হার্টের মেন আর্টারিতে ব্লক হলে কী করবেন?
হঠাৎ বিপদে বাড়ির পাশে ডাক্তার পান ক’জন! কিছু ক্ষেত্রে প্রতিটা সেকেন্ড হতে পারে জীবনদায়ী, মূল্যবান। ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে যাওয়ার আগে চটজলদি কী করবেন? পরামর্শে ডাঃ শুভেন্দু বাগ।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
এপ্রিল ২২, ২০২৫
Share:
হঠাৎ বিপদে বাড়ির পাশে ডাক্তার পান ক’জন! কিছু ক্ষেত্রে প্রতিটা সেকেন্ড হতে পারে জীবনদায়ী, মূল্যবান। ডাক্তারখানা বা হাসপাতালে যাওয়ার আগে চটজলদি কী করবেন? পরামর্শে ডাঃ শুভেন্দু বাগ।
দিনসাতেক আগের কথা। নভেম্বরের শীতের আমেজ ধীরে ধীরে গাঢ় হচ্ছে। বিকেলের চেম্বারে ঢোকার মুখেই পরিচিত এক যুবক প্রায় দৌড়ে এসে পথ আটকে বললেন, ‘গাড়িতে করে অসুস্থ ভাইকে এনেছি। একটু দেখে দিন।’
হাঁপাতে থাকা যুবককে আশ্বস্ত করতেই, তিনি বলতে শুরু করলেন। ‘আজ সকালে দুই ভাই মিলে মাঠের কাজে গেছিলাম। দুপুরে মাঠ থেকে ফিরে স্নানের সময় ভাই ঠান্ডার ভয়ে পুকুরে নামতে চাইছিল না বলে দুষ্টুমি করে ওর মাথায় ঠান্ডা জল ঢেলে দিয়েছিলাম। যেই না ঢেলেছি, ভাই সাথে সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ওর মাথাটা কোলে নিতেই মিনিটখানেকের মধ্যেই জ্ঞান ফিরে আসে। আমার ডাকাডাকিতে বাড়ির লোকে ততক্ষণে চলে আসে। তাঁদের মধ্যে থাকা আমার দিদি যেই না আবার ভাইয়ের চোখেমুখে জল ছিটিয়েছে, অমনি আবার মিনিটখানেকের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ভাই। সবাই ভয় পেয়ে গ্রামের এক কোয়াক চিকিৎসককে ডেকে আনে। তিনি পরীক্ষা করে বলেন, সকাল থেকে রোদে কাজ করেছে বলে মাথায় রোদ লেগে পেটে গ্যাস জমে গিয়েছে বোধহয়। সেটাই নাকি মাথায় উঠে এরকম সমস্যা পাকাচ্ছে। সেই বলে তিনি একটা গ্যাসের ইঞ্জেকশন বের করে যেই না পুশ করেছেন, অমনি আবার মিনিটখানেকের জন্য জ্ঞান হারায় ভাই। তারপর আর রিস্ক নিইনি স্যার। সোজা আপনার কাছে নিয়ে এসেছি। ওই গাড়ির ভিতর আছে। একটু দেখুন স্যার।’
ওঁর আকুতিভরা আবেদনের মাঝেই আমার মাথায় তখন বেশকিছু চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। খিঁচুনি রোগ (সিজার ডিজঅর্ডার) নয় তো? ব্রেনের প্যারেনকাইমা দখল করা কোনও টিউমার হয়নি তো? হার্টের বহুবিধ সমস্যায় এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেও বছর ছাব্বিশে হৃদরোগ? ঠিক যেন মিলছে না।
স্টেথোস্কোপ আর পালস অক্সিমিটার হাতে নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটার দিকে এগিয়ে গেলাম। ভিতরে ঝুঁকে দেখলাম তরুণ যুবক ভাবলেশহীনভাবে তাকিয়ে আছে। কপালের মাঝখানে চিন্তার কুঞ্চন। বাইরে থেকে দেখে বিশেষ কিছু বোঝার উপায় নেই। তবে পালস অক্সিমিটার হাতের আঙুলে গুঁজে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে যেই না রেডিয়াল ধমনীর ওপর হাত ছুঁয়েছি, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম আমি। পালস প্রায় পাওয়াই যাচ্ছে না। পালস অক্সিমিটারেও কোনও রিডিং পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ দিব্যি বসে আছেন রোগী। তড়িঘড়ি অপর হাতটা টেনে নিয়ে একই পরীক্ষা করে দেখলাম সে হাতেও একই অবস্থা। অনেক পরে পরে ক্ষীণ পালস হয়তো পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তার গতি অস্বাভাবিক কম। মিনিটে খানপনেরো হবে। স্বাভাবিক থাকলে মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ হওয়ার কথা।
