বসন্তের অসুখে আয়ুর্বেদ
শীতের অবগুণ্ঠন পেরিয়ে কড়া নাড়ছে ঋতুরাজ বসন্ত। পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, হিমঝুরি, শিমুলের অপরূপ রূপ মেখে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে অনন্যা। শীত-বসন্তকালীন এই ঋতুসন্ধিতে সকালে শীতভাব, বেলা বাড়তেই চড়া রোদে গলদঘর্ম আর সন্ধ্যায় ঠান্ডার প্রকোপ।

বর্তমান ওয়েবডেস্ক
এপ্রিল ২২, ২০২৫
Share:
শীতের অবগুণ্ঠন পেরিয়ে কড়া নাড়ছে ঋতুরাজ বসন্ত। পলাশ, কৃষ্ণচূড়া, হিমঝুরি, শিমুলের অপরূপ রূপ মেখে প্রকৃতি হয়ে উঠেছে অনন্যা। শীত-বসন্তকালীন এই ঋতুসন্ধিতে সকালে শীতভাব, বেলা বাড়তেই চড়া রোদে গলদঘর্ম আর সন্ধ্যায় ঠান্ডার প্রকোপ। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনায় পাল্লা দিয়ে ঘরে ঘরে দেখা দিচ্ছে জ্বর, সর্দি, হাঁচি-কাশি, গলাব্যথা, স্বরভঙ্গ, শ্বাসকষ্ট, এলার্জি জাতীয় বিভিন্ন সমস্যা।
প্রথম নিদান সতর্কতা: শীত-বসন্তকালীন সমস্যা মূলত কফ দোষের অসাম্যতার জন্য হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে বিগত ঋতুর শেষ সাত দিন এবং আগত ঋতুর প্রথম সাতদিন অর্থাৎ মোট দিন চোদ্দ একটু সচেতন থাকলে শরীর নিজে থেকেই নতুন ঋতুর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। এই সময়সীমায় ঋতুভিত্তিক পথ্য আহার ও দিনাচর্যা মেনে চলা জরুরি।
১. বাসন্তিক পথ্য (নিম-বেগুন): বাঙালি সংস্কৃতির বেশ পুরোনো চল হল বসন্তের শুরুতে নিম-বেগুন তথা তেতো খাদ্য গ্রহণ। এর নেপথ্যে মূলত বসন্ত রোগ ও অন্যান্য ত্বকজ রোগ ব্যাধি প্রতিরোধের দিকটির ভাবনা থাকলেও বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিকোণে নিম বহুমুখী ঔষধিগুণের অধিকারী। দ্রব্যগুণে নিম কৃমি নাশক, কাশহর, অরুচিনাশক, ত্বকের সমস্যায় উপযোগী ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক।
২. কাশি প্রতিরোধ: চরক সংহিতা মতে ঘি,চিনি ও মধুর সঙ্গে গোলমরিচ চূর্ণ চাটনির মতো লেহন করে সেবন করলে সব ধরনের কাশ প্রশমিত হয়, অথবা পিপুল চূর্ণ ও সৈন্ধব লবণ গরম জলের সঙ্গে সেবনেও কাশির সমস্যায় উপকার মেলে। জ্বরের সঙ্গে কাশি ও অরুচির উপদ্রব রয়েছে বা শুধুই কাশি বেশ ভোগালে তালিসাদি চূর্ণ ১ চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খান। তবে সুগার রোগী ওষুধটি খাবেন না।
৩. গলার স্বর বিকৃতিতে: মধুর সঙ্গে যষ্টিমধু চূর্ণ মিশিয়ে চেটে খেলে কাশি, গলার স্বর বসে যাওয়া ও শ্বাসের সমস্যা কমে।
৪. ঋতুকালীন সর্দি-হাঁচি প্রতিরোধ: হঠাৎ সর্দি, সঙ্গে মাথা যন্ত্রণায় কালো জিরে কাপড়ে নিয়ে বারবারে নস্য নিন বা কয়েক ফোঁটা পিঁয়াজের রস নাকে নিন। মাথা ব্যথা কমবে। হরিদ্রা খণ্ড ওষুধটি ১ চামচ করে দিনে দুই থেকে তিনবার গরম জলের সঙ্গে খান।
৫. মাথা যন্ত্রণায় নস্যকর্ম: মাথার যন্ত্রণায় কফহর দ্রব্য সেবন, অনু তৈল, ষড়বিন্দু তৈলের নস্য ধারণ কার্যকরী। পিঁয়াজের স্বরস তাৎক্ষণিক মাথাব্যথা প্রশমনে একটি পরীক্ষিত যোগ।
