কিডনি বিক্রি চক্রের ‘মাথা’ রহস্যময়ীর খোঁজে পুলিস
কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে আসার উপক্রম! চড়া সুদে ঋণের ফাঁদে ফেলে কিডনি পাচার নিয়ে তদন্ত যত এগচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে একটি বড়সড় চক্রের যোগসাজশ।

নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরিয়ে আসার উপক্রম! চড়া সুদে ঋণের ফাঁদে ফেলে কিডনি পাচার নিয়ে তদন্ত যত এগচ্ছে, ততই স্পষ্ট হচ্ছে একটি বড়সড় চক্রের যোগসাজশ। আপাতত তদন্তকারীরা হন্যে হয়ে খুঁজছেন এক ‘রহস্যময়ী’-কে। এই কাণ্ডে প্রথমে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিকাশ ঘোষ ওরফে শীতলকে। পাচারচক্রের অন্যতম লিঙ্কম্যান সন্দেহে তারপর আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তের স্বার্থে তাঁর নাম জানাতে চায়নি পুলিস। তবে পুলিস সূত্রে খবর, ওই ধৃতকে জেরা করেই তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, তাঁর স্ত্রী কলকাতার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। কিডনি দানের প্রক্রিয়া মসৃণ করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাঁর। তাঁকে সাহায্য করত তাঁর স্বামী। মূলত এই দম্পতির যোগসাজশেই ওই নার্সিংহোমে কিডনি পাচারের র্যাকেট চলত বলে অনুমান তদন্তকারীদের। পুলিস জেনেছে, অশোকনগরের যে ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে এই কিডনি বিক্রি চক্রের পর্দা ফাঁস হয়েছে, তাঁর স্ত্রীর ক্ষেত্রে কিডনি দানে সম্মতি দেয়নি সরকার। তাহলে কীভাবে কলকাতার একটি নামকরা বেসরকারি নার্সিংহোমে রীতিমতো অস্ত্রোপচার করে কিডনি বার করে তা বিক্রি করে দেওয়া সম্ভব হল?
এই প্রশ্ন উঠছে কারণ, নিয়ম অনুযায়ী কিডনি বিক্রি করাই যায় না। তা কেবল দান করা যায়। সেক্ষেত্রে দাতার আইনি সম্মতি সহ বেশ কিছু নথি বাধ্যতামূলক। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, ওই সব আইনি কাগজপত্র ‘জাল’ করার ক্ষেত্রে এই মহিলার বড় ভূমিকা থাকতে পারে। রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে পুলিস আরও জানতে পারে, করোনার সময় থেকেই অসহায় মানুষকে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য করানোর এই চক্রটি সক্রিয়। এই সময়কালে কতজন কিডনি দানের জন্য স্বাস্থ্যদপ্তরে আবেদন করেছেন, সেই রিপোর্ট সংগ্রহ করে পুলিস। সেখানে দেখা যায়, গত দু’বছরে শুধু বারাসত মহকুমা এলাকাতেই অন্তত ৫০ জন কিডনি দান করতে চেয়ে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সর্বাধিক আবেদন এসেছে অশোকনগর থানা এলাকা থেকে। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের প্রামাণ্য নথিপত্রও পুলিসের হাতে এসেছে।
অভিযোগকারীর স্ত্রী সরকারি অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও কীভাবে কিডনি দিতে পারলেন, তার খোঁজ করতে গিয়ে কিডনি দানের সবক’টি আবেদন আতস কাচের তলায় ফেলা হয়। দেখা যায়, শুধু অশোকনগর নয়, হাবড়া, বারাসত ও মধ্যমগ্রাম থানা এলাকায়ও অনেকে কিডনি দান করতে চেয়েছেন। ধৃত সুদখোর বিকাশ পুলিসের কাছে স্বীকার করে, কিডনি বিক্রির কারবারের ‘কিংপিন’ উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দা। তার পর যাকে ধরা হয়েছে, সেও এই চক্রের সক্রিয় সদস্য। প্রশাসন সূত্রের দাবি, গত কয়েক বছরে কিডনি দানের সিংহভাগ আবেদনই খারিজ হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, কিডনি ঘুরপথে বিক্রি হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই ‘রহস্যময়ী’র ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। বারাসত জেলার পুলিস সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খাড়িয়া বলেন, ‘চাপ দিয়ে যাঁদের কিডনি বিক্রি করানো হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলব। বিকাশের পর যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে এবং তার স্ত্রী এই চক্রের সক্রিয় সদস্য। ওঁরা কিডনি দানের জন্য ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করে দিতেন বলে জানতে পেরেছি। তাই এক্ষেত্রে হাসপাতাল যোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ প্রসঙ্গত, অশোকনগরে এক ব্যক্তি ধৃত বিকাশ ঘোষের কাছ থেকে চক্রবৃদ্ধি হারে এবং চড়া সুদে ঋণ নিয়েছিলেন। সেই টাকা তিনি শোধ করতে না পারায় তাঁকে কিডনি বিক্রির ‘টোপ’ দেয় বিকাশ। সেই মতো তিনি তাঁর স্ত্রীকে রাজি করান কিডনি দিতে। তারপরও টাকা না পাওয়ায় তিনি পুলিসের দ্বারস্থ হলে গোটা বিষয়টি সামনে আসে।
related_post
অমৃত কথা
-
কৃচ্ছ্রসাধনা
- post_by বর্তমান
- এপ্রিল 21, 2025
এখনকার দর
-
রূপোর দাম (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
সোনার দাম (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
ইউরো (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
পাউন্ড (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
ডলার (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
নিফটি ৫০ (২১/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025