শনিবার, 19 জুলাই 2025
Logo
  • শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

জেঠুকে বাবা, জেঠিকে মা সাজিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে কুয়েত পাড়ি বাংলাদেশি যুবকের

কোথাও বাবার থেকে মেয়ের বয়স বেশি! কোথাও আবার অন্যকে বাবা ও মা সাজিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিল অনেকে।

জেঠুকে বাবা, জেঠিকে মা সাজিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করে কুয়েত পাড়ি বাংলাদেশি যুবকের

সংবাদদাতা, কাটোয়া: কোথাও বাবার থেকে মেয়ের বয়স বেশি! কোথাও আবার অন্যকে বাবা ও মা সাজিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছিল অনেকে। বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে এভাবেই জাল নথি তৈরি করে রীতিমতো পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশও চলে গিয়েছে কেউ কেউ।  কাটোয়ায় এইরকম বহু  পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণ করতে গিয়ে চোখ কপালে উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের জেলা গোয়েন্দাদের।
দশ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে ভারতে বেড়াতে এসেছিল এক যুবক৷ তার জেঠু ও জেঠিমা ভারতে বাস করেন। সেই সূত্রে আসা। এসেই জেঠুকেই নিজের বাবা ও জেঠিমাকে মা সাজিয়ে নথি তৈরি করে৷ তারপর ওই বাংলাদেশি যুবক পাসপোর্ট তৈরি করে সোজা কুয়েতে চলে যায়৷ বিষয়টি জানতে পেরে তাজ্জব বনে যান গোয়েন্দারা। 
জেলা গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া-১ ব্লকের খাজুরডিহি পঞ্চায়েতের একাইহাটে বসবাস করেন প্রমথ বাগচি ও তাঁর স্ত্রী প্রান্তি বাগচি৷ তাঁদের এক ছেলে ও তিন মেয়ে৷ দশ বছর আগে তাঁদের বাড়িতে বাংলাদেশ থেকে বেড়াতে আসে প্রমথবাবুর দাদার ছেলে সায়ন বাগচি। কিছুদিন থাকার পর প্রমথবাবুকে বাবা ও প্রান্তিদেবীকে নিজের মা সাজিয়ে নথি তৈরি করে ফেলে সে৷ ২০১৬ সালে পাসপোর্ট তৈরি করে সোজা কুয়েত চলে যায়৷ ভাইপোর এসব কাণ্ডকারখানা নাকি ঘুণাক্ষরেও টের পাননি জেঠু প্রমথবাবু৷ এমনটাই তাঁর দাবি। সায়নের বাবা প্রশান্ত বাগচি ও মা মনিকা বাগচি এখনও বাংলাদেশে থাকেন৷ সায়ন নিজেও বাংলাদেশের বাসিন্দা৷ ভারতে এসে শুধু পাসপোর্ট বানিয়ে কুয়েত চলে যায়৷ 
সম্প্রতি সায়ন পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণের আবেদন করলে পূর্ব বর্ধমান জেলা গোয়েন্দা বিভাগ তদন্ত শুরু করে৷ খোঁজখবর নিতেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়ে৷ প্রশ্ন উঠছে, তা হলে দশ বছর আগে কোথা থেকে কিভাবে এমন জাল নথি দেখিয়ে পাসপোর্ট তৈরি হল? খাজুরডিহি পঞ্চায়েত থেকেও গোয়েন্দারা সায়নের বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন৷ সেখান থেকেও লিখিত ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়, সায়ন কোনওভাবেই কাটোয়ার একাইহাটের বাসিন্দা নয়৷ 
গোয়েন্দা বিভাগের এক অফিসার বলেন, নিজের জেঠুকে বাবা ও জেঠিমাকে মা সাজিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছিল৷ তারপর ওই বাংলাদেশি যুবক কুয়েত চলে যায়৷ আমরা তদন্ত করে পাসপোর্ট বিভাগে রিপোর্ট পাঠিয়েছি৷ পাশাপাশি, জেলা পুলিসকেও রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে৷ কিভাবে এমন পাসপোর্ট তৈরি করা হল, তা আমরা তদন্ত শুরু করেছি৷কাটোয়ার একাইহাটে বাস করা প্রমথবাবুরা ৪ ভাই৷ তারমধ্যে ভাই প্রশান্ত বাগচি সহ আরেক ভাই এখনও বাংলাদেশের বাসিন্দা৷ সেখানেই তাঁরা ভোট দেন৷ আর প্রমথবাবু ছোটো থেকেই ভারতে বসবাস করেন৷ প্রমথবাবু বলেন, আমরা এসেবের কিছুই জানি না৷ এখন বাড়িতে পুলিস, গোয়েন্দা অফিসাররা এসে জানাচ্ছেন, আমার ভাইপো সায়ন নাকি আমাকে বাবা ও আমার স্ত্রীকে মা সাজিয়ে পাসপোর্ট তৈরি করেছে৷ ভাইপো এখন কুয়েতে থাকে৷ দশ বছর আগে সে আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল৷ তাছাড়া ভারতে ওর নিজের মাসির বাড়িও রয়েছে৷ সেখানেও সে করোনার আগে এসেছিল৷ এখন এসব শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। আমরা খেটে খাই৷ এসবের কিছুই জানি না।

রাশিফল