৬. অম্লপিত্তের সমস্যায় আমলকী ও যষ্টিমধু: পিত্ত বিকৃত জনিত অম্ল উদ্গার বা গলা-বুক জ্বালা দেখা দিলে খাদ্যগ্রহণের আধঘন্টা আগে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে তিন গ্রাম পরিমাণ আমলকী বা যষ্টিমধু সেবন করুন। পথ্য হিসেবে ডাবের জল, ধনে ভেজানো জলও উপকারী।
৭. ঋতু হরিতকী: সুশ্রুত সংহিতা মতে হরিতকী বর্ণ প্রসাদক, উষ্ণ প্রকৃতির, মেধাজনক, চোখের পক্ষে হিতকর ঔষধি এবং সর্বোপরি রসায়ন গুণসম্পন্ন। অর্থাৎ তারুণ্য বজায় রাখতে সহায়ক। বসন্তকালে মধুর সঙ্গে নিয়মিত হরিতকী সেবন করলে নানা সংক্রামক রোগ থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
৮. বসন্ত ঋতুতে আয়ুর্বেদ নীতিমালা: বসন্তকালে সুপাচ্য ও রুক্ষগুণসম্পন্ন আহার সেবন করা শরীরের পক্ষে হিতকারক। যেমন, গম, যব, পুরনো শালি ধান, মাংসের স্যুপ। সব্জিতে প্রধানত পটল, সজনে, মুলো, পেঁপে এবং গোরুর দুধ, দইয়ের ঘোল, আসব-অরিষ্ট, মধু, আদা শুঁঠ ইত্যাদি।
এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম, বিবিধ ভেষজের সমন্বয়ে নির্মিত ঔষধি, একক ঔষধি (যেমন হলুদ) ইত্যাদি চূর্ণের প্রলেপ ত্বকে প্রয়োগও জরুরি। বিশেষ করে চন্দন, অগুরু, কুমকুম জাতীয় সুগন্ধিদ্রব্যের লেপ বসন্তকালের ত্বক করে তোলে নমনীয় ও লাবণ্যময়।
৯.চোখের স্বাস্থ্য অঞ্জন: অঞ্জন মানে কাজল, যা কেবল সৌন্দর্যেরই বাহক নয়, দৃষ্টিশক্তির পক্ষেও যথেষ্ট হিতকারক। আয়ুর্বেদ মতে সৌবীরাঞ্জন (সৌবীর দেশ বা সিন্ধু নদের তীরবর্তী দেশের অঞ্জন বা কাজল) রোজ ব্যবহার করা যায়। এহেন কাজল চোখের শ্লেষ্মা হরণ করে।
প্রথম নিদান সতর্কতা: শীত-বসন্তকালীন সমস্যা মূলত কফ দোষের অসাম্যতার জন্য হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে বিগত ঋতুর শেষ সাত দিন এবং আগত ঋতুর প্রথম সাতদিন অর্থাৎ মোট দিন চোদ্দ একটু সচেতন থাকলে শরীর নিজে থেকেই নতুন ঋতুর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়। এই সময়সীমায় ঋতুভিত্তিক পথ্য আহার ও দিনাচর্যা মেনে চলা জরুরি।
১. বাসন্তিক পথ্য (নিম-বেগুন): বাঙালি সংস্কৃতির বেশ পুরোনো চল হল বসন্তের শুরুতে নিম-বেগুন তথা তেতো খাদ্য গ্রহণ। এর নেপথ্যে মূলত বসন্ত রোগ ও অন্যান্য ত্বকজ রোগ ব্যাধি প্রতিরোধের দিকটির ভাবনা থাকলেও বিজ্ঞানভিত্তিক দৃষ্টিকোণে নিম বহুমুখী ঔষধিগুণের অধিকারী। দ্রব্যগুণে নিম কৃমি নাশক, কাশহর, অরুচিনাশক, ত্বকের সমস্যায় উপযোগী ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক।
২. কাশি প্রতিরোধ: চরক সংহিতা মতে ঘি,চিনি ও মধুর সঙ্গে গোলমরিচ চূর্ণ চাটনির মতো লেহন করে সেবন করলে সব ধরনের কাশ প্রশমিত হয়, অথবা পিপুল চূর্ণ ও সৈন্ধব লবণ গরম জলের সঙ্গে সেবনেও কাশির সমস্যায় উপকার মেলে। জ্বরের সঙ্গে কাশি ও অরুচির উপদ্রব রয়েছে বা শুধুই কাশি বেশ ভোগালে তালিসাদি চূর্ণ ১ চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার খান। তবে সুগার রোগী ওষুধটি খাবেন না।
