বিকিকিনি

বইয়ের তাকের দেখভাল

বর্ষায় বইয়ের আলমারির প্রয়োজন আলাদা যত্ন। পোকামাকড় ও আবহাওয়ার জলীয়ভাব থেকে নষ্ট হয় অনেক বই। কেমন উপায়ে তাক সাজালে বইয়ের ক্ষতি হবে না,  দেখতেও লাগবে খাসা?  পরামর্শে মনীষা মুখোপাধ্যায়।

জায়গার জিনিস জায়গার রাখার স্বভাব হয়তো আপনার নেই। স্নানের পর তোয়ালে বা গামছা ফেলে রাখেন বিছানার উপর! কিংবা অফিস থেকে ফিরে নিজের পার্স, ফোন কোথায় রাখলেন, তার কোনও ঠিক নেই। রান্নাঘরে হলুদ-নুন তেলের ব্যবহারের পর হয়তো সেসব আর জায়গামতো তোলা হয় না। এসব যদিও বা সয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু রুচিশীল বইপ্রেমী হলে, বই অগোছালো দেখলে ভারি রাগ হবে! সাজানোগোছানো বইয়ের তাক শৌখিন গৃহস্থের অন্যতম প্রিয় দৃশ্য। অনেকে যদিও বই পড়ে আবার তা জায়গা মতো রাখেন না, আর তাতেই এলোমেলো হয়ে যায় বইয়ের তাক। তার উপর বর্ষা এলে বইপ্রেমীদের কপালে অতিরিক্ত ভাঁজ পড়ে। এই মরশুমের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় পোকামাকড়ের দৌরাত্ম্য বাড়ে। সেসব পোকা থেকেও বইয়ের নানা ক্ষতি হয়। কাঠের আলমারিতে ঘুণ ধরাও আর এক সমস্যা। বই কাটতে ঘুণপোকাদের জুড়ি মেলা ভার! 
তাই সারাবছর যেমন বইয়ের আলমারি আপনার একটু যত্ন প্রত্যাশা করে, বর্ষাকাল এলে কিন্তু এই যত্নের   মাত্রা আর একটু বাড়িয়ে দিতে হয়। প্রিয় গল্প, সাধের কবিতা বা পছন্দের উপন্যাসরাও এতে সুখে থাকে। বইয়ের আলমারি সাজানোর কিছু নিয়ম থাকে। সেসব মেনে চললে তাক গোছানো সহজ হয়, আলমারি দেখতেও হয় খাসা। 
যে কোনও অতিথির কাছে গৃহস্থের রুচি নির্ধারিত হয় ঘরের অন্দরসজ্জা দেখে। আর ঘর গুছিয়ে রাখার অন্যতম শর্তই হল বইয়ের আলমারিটি পরিপাটি রাখা। 
আলমারির আকার
আলমারি গুছিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সকলের আগে খেয়াল রাখুন আলমারির আকার। বইয়ের সংখ্যা কত তা বুঝে আকার বাছুন। বইয়ের প্রাচুর্য থাকলে দেওয়াল জোড়া মোটা ফ্রেমের কাঠের আলমারিই সেরা। বইয়ের সংখ্যা মাঝারি হলে একটি-দু’টি দেওয়াল আলমারিতে সামলে নেওয়া যায়। বই সংখ্যায় কম হলে কাঠের আলমারি ছাড়াও বইয়ের র‌্যাক, ছোট ক্যাবিনেট কিংবা বাঁশ-বেত ও রট আয়রনের বুক র‌্যাকেও তা সাজাতে পারেন। তবে বইয়ের আলমারি কাচ ঢাকা হওয়াই ভালো। এতে বাইরের ধুলো বইয়ে জমার সুযোগ পায় না। ঘুণপোকার হাত থেকে বাঁচতে আলমারি তৈরিতে একটু ভালো মানের কাঠ ব্যবহার করুন।
হাওয়াবাতাসের ফুরসত
