বৃহস্পতিবার, 17 জুলাই 2025
Logo
  • বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

বন্ধ কেন্দ্রীয় অনুদান, ভারতে পোলিও নজরদারির সব অফিস তুলে দিচ্ছে হু! সংক্রমণ ফিরে এলে কী হবে, উঠছে প্রশ্ন

২০১১ সালে দেশের নজর পড়েছিল রাজ্যের দিকে। বলা ভালো, হাওড়ার পাঁচলায়। দেশ-বিদেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের রথী-মহারথীরা চলে এসেছিলেন সেখানকার দেড় বছরের এক শিশুকন্যার বাড়িতে। 

বন্ধ কেন্দ্রীয় অনুদান, ভারতে পোলিও নজরদারির সব অফিস তুলে দিচ্ছে হু! সংক্রমণ ফিরে এলে কী হবে, উঠছে প্রশ্ন

বিশ্বজিৎ দাস ও সৌম্যজিৎ সাহা, কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ২০১১ সালে দেশের নজর পড়েছিল রাজ্যের দিকে। বলা ভালো, হাওড়ার পাঁচলায়। দেশ-বিদেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের রথী-মহারথীরা চলে এসেছিলেন সেখানকার দেড় বছরের এক শিশুকন্যার বাড়িতে। মেয়েটির পোলিও ধরা পড়ে। তারপর পোলিও সচেতনতার ধুম পড়েছিল রাজ্য সহ গোটা দেশে। ২০১৪ সালে ভারতকে পোলিওমুক্ত দেশ ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারপরও ঝুঁকি কম নেই! কারণ, ২০১১ সালের পর থেকে ওয়াইল্ড পোলিও ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা না ঘটলেও প্রতি মুহূর্তে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এর অন্যতম কারণ, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সীমানা। পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে পোলিও সংক্রমণের খবর আসে যখন-তখন। এই অবস্থায় বাংলা সহ দেশের সবক’টি রাজ্য থেকে পোলিও নজরদারির অফিস তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে দেশজুড়ে প্রায় ৮০০ জন বিভিন্ন স্তরের কর্মীকে কাজ হারাতে হতে পারে। আগে এই প্রকল্পের নাম ছিল ‘ন্যাশনাল পোলিও সার্ভেইলেন্স প্রজেক্ট’। ১৯৯৯ সালে প্রকল্পটি শুরু হয়েছিল। প্রথমদিকে এই অফিসগুলি কেবল পোলিও নজরদারির কাজ করলেও পরে ব্যাপ্তি বাড়ে। হাম, রুবেলা, ডিপথেরিয়া, সদ্যোজাতদের টিটেনাস সহ নানা রোগের নজরদারিতে ভূমিকা রাখে অফিসগুলি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) কর্মী-অফিসাররা এগুলি পরিচালনা করতেন। আর্থিক সাহায্য করত কেন্দ্র। তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক ও রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, ১১ বছর ধরে ভারত পোলিওমুক্ত থাকায় এবার অন্যান্য অসুখবিসুখে জোর দিতেই প্রকল্পটি বন্ধ করা হচ্ছে। রোগব্যাধি নজরদারির জন্য কাজ করবে কেন্দ্রের শাখা ‘ইন্টিগ্রেটেড ডিজিজ সার্ভেইলেন্স প্রোগাম’।  
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে ‘হু’-কেন্দ্রীয় সরকারের ২৮০টি পোলিও নজরদারি কেন্দ্র আছে। ২০২৫-২৬ সালে তা কমিয়ে ১৯০টি এবং পরের অর্থবর্ষে তা আরও কমিয়ে ১৪০ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এভাবে ধাপেধাপে দেশ থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত পোলিও সার্ভেইলেন্সের অফিস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বহু অফিসই চলছে সরকারের জায়গা বা জমিতে। বাংলায় দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমান, শিলিগুড়ি সহ একাধিক জেলায় রয়েছে এসব অফিস। রাজ্যে টিকাকরণের শীর্ষকর্তা তথা রাজ্য পরিবার কল্যাণ আধিকারিক ডাঃ অসীম দাস মালাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘কেন্দ্র এখনও এনিয়ে সরকারিভাবে কিছু না জানালেও হু আমাদের ইতিমধ্যে বিষয়টি জানিয়েছে।’ সূত্রের খবর, আগস্টের মধ্যে খড়্গপুর, বাঁকুড়া, উত্তর দিনাজপুর এবং বর্ধমান—রাজ্যের এই চারটি জায়গার অফিস বন্ধ হবে। কিছু বন্ধ হবে আগামী মার্চের মধ্যে। সব মিলিয়ে রাজ্যে আছে ১০-১১টি অফিস। কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গে বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘ভারত দীর্ঘদিন ধরে পোলিওমুক্ত। তবে বাংলার বহু জায়গায় এখনও এমন অবস্থা, বাচ্চাদের পোলিও খাওয়াতেই দেয় না।’ 

রাশিফল