বিস্ময়ে একরকম অসাড়েই চিৎকার করে বললাম—‘অ্যাট্রোপিন’। কাছে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট ছেলেটি দৌড়ে অ্যাট্রোপিন ইঞ্জেকশন নিয়ে এল। ততক্ষণে পকেটে থাকা দু’ইঞ্চির ছোট্ট ইসিজি মেশিনটি ওর বাম পায়ে বসিয়ে দুই হাতের বুড়ো আঙুল মেশিনের ওপর বসিয়ে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইসিজি লাইনে চোখ রাখলাম। হৃদযন্ত্রের অলিন্দ চলছে নিজের ছন্দে। নিলয়ের সাথে কোনও সম্পর্ক না রেখেই। অর্থাৎ কিনা থার্ড ডিগ্রি হার্ট ব্লক। সহজ ভাষায় অলিন্দ আর নিলয়ের বিচ্ছেদ—‘এভি ডিসোসিয়েশন’। ইতিমধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট ছেলেটি অ্যাট্রোপিন ইঞ্জেকশন পুশ করতে শুরু করেছে। ইঞ্জেকশনের ঠেলায় যেই না সিম্প্যাথেটিক নার্ভ উদ্দিপিত হওয়া শুরু হল, অমনি ছেলেটি জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়ল পাশে থাকা ভদ্রলোকের কোলে। ইসিজি’র গ্রাফ স্থির হয়ে গেল নিমেষেই। অর্থাৎ কিনা কমপ্লিট হার্ট ব্লক। যা কিনা প্রায় মৃত্যুরই সমতুল্য বলা চলে। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে আধ মিনিট পরই আবার সচল হল ইসিজির গ্রাফ। পালসও ক্ষীণভাবে ফিরে এল। হালকা কাশি দিয়ে সোজা হয়ে বসল ছেলেটি। কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাট্রোপিনের ঠেলায় পালস রেট খানিক বাড়ল। কিন্তু অলিন্দ আর নিলয়ের বিচ্ছেদ আর জোড়া লাগল না। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় চটজলদি পেসমেকার বসানো। না হলে মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু এ মফঃস্বলে সে জোগাড় যে অসম্ভব!
মুশকিল হল এরপরই। রোগীর বাড়ির লোককে সবকিছু বুঝিয়ে বলে কলকাতার কার্ডিওলজিস্ট বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করিয়ে তড়িঘড়ি পেসমেকার বসানোর উপযোগিতা বুঝিয়ে বলার পর শুরু হল অহেতুক দেরি। এদিকে অ্যাট্রোপিনের দৌলতে অলিন্দে থাকা হার্টের স্পন্দনতৈরিকারী এসএ নোডের স্পন্দনের হার বাড়লেও নিলয়ের সাথে যোগাযোগের পথ (এভি নোড) সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকায় নিলয়ের স্পন্দনহার বৃদ্ধি পেল না। ফলে তুলনামূলকভাবে কমপ্লিট হার্ট ব্লকের হার বৃদ্ধি পেল। ফলে রোগীর অজ্ঞান হওয়ার হারও বেড়ে গেল। আপাতদৃষ্টিতে বাড়ির লোকের মনে হল, এই ইঞ্জেকশন দেওয়ার ফলেই বোধহয় সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তাড়াতাড়ি পেসমেকার বসানোর ব্যবস্থা না করে বারেবারে অনুযোগ করতে শুরু করলেন আমার কাছে। এক্ষেত্রে অ্যাট্রোপিনই যে একমাত্র ওষুধ আর পেসমেকারই যে একমাত্র উপায়, চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই জটিল বিষয় ওঁদের বোঝাই কি করে?
