বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
না প্রকাশে অনিচ্ছুক এখানকার এক ফার্মাসিস্ট বলেন, প্রতিদিন আমরা এধরনের প্রচুর প্রেসক্রিপশন পাই। রোগীদের চাপে ডবল কোর্সের একই অ্যান্টিবায়োটিক একই ব্যক্তিকে দিতে হয় আমাদের। কীভাবে এই জটিলতা বা অ্যান্টিবায়োটিকের অপচয় হচ্ছে? ওই ফার্মাসিস্ট বলেন, অনেক রোগী প্রথমে মেডিসিন আউটডোরে যান জ্বর, গলা ব্যাথা ও অন্যান্য উপসর্গ নিয়ে। সেখানে চিকিৎসক ওই রোগীর প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রাইব করেন। এবার সেই রোগীর তার কান ব্যথা বা অন্য কোনও সমস্যার কথা জানালে তাকে সংশ্লিষ্ট বিভাগে রেফার করে দেওয়া হয়। পরে সেই বিভাগে ওই টিকিট বা প্রেসক্রিপশন নিয়ে রোগীরা যাচ্ছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রথম দিন মেডিসিন আউটডোর থেকে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে সেই অ্যান্টিবায়োটিকই ইনএনটি বা অন্য কোনও বিভাগ থেকে দেওয়া হয়েছে। সেদিন এসে রোগীরা আবার নতুন করে একই অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে যাচ্ছেন। তাদের নতুন করে এই অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ার কথা বোঝালেও তাঁরা তা মানেন না। আবার উল্টোটাও হয়। প্রথম দেখা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন না দেখালেই এটা হয়। ডাক্তার দিয়েছেন বলে জোর করেই রোগী বা তার পরিবারের লোকেরা জোর করে ওষুধ নিয়ে যান। এরকম অন্যান্য অনেক ওষুধ অনেক রোগী অপ্রয়োজনে দিনের পর দিন খেয়ে যান। এতে ওষুধের অপচয় হওয়ার পাশাপাশি ওই রোগীর শরীরে সেই ওষুধের প্রতিরোধ ক্ষমতাও গড়ে উঠতে পারে। যা ভয়ঙ্কর ব্যাপার। ফামাসিস্ট জানান, ডাক্তাররা প্রেসক্রিসপশন করছেন তাই আমরা বললে কেউ বিশ্বাস করবেন না। তাই অসহায়ের মতো আমরা ওষুধ দিয়ে দিই। হাসপাতাল সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ফার্মাসি থেকে কেউ আমাকে এধরনের অভিযোগ করেনি। এরকম হয়ে থাকলে তা কাম্য নয়। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব। চিকিৎসকদেরও এব্যাপারে আলাদাভাবে সজাগ থাকতে বলব।
এদিকে মাত্র ন’জন ফার্মাসিস্ট উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফার্মাসি বিভাগ সামাল দিতে নাজেহাল হচ্ছেন। এর মধ্যে দু’জন আবার চুক্তিতে নিযুক্ত। অথচ এই হাসপাতলের ফার্মসিস্টের ১৭টি পদ অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বন্ধ থাকায় এই ১০টি শূন্যপদ আজও পূরণ হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ঠিকাদারের অধীনে অন্যপদে মাত্র ১৭০ টাকা দিন হাজিরায় নিযুক্ত চুক্তির দুই কর্মীকে ফার্মাসিতে বসিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এতে সম কাজে সম বেতনের আইন এখানে লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
দূরদূরান্ত থেকে আসা বহু রোগী আউটডোরে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ নিয়ে দিনেই বাড়ি ফিরে যান। ইসলামপুর থেকে আসা এরকমই এক রোগীর আত্মীয় নির্মল দাস বলেন, সাত সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। এএস লাইন দিয়ে টিকিট কাটতে হয়েছে। তারপর মেডিসিন আউটডোরে ডাক্তার দেখাতেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে। টিকিট কাটা থেকে ডাক্তারের কাছে পৌঁছন পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়েই দু’ঘণ্টা চলে গিয়েছে। তারপর ওষুধ নিতে এসে আবার লাইন। অসুস্থ ছেলেটাকে এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখাটা তার থেকেও বড় সমস্যা। বয়স্ক নাগরিকরাও তাঁদের জন্য আলাদা কাউন্টারের দাবি জানিয়েছেন। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, একে একে সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। ভোটপর্ব মিটলে সব বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।