সোমবার, 21 এপ্রিল 2025
Logo
  • সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

ব্যাটিং ভরাডুবি, লজ্জার হার নাইট রাইডার্সের

এভাবেও হারা যায়!  বাংলা নববর্ষে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গী হল একরাশ তিক্ততা। সহজ ম্যাচ কীভাবে কেঁদেকঁকিয়ে হারতে হয়, সেটাই দেখিয়ে দিলেন অজিঙ্কা রাহানেরা। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় নিশ্চিত জয় মাঠে ফেলে এলেন নাইটরা। 

ব্যাটিং ভরাডুবি, লজ্জার হার নাইট রাইডার্সের

মুল্লানপুর: এভাবেও হারা যায়! 
বাংলা নববর্ষে কলকাতা নাইট রাইডার্সের সঙ্গী হল একরাশ তিক্ততা। সহজ ম্যাচ কীভাবে কেঁদেকঁকিয়ে হারতে হয়, সেটাই দেখিয়ে দিলেন অজিঙ্কা রাহানেরা। চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় নিশ্চিত জয় মাঠে ফেলে এলেন নাইটরা। ১১২ তাড়া করে ১৫.১ ওভারে মাত্র ৯৫ রানে শেষ কলকাতা। আইপিএলের ইতিহাসে এত কম রানের পুঁজি নিয়ে কোনও দল জেতেনি। মঙ্গলবার ‘নিউ চন্ডীগড়’ বলে চিহ্নিত হওয়া মুল্লানপুরে সেটাই করে দেখাল শ্রেয়স আয়ারের দল। ১৬ রানের অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিয়ে নাইটদের বিরুদ্ধে মর্যাদার লড়াইয়ে জয়ী হলেন গতবারের ট্রফি জয়ী অধিনায়ক।
এই জয়ের কৃতিত্ব যুজবেন্দ্র চাহালের। লেগস্পিনারের চার উইকেটই তফাত গড়ে দিল। অবশ্য নাইট ব্যাটাররা যে চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় রাখলেন, তার জন্য কোন নিন্দাই যথেষ্ট নয়। রিঙ্কু, রামনদীপ, রাসেলদের উচিত লজ্জায় মুখ লুকিয়ে থাকা। অবশ্য লজ্জা বলে যদি কিছু থাকে। ৬২-২ থেকে ৭৯-৮, ১৭ রানে যেভাবে ছয় উইকেট পড়ল তা দুঃস্বপ্নের মতোই। আন্দ্রে রাসেল (১৭) মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন ঠিকই। কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না। রাহানে যতই নিজের ঘাড়ে দোষ নিন, এই হারের জ্বালা সহজে যাওয়ার নয়। রুদ্ধশ্বাস এই জয়ের ফলে চার নম্বরে উঠল পাঞ্জাব। অন্যদিকে, ব্যাখ্যাহীন এই পরাজয়ের মাসুল দিয়ে একধাপ নেমে কলকাতা এখন ষষ্ঠ স্থানে।
নাইটদের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। নারিন (৫) ফেরেন প্রথম ওভারেই। জানসেনের ডেলিভারিতে বোল্ড হন তিনি। কুইন্টন ডি’কক (২) আবার হতাশ করেন। মাত্র ৭ রানে দুই ওপেনারকে খুইয়ে চাপে পড়ে যাওয়া নাইটদের ভরসা দেন ক্যাপ্টেন অজিঙ্কা রাহানে ও ‘ইমপ্যাক্ট সাব’ অংক্রিশ সূর্যবংশী।  দ্বিতীয় উইকেটে তাঁরা যোগ করেন ৫৫। এরপরই ঘটে ছন্দপতন। রাহানেকে (১৭) এলবিডব্লু করেন যুজবেন্দ্র চাহাল। তবে ইমপ্যাক্ট অফস্টাম্পের বাইরে ঘটেছিল, তাই রিভিউ নিলে বেঁচে যেতেন নাইট ক্যাপ্টেন। চাহালই ফেরান রঘুবংশীকে (৩৭)। বেঙ্কটেশ আয়ারও (৭) বেশিক্ষণ থাকেননি। এরপর তাসের ঘরের মতো পড়তে থাকে উইকেট। রিঙ্কু (২), রামনদীপ (০) শিকার হন চাহালের (৪-২৮)। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন মার্কো জানসেনও (৩-১৭)। এদিকে, কলকাতার অ্যানরিখ নর্তজে আইপিএলে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ব্যাট পরীক্ষায় ফেল করলেন। আম্পায়াররা পরীক্ষার পর ব্যাট বদলাতে বলেন নর্তজেকে। এই ঘটনা নজিরবিহীন। তিনি যদিও কোনও বল খেলেননি। 
তার আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাঞ্জাব তরতরিয়ে এগচ্ছিল। ৩.১ ওভারে ৩৯ তুলে ফেলেন প্রিয়াংশ আর্য ও প্রভসিমরন সিং। তারপরই পাল্টায় ম্যাচের মোড়। হর্ষিতকে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন প্রিয়াংশ (২২)। খাতা খোলার আগেই ফেরেন অধিনায়ক শ্রেয়স (০)। এবারও ঘাতক হর্ষিত। প্রভসিমরনও (৩০) আউট হর্ষিত ও রামনদীপের যুগলবন্দিতে। তার আগে জশ ইনগ্লিসের (২) স্টাম্প ছিটকে দেন বরুণ চক্রবর্তী। পাওয়ার প্লে’র শেষে পাঞ্জাবের স্কোর ছিল ৫৪-৪। সেই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা। ১১ ওভারে স্কোর দাঁড়ায় ৮৬-৮। সেখান থেকে হোমটিমকে একশোর ওপারে পৌঁছে দেন শশাঙ্ক সিং (১৮)। শেষ পর্যন্ত ১১১ রানে থামে পাঞ্জাব। হর্ষিতই (৩-২৫) নাইটদের সফলতম বোলার। দুই স্পিনার সুনীল নারিন (২-১৪), বরুণ চক্রবর্তীও (২-২১) নজর কাড়েন। নারিন অবশ্য এরমধ্যেই রেকর্ড গড়লেন। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ান মিস্ট্রি স্পিনারের মোট উইকেটসংখ্যা দাঁড়াল ৩৬। আইপিএলে কোনও দলের বিরুদ্ধে এত উইকেট কারও নেই।