কর্মে সাফল্য ও সুনাম বৃদ্ধি। উকিল, মৃৎশিল্পীদের শুভ। সংক্রমণ থেকে শারীরিক অসুস্থতা হতে পারে। আর্থিক ... বিশদ
আরামবাগের কালীপুরের বাসিন্দা প্রতিমাশিল্পী প্রদীপকুমার দাস জানান, করোনা আবহে এখানকার প্রতিমাশিল্পীদের অবস্থা সঙ্কটজনক। দুর্গাপ্রতিমার বায়না অর্ধেক কমে গিয়েছে। যে প্রতিমা তিরিশ চল্লিশ হাজার করে বিক্রি হতো সেগুলো এবছর পনেরো কুড়ি হাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। কাঠামো খড় মাটি রং ও শ্রমিকের খরচ মিটিয়ে কোন লাভ থাকছে না। এবার সবচেয়ে বড় সঙ্কট দেখা দিয়েছে ঠাকুর গড়ার মাটিতে। আরামবাগ মহকুমাজুড়ে এবছর বন্যার কারণে ঠাকুর গড়ার ভালো মাটি পাওয়া যাচ্ছে না। মাটি পেলেও কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দাম দিয়ে। তার ফলে লাভ না রেখে শুধুমাত্র কাজ ধরে রাখতে দুর্গা প্রতিমা বানাচ্ছেন আরামবাগ মহকুমার শিল্পীরা। গোঘাট দুই নম্বর ব্লকের কামারপুকুরের প্রতিমা শিল্পী সমীর দাস বলেন এখানে কয়েকঘর প্রতিমা শিল্পী আছেন। এবছর বিশ্বকর্মা ঠাকুরের বেশি বায়না ছিল না। একই অবস্থা দুর্গা ঠাকুরের ক্ষেত্রে। যে ক’টা বায়না এসেছে বাধ্য হয়ে অনেক কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আমাদের মতো শিল্পীদের রক্ষার জন্য সরকার সেভাবে কোনও সাহায্য করছে না। এমন চলতে থাকলে প্রতিমা বানানোই ছেড়ে দিতে হবে।
খানাকুলের রাজহাটীর সেনহাটের প্রতিমা শিল্পী লক্ষ্মীকান্ত সাঁতরা বলেন, চাষবাস আছে তাই চলে যাচ্ছে। প্রতিমা বানিয়ে এখন আর সংসার চলে না। স্থানীয় কয়েকটা দুর্গাপুজোর বায়না আছে সেগুলো এবছর করছি। আগে অনেক দূর থেকে বায়না আসতো। করোনার কারণে এবছর বাইরে থেকে আসা বায়না নেই বললেই চলে। আমার ছেলে কাজটা শিখেছে। পাশে থেকে সহযোগিতা করে। কিন্তু আমি চাই না আমার ছেলে এই পেশায় থাকুক।
আরামবাগের দুয়ের পল্লির কল্যাণ সমিতির সম্পাদক সুবীরকুমার দে বলেন, আরামবাগ শহরে বাইশটার মতো দুর্গাপুজো হয়। করোনার কারণে সব পুজোর বাজেট কমেছে। অন্যবার আমাদের শুধু দুর্গা প্রতিমার জন্য ৬০ হাজার টাকার বাজেট থাকত। এবছর প্রতিমার জন্য খরচ ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার টাকার মতো। অনান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের খরচও কম করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তিনি বলেন, করোনার কারণে পুজোর সবকিছুতে খরচ কমাতে হচ্ছে। সন্দেহ নেই প্রতিমা শিল্পীরা এরজন্য আর্থিকভাবে সমস্যায় পড়ছেন।
পারিবারিক পুজোর ক্ষেত্রে প্রতিমা বানানোর খরচ প্রথা মেনে একই আছে কমবেশি আরামবাগের সব পুজোয়। হুগলি জেলার ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলোর মধ্যে অন্যতম কামারপুকুরের লাহাবাড়ির পুজো। তিনশ বছর ধরে এই পুজো চলে আসছে। বর্তমান বংশধর কৃষ্ণেন্দু লাহা বলেন, করোনার কারণে এবার কমখরচে পুজো হচ্ছে। কিন্তু প্রতিমা বানানোর খরচ কমেনি। যে মৃৎশিল্পীরা এই ঠাকুর বানান তাঁদের আগের মতোই পারিশ্রমিক ও প্রতিমা বানানোর খরচ দেওয়া হচ্ছে।