বিদ্যার্থীদের ক্ষেত্রে ভাবনা-চিন্তা করে বিষয় নির্বাচন করলে ভালো হবে। প্রেম-প্রণয়ে বাধাবিঘ্ন থাকবে। কারও সঙ্গে মতবিরোধ ... বিশদ
মুখ্যমন্ত্রীর মুখের ছবি অন্য একজনের ছবিতে লাগিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির যুব মোর্চার নেত্রী প্রিয়াঙ্কা শর্মা। তাঁর নামে পুলিসের কাছে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতা বিভাস হাজরা। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রিয়াঙ্কা শর্মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। রাজ্য পুলিস তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে এই মর্মে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে প্রিয়াঙ্কার হয়ে আবেদন করেন রাজীব শর্মা। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে বাক স্বাধীনতা নেই।
তারই শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের গ্রীষ্মাবকাশকালীন বেঞ্চের বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায় মামলার পর্যবেক্ষণে বললেন, পশ্চিমবঙ্গে বাক স্বাধীনতা আছে কি না তা অন্য প্রশ্ন। এখন সেটি শুনছি না। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, বাক স্বাধীনতা সর্বদা বজায় রাখতে হবে। তবে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি পোস্ট করা হয়েছে, তা ঠিক নয়। বাক স্বাধীনতা মানে তো অন্যের অধিকারেও হস্তক্ষেপ নয়। এভাবে একজনের মুখের ছবি অন্যের মুখে বসিয়ে দিয়ে মজা করা মানায় না। তাই স্পষ্ট করে বলুন, এর জন্য ক্ষমা চাইবেন কি? প্রিয়াঙ্কা শর্মার আইনজীবীর জবাব চান তিনি।
বেঞ্চের অন্য সদস্য বিচারপতি সঞ্জীব খান্নাও প্রিয়াঙ্কা শর্মার উদ্দেশে বলেন, আপনি কোনও সাধারণ নাগরিক নয়। একটি রাজনৈতিক দলের সদস্য। যে দল রাজ্যে নির্বাচনেও লড়ছে। তাই এ ধরনের বিষয় আপনাদের থেকে আশা করা যায় না। আপনাদের দলের কাউকে নিয়ে এরকম করলে কি ভালো লাগত? প্রশ্ন ছোঁড়েন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। বলেন, ক্ষমা চাইতে এত দ্বিধা কেন? আপনার কথায় বা কাজে কেউ অপমানিত বোধ করলে ক্ষমা চেয়ে নেওয়া উচিত। ক্ষমা চাইলে কেউ ছোট হয়ে যায় না। মন্তব্য করেন তিনি।
কিন্তু ওই ছবি তো আমার মক্কেল তৈরিই করেননি। সোশ্যাল মিডিয়ায় রয়েছে। সেখান থেকে শেয়ার করেছেন। সওয়াল চড়ান প্রিয়াঙ্কার আইনজীবী এন কে কওল। বলেন, এটা তো নিখাদ এক স্যাটায়ার। তাও কি পশ্চিমবঙ্গে করা যাবে না? রাজ্যে বাক স্বাধীনতা নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তখনই বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ বাক স্বাধীনতা মানে অন্যের অধিকারেও হস্তক্ষেপ নয়। আদালত প্রিয়াঙ্কা শর্মাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিলেও স্পষ্ট করে দিল, ক্ষমা চাইছেন বলেই তাঁকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, এমনটা মোটেই নয়। একইসঙ্গে নির্দেশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, বিশেষ পরিপ্রেক্ষিতে জামিন দেওয়া হচ্ছে। ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে জামিনের কোনও সম্পর্ক যেমন নেই, একইভাবে আদালতের আজকের এই নির্দেশ ভবিষ্যতে উদাহরণ হিসেবেও কাজে লাগানো যাবে না।