মঙ্গলবার, 24 জুন 2025
Logo
  • মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

‘সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ইডি’, কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দিচ্ছে, তোপ সুপ্রিম কোর্টের

সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ধ্বংস করা হচ্ছে কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এভাবেই তুলোধোনা করল অর্থমন্ত্রকের অধীন এই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে। 

‘সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ইডি’, কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ধ্বংস করে দিচ্ছে, তোপ সুপ্রিম কোর্টের

নয়াদিল্লি ও চেন্নাই: সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ধ্বংস করা হচ্ছে কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট এভাবেই তুলোধোনা করল অর্থমন্ত্রকের অধীন এই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে। তামিলনাড়ু সরকারের অধীন আবগারি রিটেলার সংস্থা টাসম্যাকের বিরুদ্ধে অর্থ তছরুপের মামলায় ইডির তদন্তে স্থগিতাদেশও জারি করেছে দেশের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে তামিলনাড়ুর শাসকদল ডিএমকে। দলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সদস্য আর এস ভারতী বলেন, ‘আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে তামিলনাড়ু সরকারের মর্যাদাক্ষুণ্ণ করতে বিজেপির উদ্যোগ ধাক্কা খেল শীর্ষ আদালতের এই রায়ে।’
কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কাজে লাগাচ্ছে মোদি সরকার তথা শাসকদল বিজেপি—এই অভিযোগ নতুন নয়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঝাড়খণ্ড, সব বিরোধী শাসিত রাজ্যই এই নিয়ে সরব। সম্প্রতি একের পর এক মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে ইডিকে। গত বছর আগস্টে এজেন্সিকে ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত বলেছিল, ‘গত ১০ বছরে আপনারা ৫ হাজার মামলা দায়ের করেছেন। কিন্তু দোষী সাব্যস্ত হয়েছে মাত্র ৪০টি ক্ষেত্রে। আপনারা বরং প্রমাণের গুণগত মানের দিকে মনোযোগ দিন।’ চলতি বছরের জানুয়ারিতে অন্য একটি মামলায় আদালত বলেছিল, ‘ইডির উদ্দেশ্য হল অভিযুক্তদের বিনা জামিনে জেলে ভরে রাখা।’ গত মার্চ মাসে সংসদে বিরোধীদের চাপের মুখে খোদ কেন্দ্রই স্বীকার করে, গত ১০ বছরে ১৯৩ জন রাজনীতিকের বিরুদ্ধে ইডি মামলা করলেও দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মাত্র দু’জন। তারপরও ইডির ‘অতিসক্রিয়তা’ কমেনি।
এজেন্সির অভিযোগ, তামিলনাড়ুতে মদ বিক্রির লাইসেন্স থেকে বোতল তৈরির বরাত— সব ক্ষেত্রেই অনিয়ম হয়েছে। প্রায় এক হাজার কোটি টাকার হিসেব বহির্ভূত অর্থের হাতবদল হয়েছে। আর এই অভিযোগেই গত ৬-৮ মার্চ টাসম্যাকের দপ্তরে ৬০ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালায় ইডি। তা নিয়ে এদিন ইডিকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছে প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ ম্যাসির বেঞ্চ। কেন্দ্রীয় এজেন্সির পদক্ষেপে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় তামিলনাড়ু সরকার ও টাসম্যাক। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই এদিন ইডির বক্তব্যও তলব করেছে শীর্ষ আদালত। গ্রীষ্মাবকাশের পর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।
এদিন তামিলনাড়ু সরকারের তরফে আইনজীবী কপিল সিবাল ও অমিত আনন্দ তিওয়ারি বলেন, ‘মদের দোকানের লাইসেন্স সংক্রান্ত অনিয়ম নিয়ে ২০১৪ সাল থেকে রাজ্য সরকারই ৪০টির বেশি এফআইআর করেছে। কিন্তু ইডি আচমকাই সেই তদন্তে হস্তক্ষেপ করে টাসম্যাকের সদর দপ্তরে তল্লাশি চালায়। ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে হেফাজতে নেয়। টাসম্যাক কোনও ব্যক্তি নয়, সরকারি সংস্থা। কোনও এফআইআরে টাসম্যাকের নাম নেই। তা সত্ত্বেও কীভাবে তল্লাশি চালানো হল?’ ইডির বিরুদ্ধে সরকারি আধিকারিকদের ফোনের ক্লোন কপি করার অভিযোগও তোলা হয়।
সেই সওয়াল শোনার পরই দেশের প্রধান বিচারপতির ভর্ৎসনার মুখে পড়েন ইডির আইনজীবী তথা অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বলে, টাসম্যাক সরকার চালিত একটি সংস্থা। সেখানে কীভাবে তল্লাশি চলে? এতে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘন করা হচ্ছে।