বৃহস্পতিবার, 15 মে 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

টেরিটোরিয়াল আর্মিকে নামাতে সেনাপ্রধানকে ক্ষমতা দিল কেন্দ্র

পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে সামরিক প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল ভারত। প্রয়োজনের মুহূর্তে টেরিটোরিয়াল আর্মিকে (টিএ) মাঠে নামামোর ক্ষমতা সেনাপ্রধানের হাতে তুলে দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

টেরিটোরিয়াল আর্মিকে নামাতে সেনাপ্রধানকে ক্ষমতা দিল কেন্দ্র

নয়াদিল্লি: পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে সামরিক প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করল ভারত। প্রয়োজনের মুহূর্তে টেরিটোরিয়াল আর্মিকে (টিএ) মাঠে নামামোর ক্ষমতা সেনাপ্রধানের হাতে তুলে দিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। গত ৬ মে এবিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। ১৯৪৮ সালের টেরিটোরিয়াল আর্মি রুলসের ৩৩ ধারায় ওই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রয়োজনের মুহূর্তে প্রহরার কাজে বা সেনাবাহিনীকে সাহায্যের জন্য টেরিটোরিয়াল আর্মির অফিসার ও কর্মীদের মাঠে নামানোর ক্ষমতা সেনাপ্রধানের হাতে দেওয়া হল। ২০২৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ তিন বছরের জন্য সেনাপ্রধানকে এই ক্ষমতা দেওয়া হল।
১৯৪৯ সালের ৯ অক্টোবর পথ চলা শুরু করেছিল টেরিটোরিয়াল আর্মি। যুদ্ধের সময় বা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে দেশকে সেবা করে এসেছে এই বাহিনী। বর্তমানে টেরিটোরিয়াল আর্মির ৩২টি ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন রয়েছে। তার মধ্যে ১৪টি ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়নকে ভারতীয় সেনার বড় কমান্ডগুলির জন্য মোতায়েনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে জারি হওয়া সরকারি নির্দেশিকায়। প্রায় ১৪ হাজার টেরিটোরিয়াল আর্মিকে দেশের উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম, মধ্য, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং আন্দামান ও নিকোবর কমান্ডে নিয়োগ করা হতে পারে। স্পর্শকাতর এলাকায় নিরাপত্তা দেওয়া, চেকিং, সেনাকে রসদ পৌঁছে দেওয়া সহ একাধিক দায়িত্ব পালন করতে হবে এই টেরিটোরিয়াল আর্মিকে।
কারা টেরিটোরিয়াল আর্মি? এককথায় বলতে গেলে দেশের যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে মূল সেনাবাহিনীর সহায়ক হিসেবে কাজ করে টেরিটোরিয়াল আর্মি। ১৯৪৯ সালের ৯ অক্টোবর তৎকালীন গভর্নর জেনারেল সি রাজাগোপালাচারি টেরিটোরিয়াল আর্মির উদ্বোধন 
করেন। সেই থেকে প্রতিবছর ওই বিশেষ দিনটি ‘টিএ ডে’ 
হিসেবে পালন করা হয়। শুরুতে টেরিটোরিয়াল আর্মির অধীনে ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটেলিয়ন, এয়ার ডিফেন্স, মেডিক্যোল রেজিমেন্ট সহ একাধিক ইউনিট ছিল। কিন্তু ১৯৭২ সালে সেগুলি ভেঙে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটেলিয়ন রাখা হয়। ১৯৬২, ১৯৬৫ ও ১৯৭১ 
সালের যুদ্ধতেও অংশ নিয়েছিল টেরিটোরিয়াল আর্মি। 
যে কোনও সাধারণ নাগরিকই টেরিটোরিয়াল আর্মিতে যোগ দেওয়ার জন্য আবেদন জানাতে পারেন। এক্ষেত্রে আবেদনকারীকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। বয়সসীমা ১৮-৪২ বছর। যে কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকও হতে হবে। এইমুহূর্তে টেরিটোরিয়াল আর্মিতে কপিল দেব, মহেন্দ্র সিং ধোনি, শচীন পাইলট, অনুরাগ ঠাকুর, অভিনব বিন্দ্রা সহ দেশের নানা ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা রয়েছেন।
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার কথা মাথায় রেখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও। শুক্রবার মন্ত্রকের তরফে দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য সচিব ও প্রশাসকদের চিঠি লেখা হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা উপযুক্তভাবে কার্যকরের জন্য সিভিল ডিফেন্স রুলের অন্তর্গত জরুরি ক্ষমতার প্রয়োগ করার অনুরোধ করা হয়েছে।