ইদানীং ক্লান্ত লাগছে, রক্ত কমেছে মনে হচ্ছে? হতে পারে কৃমি বাসা বেঁধেছে পেটে!
অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার অর্থ হল শরীরে রক্তের মাত্রা হ্রাস পাওয়া। রক্তে থাকে লোহিত রক্তকণিকা। লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে থাকে হিমোগ্লোবিন।

পরামর্শে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান ডাঃ তুফানকান্তি দোলাই।
অ্যানিমিয়া বা রক্তাল্পতার অর্থ হল শরীরে রক্তের মাত্রা হ্রাস পাওয়া। রক্তে থাকে লোহিত রক্তকণিকা। লোহিত রক্তকণিকার মধ্যে থাকে হিমোগ্লোবিন। সুতরাং রক্তে স্বাস্থ্যকর লোহিত রক্তকণিকা বা হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলে দেখা দেয় রক্তাল্পতা। হিমোগ্লোবিনের রং লাল। ফলে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলে তখন ত্বকে যে রক্তের আভা বা লাল ভাব থাকে তা কমে। বাইরে থেকে দেখে ত্বকে ফ্যাকাসে মনে হয়। লোকে বলে, অ্যানিমিয়া হয়েছে। তবে কোনও ব্যক্তিকে শুধু ফ্যাকাসে দেখালেই তার অ্যানিমিয়া হয়েছে বলা যায় না। রক্তাল্পতা হয়েছে কি না জানতে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা জানার প্রয়োজন হয়।
রক্তপরীক্ষায় যদি দেখা যায়— প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রতি ডেসিলিটার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১৩ গ্রামের নীচে নেমে গিয়েছে, মহিলাদের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১২ গ্রামের নীচে গিয়েছে বা কোনও সন্তানসম্ভবা মহিলার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১১ গ্রামের নীচে চলে গিয়েছে অথবা শিশুর হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১১ গ্রামের নীচে চলে গিয়েছে, তখন বলা হয় রক্তাল্পতা হয়েছে।
রক্তাল্পতার লক্ষণ
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকলে বেশ কিছু লক্ষণ শরীরে প্রকাশ পায়। উদাহরণ হিসেবে দুর্বলতা, ক্লান্তি বোধের কথা বলা যায়। যে কাজটা সহজেই করা যাচ্ছিল তা করতে বেশি সময় লাগে ইত্যাদি। আমাদের শরীরে যে বিভিন্ন কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছায় তা আসলে লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিনের উপস্থিতির কারণেই সম্ভব হয়। তাই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমলে আমাদের দেহের প্রয়োজনীয় অঙ্গগুলি এই অক্সিজেনটা পায় না। একটু কাজ করতে গেলেই রক্তাল্পতায় আক্রান্ত হাঁফিয়ে যান।
ফলে কারও কারও মাথা ঘোরে। পায়ে ক্র্যাম্প আসতে পারে। তবে রক্তাল্পতার মাত্রা যদি বেশিমাত্রায় বেড়ে যায়, তাহলে অনেকসময় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা হতে পারে। অনেকসময় মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, কেউ কেউ বলেন আগে দৌড়ে অফিসের গাড়ি ধরতে পারছিলেন। এখন আর পারেন না। কারও কারও শ্বাসকষ্ট, বুকে অস্বস্তির কথাও জানান।
কৃমিও কারণ!
আমাদের দেশে রক্তাল্পতার পিছনে অন্যতম বড় কারণ অপুষ্টি এবং আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া। এছাড়া ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতিজনিত অ্যানিমিয়াও দেখা যায় কারও কারও ক্ষেত্রে। অনেকসময় ফোলিক অ্যাসিড কমে গেলেও এমন অ্যানিমিয়া দেখা যেতে পারে। এছাড়া অনেক মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টস ও মিনারেলস কমে গেলেও হতে পারে এমন অ্যানিমিয়া। সেগুলিও যদি খাদ্যের মাধ্যমে সঠিক মাত্রায় না খাওয়া হয়, রক্তাল্পতার শিকার হতে পারেন রোগী। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকালের বাচ্চাদের সুষম খাবার খাওয়া হয়ে ওঠে না। শাকসব্জি, তরিতরকারি বা যে সমস্ত জিনিসগুলি খাওয়া উচিত, সেগুলি না খেয়ে ফাস্ট ফুডে আসক্ত হয় অনেকে। চটজলদি তৈরি করা যায়, এমন খাবার খাওয়ার অভ্যেসও থাকে কারও কারও। এর ফলেও প্রকৃত পুষ্টির অভাব থেকেই যায়। সেখান থেকে দেখা যেতে পারে নিউট্রিশনাল অ্যানিমিয়া।
অ্যানিমিয়ার পিছনে অন্যতন বড় কারম হুকওয়ার্ম ইনফেকশন। হতে পারে ছেলে ও মেয়ে উভয়ের। বিশেষত মফস্সল কিংবা গ্রামের দিকে বহু ছেয়েমেয়ে খালি পায়ে রাস্তায় হাঁটে, মাঠেঘাটে যায়। খালি পায়ের মাধ্যমেই হুকওয়ার্ম পায়ের তলা দিয়ে ঢুকে অন্ত্রে বাসা বাঁধে ও রক্তে খেতে থাকে। তার ফলেও রক্তাল্পতাও হয়। একে বলে হুকওয়ার্ম ম্যানিফেস্টেশন। সুতরাং অ্যানিমিয়া হলে কৃমির কথা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। তবে সংক্রমণ, থ্যাসাসেমিয়া, বিরল অসুখ, অটো ইমিউন ডিজিজ, মেনস্ট্রুয়েশন এবং ক্যান্সারের কারণেও রক্তাল্পতা দেখা যেতে বাচ্চা থেকে বয়স্ক যে কারও।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
related_post
রাশিফল
-
রাশিফল (১৮/০৪/২৫ )
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025
অমৃত কথা
-
সন্ন্যাসী
- post_by বর্তমান
- এপ্রিল 19, 2025
এখনকার দর
-
রুপোর দাম (১৮/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025
-
ডলার (১৮/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025
-
পাউন্ড (১৮/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025
-
ইউরো (১৮/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025
-
ডলার (১৭/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025
-
নিফটি ৫০ (১৭/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 19, 2025