৩. গলার স্বর বিকৃতিতে: মধুর সঙ্গে যষ্টিমধু চূর্ণ মিশিয়ে চেটে খেলে কাশি, গলার স্বর বসে যাওয়া ও শ্বাসের সমস্যা কমে।
৪. ঋতুকালীন সর্দি-হাঁচি প্রতিরোধ: হঠাৎ সর্দি, সঙ্গে মাথা যন্ত্রণায় কালো জিরে কাপড়ে নিয়ে বারবারে নস্য নিন বা কয়েক ফোঁটা পিঁয়াজের রস নাকে নিন। মাথা ব্যথা কমবে। হরিদ্রা খণ্ড ওষুধটি ১ চামচ করে দিনে দুই থেকে তিনবার গরম জলের সঙ্গে খান।
৫. মাথা যন্ত্রণায় নস্যকর্ম: মাথার যন্ত্রণায় কফহর দ্রব্য সেবন, অনু তৈল, ষড়বিন্দু তৈলের নস্য ধারণ কার্যকরী। পিঁয়াজের স্বরস তাৎক্ষণিক মাথাব্যথা প্রশমনে একটি পরীক্ষিত যোগ।
৬. অম্লপিত্তের সমস্যায় আমলকী ও যষ্টিমধু: পিত্ত বিকৃত জনিত অম্ল উদ্গার বা গলা-বুক জ্বালা দেখা দিলে খাদ্যগ্রহণের আধঘন্টা আগে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে তিন গ্রাম পরিমাণ আমলকী বা যষ্টিমধু সেবন করুন। পথ্য হিসেবে ডাবের জল, ধনে ভেজানো জলও উপকারী।
৭. ঋতু হরিতকী: সুশ্রুত সংহিতা মতে হরিতকী বর্ণ প্রসাদক, উষ্ণ প্রকৃতির, মেধাজনক, চোখের পক্ষে হিতকর ঔষধি এবং সর্বোপরি রসায়ন গুণসম্পন্ন। অর্থাৎ তারুণ্য বজায় রাখতে সহায়ক। বসন্তকালে মধুর সঙ্গে নিয়মিত হরিতকী সেবন করলে নানা সংক্রামক রোগ থেকে নিরাপদ থাকা যায়।
৮. বসন্ত ঋতুতে আয়ুর্বেদ নীতিমালা: বসন্তকালে সুপাচ্য ও রুক্ষগুণসম্পন্ন আহার সেবন করা শরীরের পক্ষে হিতকারক। যেমন, গম, যব, পুরনো শালি ধান, মাংসের স্যুপ। সব্জিতে প্রধানত পটল, সজনে, মুলো, পেঁপে এবং গোরুর দুধ, দইয়ের ঘোল, আসব-অরিষ্ট, মধু, আদা শুঁঠ ইত্যাদি।
এছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম, বিবিধ ভেষজের সমন্বয়ে নির্মিত ঔষধি, একক ঔষধি (যেমন হলুদ) ইত্যাদি চূর্ণের প্রলেপ ত্বকে প্রয়োগও জরুরি। বিশেষ করে চন্দন, অগুরু, কুমকুম জাতীয় সুগন্ধিদ্রব্যের লেপ বসন্তকালের ত্বক করে তোলে নমনীয় ও লাবণ্যময়।
৯.চোখের স্বাস্থ্য অঞ্জন: অঞ্জন মানে কাজল, যা কেবল সৌন্দর্যেরই বাহক নয়, দৃষ্টিশক্তির পক্ষেও যথেষ্ট হিতকারক। আয়ুর্বেদ মতে সৌবীরাঞ্জন (সৌবীর দেশ বা সিন্ধু নদের তীরবর্তী দেশের অঞ্জন বা কাজল) রোজ ব্যবহার করা যায়। এহেন কাজল চোখের শ্লেষ্মা হরণ করে।
পরামর্শে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক ডাঃ বিশ্বজিৎ ঘোষ
related_post
রাশিফল
-
আজকের রাশিফল
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
অমৃত কথা
-
সেবা
- post_by বর্তমান
- জুন 25, 2025
এখনকার দর
-
নিফটি ব্যাঙ্ক
- post_by Admin
- জুন 24, 2025
-
নিফটি ৫০
- post_by Admin
- জুন 24, 2025
-
রুপোর দাম
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
সোনার দাম
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
ইউরো
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
পাউন্ড
- post_by Admin
- জুন 25, 2025
-
ডলার
- post_by Admin
- জুন 25, 2025