শনিবার, 19 জুলাই 2025
Logo
  • শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

ওয়েবসাইটে চালকের বিজ্ঞাপন, কৌশলে গাড়ি হাতিয়ে বিক্রি করাই ছিল পরিকল্পনা

দৈনিক বা মাসিক ভিত্তিতে গাড়ির চালক মিলবে— এই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল ওয়েবসাইটে। সেখানে দেওয়া ছিল একাধিক চালকের নাম ও ফোন নম্বর।

ওয়েবসাইটে চালকের বিজ্ঞাপন, কৌশলে গাড়ি হাতিয়ে বিক্রি করাই ছিল পরিকল্পনা

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: দৈনিক বা মাসিক ভিত্তিতে গাড়ির চালক মিলবে— এই বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল ওয়েবসাইটে। সেখানে দেওয়া ছিল একাধিক চালকের নাম ও ফোন নম্বর। কেউ যোগাযোগ করলে চালক সটান হাজির হতো বাড়িতে। কয়েকদিন গাড়ি চালানোর পর মালিকের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন হলে গাড়ি নিয়ে উধাও হয়ে যেত চালক। তারপর অনলাইন পণ্য কেনাবেচা সংস্থায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বেচে দিত গাড়ি। নয়া কৌশলে কলকাতা সহ রাজ্যজুড়ে এই কারবারে নেমেছিল এক চক্র। ভবানীপুর থানায় এই নিয়ে অভিযোগ হতেই ধরা পড়েছে চক্রের পান্ডা তুষার দত্ত ও মোহিত কুমার।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবানীপুর থানা এলাকার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী গুগলে গাড়ির চালকের খোঁজ করতে গিয়ে ‘ওয়ার্ক ইন্ডিয়া’ নামের একটি ওয়েবসাইটের সন্ধান পান। সেখানে একাধিক চালকের নাম ও ফোন নম্বর দেওয়া ছিল। ওই সাইট দেখেই মোহিত কুমার নামে এক চালককে ফোন করেন তিনি। মোহিত রাজি হলে তাকে ভবানীপুরের বাড়িতে আসতে বলা হয়। তবে এই চালক যে প্রতারক, প্রথমে বুঝতে পারেননি তিনি। কিছুদিন গাড়ি চালিয়ে মালিকের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের পর বিভিন্ন জায়গায় একাই গাড়ি নিয়ে যেত সে। মাসখানেক আগে ওই ব্যবসায়ীর পরিবারকে শরৎ বোস রোডে এক পরিচিতের বাড়িতে নামিয়ে দেওয়ার পর গাড়ি নিয়ে উধাও হয়ে যায় মোহিত। পরে ওই ব্যবসায়ী বাইরে এসে দেখেন, গাড়িও নেই, চালকও নেই। মোহিতের মোবাইল ফোন বন্ধ। এরপর ভবানীপুর থানায় অভিযোগ করেন ওই ব্যবসায়ী।
তদন্তে নেমে অফিসাররা ‘ওয়ার্ক ইন্ডিয়া’ নামের ওই ওয়েবসাইটের বিষয়ে জানতে গুগলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে জানতে পারেন, কলকাতায় বসে এটি চালাচ্ছে তুষার দত্ত নামের এক ব্যক্তি। ইন্টারনেট সরবরাহকারী সংস্থার কাছ থেকে গ্রাহকের তথ্য নেয় পুলিস। পাশাপাশি মোহিতের সিমের সাবস্ক্রাইবার আইডি বের করা হয়। অনলাইনে টাকা পেমেন্টের সূত্র ধরে জানা যায়, মোহিত ঝাড়খণ্ডে রয়েছে। এরপর পুলিস সেখানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। অভিযুক্তকে জেরা করে তুষারকে ধরা হয় কলকাতা থেকে। 
ধৃতরা জেরায় পুলিসকে জানিয়েছে, গাড়ি হাতানোই তাদের মূল উদ্দেশ্য। একারণেই চালক দেওয়ার নাম করে ওই ওয়েবসাইট খুলেছিল। কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় তারা একই কায়দায় একাধিক গাড়ি হাতিয়েছে। চক্র গড়েই তারা এই কাজ করছে। চুরি করা গাড়ি অন্য রাজ্যে নিয়ে গিয়ে জাল নম্বর প্লেট লাগানোর পর পণ্য কেনাবেচার অনলাইন সংস্থায় বিজ্ঞাপন দিয়ে তারা বিক্রি করে দিত। পুলিস ভবানীপুরের ওই গাড়ি সহ চুরি করা অন্যান্য গাড়ি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।

রাশিফল