বুধবার, 21 মে 2025
Logo
  • বুধবার, ২১ মে ২০২৫

কাশ্মীর রওনা দিয়ে মাঝপথেই বাড়ি ফিরলেন নিহত মণীশের পরিজনরা

কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হল পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা মণীশরঞ্জন মিশ্রর (৪০)। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের উচ্চপদে কর্মরত মণীশ।

কাশ্মীর রওনা দিয়ে মাঝপথেই বাড়ি ফিরলেন নিহত মণীশের পরিজনরা

পিনাকী ধোলে, ঝালদা; কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হল পুরুলিয়ার ঝালদার বাসিন্দা মণীশরঞ্জন মিশ্রর (৪০)। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের উচ্চপদে কর্মরত মণীশ। বুধবার কাশ্মীরে পৌঁছানোর কথা ছিল মণীশের বাবা, মা, দুই ভাই ও তাঁদের পরিবারের। যাওয়ার কথা ছিল বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে। মঙ্গলবার ঝালদার বাড়ি থেকে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওনাও দিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কাশ্মীর পৌঁছানোর অনেক আগেই ফোনে তাঁর মৃত্যুর খবর পান পরিবারের সদস্যরা। কাশ্মীর যাওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল পরিবারের। ফিরে আসতে হল মাঝপথে। 
ঝালদা শহরের ৫নম্বর ওয়ার্ডের পুরাতন বাঘমুণ্ডি রোডের বাসিন্দা মণীশ। তাঁর বাবা মঙ্গলেশ মিশ্রকে এক নামে চেনেন ঝালদার মানুষ। ঝালদা হিন্দি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব সামলেছেন বহু বছর। তাঁর তিন ছেলের মধ্যে মণীশই সবচেয়ে বড়। পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, ছোট থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন মণীশ। সমান তালে ক্রিকেট খেলতেন। কোথাও কুই্যজ প্রতিযোগিতায় গেলে প্রথম পুরস্কার যেন মণীশের জন্যই লেখা থাকত। চাকরি পাওয়ার পর কর্মসূত্রে রাঁচীতে থেকেছেন বহু বছর। কয়েকমাস হল হায়দরাবাদে বদলি হয়ে যান। নাবালক দুই ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সেখানেই থাকতেন তিনি। মণীশের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ এপ্রিল হায়দরাবাদ থেকে পরিবার নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন মণীশ। বারাণসী, অযোধ্যা থেকে শ্বশুরবাড়ি এলাহাবাদ হয়ে কাশ্মীর পৌঁছান তিনি। বুধবার বাকি সদস্যরা যোগ দিতেন। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। ছেলের মৃত্যুতে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই মণীশের বাবা। অনবরত কেঁদে চলেছেন মণীশের মা। তিনি বলছিলেন, ‘স্বামী, দুই পুত্র, পুত্রবধূ, নাতি নাতনিদের নিয়ে আমরা মঙ্গলবার দুপুরে বেরিয়েছিলাম। ছেলে বলেছিল সব ব্যবস্থা করে রেখেছি, তোমরা শুধু চলে এসো। সেইমতো ঝাড়খণ্ডের মুরি স্টেশন থেকে ট্রেনে চড়ি। মাঝরাস্তায় শুনি জঙ্গিরা আমার ছেলেকে গুলি করেছে। আমরা ডালটনগঞ্জ থেকে ফিরে আসি।’ কথাগুলো বলতে বলতে মণীশের মায়ের গলা বুজে আসছিল কান্নায়। মণীশের ছোটভাই বিনীত বলছিলেন, বৌদিই ফোন করে আমাদের খবরটা দেয়। 
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মণীশের স্ত্রী জয়া মিশ্র শ্রীনগরের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো গেস্ট হাউসে রয়েছেন মণীশের নাবালক ছেলে ও মেয়ে। মণীশের মরদেহ আনতে পরিবারের সদস্যরা রওনা দিয়েছেন কাশ্মীরে। বৃহস্পতিবার তাঁর দেহ আসার কথা।