শনিবার, 14 জুন 2025
Logo
  • শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

বাজারে নাভিশ্বাস সাধারণের

 কেন্দ্রীয় সরকারি তথ্য দাবি করেছে, খাদ্যদ্রব্যের দাম কমেছে। আর সেই কারণেই নাকি চরম মূল্যবৃদ্ধি থেকে মুক্তি মিলছে আম আদমির। 

বাজারে নাভিশ্বাস সাধারণের

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারি তথ্য দাবি করেছে, খাদ্যদ্রব্যের দাম কমেছে। আর সেই কারণেই নাকি চরম মূল্যবৃদ্ধি থেকে মুক্তি মিলছে আম আদমির। সত্যিই কি তাই? বাজারে গিয়ে সাধারণ মানুষ তেমন কিছু কিন্তু মালুম করতে পারছে না। টম্যাটোর মতো দু’-একটা সব্জি ছাড়া জনতার পকেটকে রেহাই দেওয়ার মতো কোনও সুযোগ বাজার দিচ্ছে না। উল্টে নিত্যপ্রয়োজনীয় আলু-পেঁয়াজ এবং অবশ্যই ভোজ্য তেলের দাম নাভিশ্বাস তুলে দিচ্ছে মধ্যবিত্তের। 
ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ক্রিসিল দাবি করেছে, নিরামিষ এক থালা খাবারের জন্য গত মাসে, অর্থাৎ মার্চে দেশবাসীর গড়ে খরচ হয়েছে ২৬ টাকা ৬০ পয়সা। আর আমিষ প্লেটের জন্য ৫৪ টাকা ৮০ পয়সা। আগের কয়েক মাসের হিসেব দেখলে বোঝা যাবে, দামের নিরিখে এতটুকুও সুরাহা হয়নি সাধারণ মানুষের। কেন? ক্রিসিলের দাবি, ভোজ্য তেল, আলু এবং পিঁয়াজের দাম বেড়ে থাকাতেই এই সমস্যা। তাই অন্যান্য সব্জির ফলন ভালো হলেও চড়া দামের আঁচে পুড়তেই হচ্ছে আম জনতাকে।
কেন্দ্রীয় সরকার গত ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেছিল, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির হার গত দু’বছরে সবচেয়ে কম—৩.৭৫ শতাংশ। জানুয়ারিতে তা ছিল ৫.৯ শতাংশ। কিন্তু এখন বাজার ঘুরে সাধারণ মানুষের যে অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তার সঙ্গে এই পরিসংখ্যানের কোনও মিল নেই। গত দু’মাস ধরে কেজি পিছু ১০ থেকে ১২ টাকা বেশি দরে চাল কিনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এখন দেশি পটল কিনতে হচ্ছে ৮০ টাকায়, বেগুন ১০০ টাকা কেজি। ৬০ টাকায় ঝিঙে, ৫০ টাকায় পেঁপে আর ৩০-৪০ টাকা কিলো দরে ঢ্যাঁড়শ কিনতে নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ক্রিসিল অবশ্য এত দামি শাকসব্জিকে হিসেবেই আনেনি। তারা নিরামিষ থালির হিসেব কষতে গিয়ে মেনুতে রেখেছে রুটি, ভাত, আলু, টম্যাটো ও পেঁয়াজের তরকারি, ডাল, দই ও স্যালাড। আমিষ থালিতে ডালের বদলে ব্রয়লার চিকেন যোগ করা হয়েছে। ক্রেডিট রেটিং সংস্থাটির ব্যাখ্যা, অত্যন্ত ভালো ফলন হওয়ায় গতবারের তুলনায় শুধুমাত্র টম্যাটোর দাম ৩৪ শতাংশ কমেছে। কিন্তু থালির দাম আরও কমার ক্ষেত্রে বাধ সেধেছে অন্য উপকরণগুলি। এক বছরের মার্চের নিরিখে আলুর দাম ২ শতাংশ, পেঁয়াজ ৬ এবং ভোজ্য তেল ১৯ শতাংশ বেড়েছে। 
শুধু সাধারণ মানুষ নয়। পা‌ইস হোটেল চালাতেও নাভিশ্বাস উঠছে ব্যবসায়ীদের। শিয়ালদহ চত্বরের এক ভাতের হোটেলের ব্যবসায়ী শঙ্কর সাউয়ের কথায়, ‘সামনে সপ্তাহ থেকে মাছ-ভাতের দাম ৫ টাকা বাড়াব। এখন ৫০ টাকা রয়েছে। মাছের দাম যা বেড়েছে, ৫০ টাকায় দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছে না। চিকেন-ভাতের দামও বাড়াতে হবে। কিন্তু চারপাশে এত দোকান, দাম বাড়ালেই আবার ক্রেতা হারানোর ভয় পাই আমরা। সেই কারণেই এতদিন বাড়াইনি। কিন্তু এখন আর কোনও উপায় নেই।’