয়া যায়নি। যার জেরে মাছ ধরার সঙ্গে যুক্ত সকলেই বড়সড় আর্থিক টানাটানির মধ্যে পড়ে যায়।
জেলার ট্রলার মালিক, মৎস্যজীবী থেকে মাছের কারবারের সঙ্গে যুক্তরা ভেবেছিলেন, এই সময় রকমারি সমুদ্রের যে মাছ পাওয়া যায় তা দিয়ে আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে ফেলা যাবে। কিন্তু গত নভেম্বর থেকে চলতি জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সেখানেও ধাক্কা খেতে হয়েছে। কারণ, সাগরে ভয়ঙ্করভাবে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোয়িশনের সহ-সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, একটি ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলে লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। গত নভেম্বর মাসে এক সপ্তাহ ধরে প্রতিটি ট্রলারে যাওয়া-আসা করে সামান্য যা মাছ পাওয়া গিয়েছে, তাতে খরচের টাকাই ওঠেনি। তাছাড়া, রকমারি সব মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণে মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে যেতে চাইছেন না। ফলে ডিসেম্বর মাস থেকে প্রায় ৮৫ শতাংশ ট্রলার বসে গিয়েছে।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি গত তিরিশ বছরের মধ্যে হয়নি। সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র বলেন, খুব খারাপ অবস্থা। মাছের এমন হাহাকার গত ৩৫ বছরের মধ্যে এই প্রথম দেখছি। ইলিশের পর এভাবে অন্য মাছও পাওয়া যাবে না, তা কেউ ভাবতে পারেনি। কাকদ্বীপ থেকে সাত থেকে আটশো ট্রলারের মধ্যে একশো চলছে। শুধু তাই নয়, খরচ উঠছে না। কারণ, সেইভাবে রকমারি মাছ মিলছে না। কুলতলি, রায়দিঘি, পাথরপ্রতিমা সব জায়গাতে একই চিত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মধ্যে সবচেয়ে মাছের বড় পাইকারি বাজার হল ডায়মন্ডহারবারের নগেন্দ্রনগর। সেখানকার এক বড় পাইকারি ব্যবসায়ী জয়দেব হাতি। তিনি বলেন, মাছের জোগান ৮০ শতাংশ কমে গিয়েছে। তাতে পাইকারি বাজারে দাম অনেকটা চড়া। কখনও কখনও অল্প যা পাওয়া যাচ্ছে তা হল, ভোলা মাছ (দাম এখন কেজি প্রতি আড়াইশো থেকে সাড়ে তিনশো)। ম্যাগরেলের দাম আড়াইশো থেকে তিনশো। শিমুলকাঁটার দাম তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো। ভেটকির দাম আড়াইশো শঙ্কর মাছ(আড়াইশো)। গুরজালির দাম আড়াইশো থেকে শুরু শেষ ৪৭০ এ। চ্যালা মাছ তিনশো থেকে শুরু। ফ্যাঁসা ও পাতা মাছের দাম তিনশো থেকে শুরু। বাগদা চিংড়ি কেজি প্রতি বড় ও ছোট আকার ভেদে সাড়ে সাতশো থেকে শুরু। শেষ ১৪০০ তে। চাবড়া চিংড়ি প্রতি কেজি তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো। কালো পমফ্রেট, চাইনিজ পমফ্রেট ও সিলভার পমফ্রেট মাছ সাইজ অনুসারে ৩০০ থেকে শুরু ১৩০০ টাকা পর্যন্ত।