অবশেষে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর কথা বুঝিয়ে বলায় রোগীকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন বাড়ির লোক। মাঝপথে রোগীর অবস্থা আরও সঙ্গীন হওয়ায় মুঠোফোনে নির্দেশ দিলাম কাছের এক হাসপাতালের আইসিইউতে ভরতি রাখার। কিন্তু সে হাসপাতালেও পেসমেকার বসানোর সুবিধা নেই। কোনওমতে কিছু সময় কাটিয়ে অবশেষে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যেতে পেরেছিল ওরা।
ওখানে সাথে সাথে পেসমেকার বসান হল। নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছিলাম আমি। কিছুক্ষণ আগেই ওখানকার চিকিৎসকের কাছ থেকে জানলাম, এখন ও এক্কেবারে সুস্থ। আগামীকাল ছাড়া পাবেনও। তারপর থেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে বাকি জীবন সুখেই কাটবে আশারাখি।
আমরা চেম্বার থেকে অনতিদূরের সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল আর নিকটবর্তী মেডিক্যাল কলেজ থাকা সত্ত্বেও কেন যে এই যুবকের জন্য আমাদের কলকাতা নির্ভর হতে হবে, তার উত্তর খুঁজতেখুঁজতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হতদরিদ্র গ্রামের দিকে তাকিয়ে দৈনন্দিন চরৈবতির পথে পা বাড়াতে চললাম আমি।
দিনসাতেক আগের কথা। নভেম্বরের শীতের আমেজ ধীরে ধীরে গাঢ় হচ্ছে। বিকেলের চেম্বারে ঢোকার মুখেই পরিচিত এক যুবক প্রায় দৌড়ে এসে পথ আটকে বললেন, ‘গাড়িতে করে অসুস্থ ভাইকে এনেছি। একটু দেখে দিন।’
হাঁপাতে থাকা যুবককে আশ্বস্ত করতেই, তিনি বলতে শুরু করলেন। ‘আজ সকালে দুই ভাই মিলে মাঠের কাজে গেছিলাম। দুপুরে মাঠ থেকে ফিরে স্নানের সময় ভাই ঠান্ডার ভয়ে পুকুরে নামতে চাইছিল না বলে দুষ্টুমি করে ওর মাথায় ঠান্ডা জল ঢেলে দিয়েছিলাম। যেই না ঢেলেছি, ভাই সাথে সাথে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আমি সঙ্গে সঙ্গে ওর মাথাটা কোলে নিতেই মিনিটখানেকের মধ্যেই জ্ঞান ফিরে আসে। আমার ডাকাডাকিতে বাড়ির লোকে ততক্ষণে চলে আসে। তাঁদের মধ্যে থাকা আমার দিদি যেই না আবার ভাইয়ের চোখেমুখে জল ছিটিয়েছে, অমনি আবার মিনিটখানেকের জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলে ভাই। সবাই ভয় পেয়ে গ্রামের এক কোয়াক চিকিৎসককে ডেকে আনে। তিনি পরীক্ষা করে বলেন, সকাল থেকে রোদে কাজ করেছে বলে মাথায় রোদ লেগে পেটে গ্যাস জমে গিয়েছে বোধহয়। সেটাই নাকি মাথায় উঠে এরকম সমস্যা পাকাচ্ছে। সেই বলে তিনি একটা গ্যাসের ইঞ্জেকশন বের করে যেই না পুশ করেছেন, অমনি আবার মিনিটখানেকের জন্য জ্ঞান হারায় ভাই। তারপর আর রিস্ক নিইনি স্যার। সোজা আপনার কাছে নিয়ে এসেছি। ওই গাড়ির ভিতর আছে। একটু দেখুন স্যার।’
