দুধের শিশুর দাঁতের যত্ন
শিশুর মুখগহ্বর ও মুখের যত্ন আমরা সচেতনতার অভাবেই অবহেলা করে ফেলি। অবহেলার ফলে খুদেদের দুধে দাঁতের সমস্যা শুরু হয়।

পরামর্শে ডেন্টাল সার্জেন ডাঃ রাজু বিশ্বাস।
শিশুর মুখগহ্বর ও মুখের যত্ন আমরা সচেতনতার অভাবেই অবহেলা করে ফেলি। অবহেলার ফলে খুদেদের দুধে দাঁতের সমস্যা শুরু হয়। এরপর যখন দুধের দাঁত পড়ে গিয়ে স্থায়ী দাঁত আসে তখন স্থায়ী দাঁতগুলোও সঠিকভাবে ওঠে না। তাই একটি শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকেই তার শরীরের অন্যান্য অংশগুলির দিকে নজর দিই তেমনই তার মুখগহ্বরের স্বাস্থ্যেরও সঠিকভাবে খেয়াল রাখা দরকার। বাচ্চার জন্মের পর থেকে সে সাধারণত মাতৃদুগ্ধের উপরেই নির্ভরশীল হয়। ব্রেস্টফিড-এর পর তাই শিশুর মুখগহ্বরের ভিতরের অংশ পরিষ্কার করে দেওয়া বাঞ্ছনীয়।
বাচ্চার জন্মের পর প্রথম ছয় মাস তার মুখে কোনও দাঁত থাকে না দুই একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ছাড়া। সেক্ষেত্রে শুধু নীচের মাড়ি এবং উপরের মাড়িই আমরা দেখতে পাই। দাঁত থাকে না বলে আমরা মাড়ি পরিষ্কার করার কোনও দরকার নেই বলেই মনে করি। অথচ বাচ্চাদের দাঁতহীন ওপর ও নীচের মাড়ি পরিষ্কার করার প্রয়োজন অবশ্যই আছে। কেননা ব্রেস্টফিড-এর পরে বা ফর্মুলা খাবার খাওয়ার পরে বাচ্চার মুখগহ্বরে খাদ্যের অংশবিশেষ লেগে থাকতে পারে ও তার থেকে ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও বাদ দেওয়া যায় না।
প্রশ্ন হল শিশুর দাঁত যখন নেই তখন যত্ন কীভাবে নেওয়া যাবে? দেখুন, আমাদের সকলের বাড়িতেই সুতির কাপড় থাকে। আর যদি তা নাও থাকে তাতেও চিন্তার কিছু নেই। ওষুধের দোকানে গজ কাপড় কিনতে পাওয়া যায়। সেই গজ পিস কিনেও কাজ চালানো যায়। সুতির কাপড় বা গজ পিস গরম জলে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে একটা আঙুলের ডগায় কাপড় জড়িয়ে নিয়ে শিশুর ওপর ও নীচের মাড়ি পরিষ্কার করে দেওয়া যায়।
এছাড়াও অভিভভাকরা নিজেদের হাতের আঙুল খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে সন্তানের দাঁতহীন মাড়ি ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিতে পারেন খাবার খাওয়ার পরে।
এরপরে বাচ্চার আস্তে আস্তে দুধের দাঁত উঠতে থাকে। এমন ক্ষেত্রেও নিতে হবে বাচ্চার দাঁতের যত্ন। শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট টুথব্রাশ পাওয়া যায়। সেই টুথব্রাশ দিয়ে বাচ্চার দাঁত ব্রাশ করিয়ে দিতে হবে অভিভাবককে। শুধু দাঁত নয়, মাড়ির অংশও পরিষ্কার করা শেখাতে হবে। এভাবে প্রায় দুই আড়াই বছর পর্যন্ত টুথ ব্রাশের মাধ্যমে বাচ্চার দাঁত পরিষ্কার করিয়ে দিতে হবে। এছাড়া রাতের বেলাতেও খাওয়াদাওয়ার পরে বড়দের মতো ছোটদেরও ব্রাশ করতে শেখাতে হবে।
বাচ্চা ৩ বছরে পা দিলে বাবা-মা চেষ্টা করুন যাতে বাচ্চা নিজে নিজে ব্রাশ করতে পারে। ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু নিজে নিজে ব্রাশ করুক অভিভভাবকের উপস্থিতিতে।
৭-৮ বছর বয়সের বাচ্চারা মোটামুটি নিজে নিজে ব্রাশ করতে শিখে যায়। তবে তারপরেও তার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
অন্যান্য যত্ন
* একটু বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাবা-মা প্রায়ই বলেন, ছোটটার দাঁত ক্ষয়ে যাচ্ছে! কেন হচ্ছে এমন বোঝা যাচ্ছে না। আসলে, অনেক ক্ষেত্রেই এর কারণ খাদ্যাভ্যাস। ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার, বিকেলের টিফিন— মোটামুটি আমরা মোট এই চারবার খাবার খাই। খেয়াল রাখুন এই সময়গুলিতে বাচ্চা যেন বেশি মাত্রায় ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্য না খায়। খেয়ে ফেললেও যেন মুখটা জল দিয়ে ধুয়ে নেয়। প্রতিবার খাবার খাওয়ার পরে ভালো করে জল দিয়ে কুলকুচি করতেই হবে।
* মিষ্টি জাতীয় খাদ্য, চকোলেটের মতো খাবার খেলেও মুখটা ধুয়ে নিতে বলতে হবে সন্তানকে।
* ছোটরা নিজের থেকে খেতে শিখলে তাকে স্যালাড, ডাঁটার মতো ফাইবারযুক্ত খাদ্য চিবিয়ে খেতে অভ্যেস করান। কারণ এই ধরনের ফাইবারপূর্ণ খাদ্য দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা অন্যান্য খাদ্যকণা সরিয়ে দিতে সাহায্য করে। এভাবে দাঁতে ক্ষয় হওয়া প্রতিরোধ করা যায়।
* এছাড়া শিশুরোগ বিশেষজ্ঞর কাছে যেমন বাচ্চাকে বছরের নানা সময়ে অভিভাবকরা নিয়ে যান চেক-আপের জন্য তেমনই, দন্তরোগ বিশেষজ্ঞের কাছেও নিয়ে যেতে হবে। তাতে কোনও অসুখ থাকলে আগাম ধরা পড়বে।
লিখেছেন সুপ্রিয় নায়েক
related_post
অমৃত কথা
-
কৃচ্ছ্রসাধনা
- post_by বর্তমান
- এপ্রিল 21, 2025
এখনকার দর
-
রূপোর দাম (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
সোনার দাম (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
ইউরো (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
পাউন্ড (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
ডলার (২০/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025
-
নিফটি ৫০ (২১/০৪/২৫)
- post_by Admin
- এপ্রিল 21, 2025