ওঁর আকুতিভরা আবেদনের মাঝেই আমার মাথায় তখন বেশকিছু চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। খিঁচুনি রোগ (সিজার ডিজঅর্ডার) নয় তো? ব্রেনের প্যারেনকাইমা দখল করা কোনও টিউমার হয়নি তো? হার্টের বহুবিধ সমস্যায় এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলেও বছর ছাব্বিশে হৃদরোগ? ঠিক যেন মিলছে না।
স্টেথোস্কোপ আর পালস অক্সিমিটার হাতে নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটার দিকে এগিয়ে গেলাম। ভিতরে ঝুঁকে দেখলাম তরুণ যুবক ভাবলেশহীনভাবে তাকিয়ে আছে। কপালের মাঝখানে চিন্তার কুঞ্চন। বাইরে থেকে দেখে বিশেষ কিছু বোঝার উপায় নেই। তবে পালস অক্সিমিটার হাতের আঙুলে গুঁজে স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে যেই না রেডিয়াল ধমনীর ওপর হাত ছুঁয়েছি, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম আমি। পালস প্রায় পাওয়াই যাচ্ছে না। পালস অক্সিমিটারেও কোনও রিডিং পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ দিব্যি বসে আছেন রোগী। তড়িঘড়ি অপর হাতটা টেনে নিয়ে একই পরীক্ষা করে দেখলাম সে হাতেও একই অবস্থা। অনেক পরে পরে ক্ষীণ পালস হয়তো পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু তার গতি অস্বাভাবিক কম। মিনিটে খানপনেরো হবে। স্বাভাবিক থাকলে মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ হওয়ার কথা।
বিস্ময়ে একরকম অসাড়েই চিৎকার করে বললাম—‘অ্যাট্রোপিন’। কাছে দাঁড়িয়ে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট ছেলেটি দৌড়ে অ্যাট্রোপিন ইঞ্জেকশন নিয়ে এল। ততক্ষণে পকেটে থাকা দু’ইঞ্চির ছোট্ট ইসিজি মেশিনটি ওর বাম পায়ে বসিয়ে দুই হাতের বুড়ো আঙুল মেশিনের ওপর বসিয়ে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ইসিজি লাইনে চোখ রাখলাম। হৃদযন্ত্রের অলিন্দ চলছে নিজের ছন্দে। নিলয়ের সাথে কোনও সম্পর্ক না রেখেই। অর্থাৎ কিনা থার্ড ডিগ্রি হার্ট ব্লক। সহজ ভাষায় অলিন্দ আর নিলয়ের বিচ্ছেদ—‘এভি ডিসোসিয়েশন’। ইতিমধ্যে অ্যাসিস্ট্যান্ট ছেলেটি অ্যাট্রোপিন ইঞ্জেকশন পুশ করতে শুরু করেছে। ইঞ্জেকশনের ঠেলায় যেই না সিম্প্যাথেটিক নার্ভ উদ্দিপিত হওয়া শুরু হল, অমনি ছেলেটি জ্ঞান হারিয়ে ঢলে পড়ল পাশে থাকা ভদ্রলোকের কোলে। ইসিজি’র গ্রাফ স্থির হয়ে গেল নিমেষেই। অর্থাৎ কিনা কমপ্লিট হার্ট ব্লক। যা কিনা প্রায় মৃত্যুরই সমতুল্য বলা চলে। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে আধ মিনিট পরই আবার সচল হল ইসিজির গ্রাফ। পালসও ক্ষীণভাবে ফিরে এল। হালকা কাশি দিয়ে সোজা হয়ে বসল ছেলেটি। কিছুক্ষণের মধ্যেই অ্যাট্রোপিনের ঠেলায় পালস রেট খানিক বাড়ল। কিন্তু অলিন্দ আর নিলয়ের বিচ্ছেদ আর জোড়া লাগল না। এক্ষেত্রে একমাত্র উপায় চটজলদি পেসমেকার বসানো। না হলে মৃত্যু অনিবার্য। কিন্তু এ মফঃস্বলে সে জোগাড় যে অসম্ভব!
মুশকিল হল এরপরই। রোগীর বাড়ির লোককে সবকিছু বুঝিয়ে বলে কলকাতার কার্ডিওলজিস্ট বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করিয়ে তড়িঘড়ি পেসমেকার বসানোর উপযোগিতা বুঝিয়ে বলার পর শুরু হল অহেতুক দেরি। এদিকে অ্যাট্রোপিনের দৌলতে অলিন্দে থাকা হার্টের স্পন্দনতৈরিকারী এসএ নোডের স্পন্দনের হার বাড়লেও নিলয়ের সাথে যোগাযোগের পথ (এভি নোড) সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকায় নিলয়ের স্পন্দনহার বৃদ্ধি পেল না। ফলে তুলনামূলকভাবে কমপ্লিট হার্ট ব্লকের হার বৃদ্ধি পেল। ফলে রোগীর অজ্ঞান হওয়ার হারও বেড়ে গেল। আপাতদৃষ্টিতে বাড়ির লোকের মনে হল, এই ইঞ্জেকশন দেওয়ার ফলেই বোধহয় সমস্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তাড়াতাড়ি পেসমেকার বসানোর ব্যবস্থা না করে বারেবারে অনুযোগ করতে শুরু করলেন আমার কাছে। এক্ষেত্রে অ্যাট্রোপিনই যে একমাত্র ওষুধ আর পেসমেকারই যে একমাত্র উপায়, চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই জটিল বিষয় ওঁদের বোঝাই কি করে?
অবশেষে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুর কথা বুঝিয়ে বলায় রোগীকে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন বাড়ির লোক। মাঝপথে রোগীর অবস্থা আরও সঙ্গীন হওয়ায় মুঠোফোনে নির্দেশ দিলাম কাছের এক হাসপাতালের আইসিইউতে ভরতি রাখার। কিন্তু সে হাসপাতালেও পেসমেকার বসানোর সুবিধা নেই। কোনওমতে কিছু সময় কাটিয়ে অবশেষে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যেতে পেরেছিল ওরা।
ওখানে সাথে সাথে পেসমেকার বসান হল। নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছিলাম আমি। কিছুক্ষণ আগেই ওখানকার চিকিৎসকের কাছ থেকে জানলাম, এখন ও এক্কেবারে সুস্থ। আগামীকাল ছাড়া পাবেনও। তারপর থেকে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবে বাকি জীবন সুখেই কাটবে আশারাখি।
আমরা চেম্বার থেকে অনতিদূরের সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল আর নিকটবর্তী মেডিক্যাল কলেজ থাকা সত্ত্বেও কেন যে এই যুবকের জন্য আমাদের কলকাতা নির্ভর হতে হবে, তার উত্তর খুঁজতেখুঁজতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে হতদরিদ্র গ্রামের দিকে তাকিয়ে দৈনন্দিন চরৈবতির পথে পা বাড়াতে চললাম আমি।
related_post
রাশিফল
-
আজকের রাশিফল
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
অমৃত কথা
-
সেবা
- post_by বর্তমান
- জুন 25, 2025
এখনকার দর
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুন 24, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুন 24, 2025
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুন 25, 2025