আলমারির আকার যেমনই হোক, সেখানে যেন হাওয়াবাতাস খেলার মতো জায়গা থাকে। একটানা ঠাসা অনেক বই না রেখে বইয়ের সারির মাঝে ছোট ছোট ঘর সাজানোর জিনিস, চীনামাটির পাত্র, ছোট ইন্ডোর প্লান্ট ইত্যাদি রাখুন। বইয়ের তাকের শেষ প্রান্তে কোনও শো পিস বা হ্যান্ড মেড ডেট ক্যালেন্ডার রাখতে পারেন। একটি আলমারিতে একাধিক তাক থাকে। এক একটি তাকে এক এক রকম ছোটখাট জিনিস দিয়ে সাজিয়ে রাখাই যায়। এতে বইয়ের তাকের সাজে বৈচিত্র্য আসবে। বইয়ের তাকটি জবরজং দেখায় না। তবে এই স্থানবিন্যাস যেন আলাদা করে চোখে পড়ে। বইয়ের র‌্যাক কিনলে তা রাখুন এমন জায়গায় যেখানে হাওয়াবাতাস খেলে। কিন্তু তা যেন জানলার ধারে না হয়। বরং বইয়ের গায়ে রোদ-বৃষ্টি যাতে বেশি না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাই চার দেওয়াল ঘেরা ফাঁকা জায়গায় র‌্যাক তৈরি করুন।
বইয়ের ধরন
অনেকেই বিষয়ভিত্তির উপর নির্ভর করে বইয়ের তাক গোছান। অর্থাৎ তাকের এক একটিতে এক একটি বিষয়ের বই। বইয়ের সংখ্যা অনেক হলে এমন করে বই গোছালে পরে কোনও বই খুঁজে পাওয়া যায় সহজে। কেউ আবার লেখক বা কবি অনুসারে বই সাজান। কেউ বাংলা ও ইংরেজি ভাষার বই আলাদা আলাদা তাকে রাখেন। কেউ আবার অক্ষর অনুযায়ী বই সাজান। এসব একেবারেই ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, তবে যেভাবেই বই রাখুন না কেন, বইয়ের আকার ও আয়তন এখানে মুখ্য। আকারে বড় বইদের তাকের এক প্রান্তে রাখুন। সেখান থেকে ক্রমে আকারে ছোট বইদের সাজান। একই মাপের বইদের পাশাপাশি রাখুন। শুধু লম্বালম্বি না রেখে কিছু কিছু বই আড়াআড়িভাবেও শুইয়ে রাখুন। আড়াআড়িভাবে সাজানোর সময়ে ভারী এবং বড়সড় দেখতে বইগুলিকে একেবারে নীচের তাকে রাখা ভালো। এতে তাক দেখতে ভালো লাগে। বইয়েরও ক্ষতি হয় না।
নিত্য পরিচর্যা
কাচ ঢাকা দেওয়াল আলমারি হোক বা বইয়ের খোলা র‌্যাক, রোজের যত্ন না পেলে ধুলো তাতে পড়বেই। দিনের মধ্যে একটা সময় বইয়ের আলমারি হালকা কোনও ঝাড়ন দিয়ে ঝেড়ে নিন। বইয়ের খাঁজে খাঁজে যেটুকু ধুলো নিত্য জমে তা রোজ পরিষ্কার না করলে বইয়ের উপর ধুলোর প্রলেপ পড়ে। এই ধুলোর মধ্যে থাকা মাইটস ডাস্ট এলার্জিরও কারণ। সম্ভব হলে তরল স্প্রে দিয়ে কাঠের আলমারির কাচও রোজ পরিষ্কার করুন। এতে আলমারি চকচক করে, টেকেও দীর্ঘদিন। কাঠের আলমারি পুরনো হয়ে গেলে ও ঘর স্যাঁতসেঁতে হলে প্রতি তিন মাস অন্তর উইপোকা মারার ব্যবস্থা করতে হবে। বই পড়ার সময় বইয়ে মলাট দেওয়ার অভ্যাস থাকে অনেকের। এটি খুবই সুঅভ্যাস। তবে এতে পরবর্তীতে বইটি আর আলাদা করে চেনা যায় না। তাই হার্ড বাউন্ড বইয়ের  উপরে জ্যাকেটের মতো যে মলাট থাকে, তা পরিয়ে রাখুন। তাতেও ধুলো-ময়লার থেকে খানিক রক্ষা পায় বইটি।
বর্ষার যত্ন
বর্ষাকালে বইপ্রেমীদের কাজ বাড়ে। এই সময় পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ে। বইয়ের তাক সুরক্ষিত রাখতে বইয়ের তাকের কোনায় কোনায় কালো জিরে ছড়িয়ে রাখুন। বর্ষায় বইয়ের পাতা আবহাওয়ার জলীয় ভাব শুষে নেয়। কালোজিরে সেই সমস্যার উত্তম সমাধান। বইয়ের ভিতর কোনও কোনও পাতায় শুকনো নিমপাতা রাখুন। নিমের কড়া গন্ধে পোকামাকড় আসে না। পুরনো দিনের বই সংগ্রহে থাকলে বইয়ের আলমারির ভিতর বর্ষায় কয়েকটা ন্যাপথালিন ফেলে রাখুন। এতে বইয়ের ভিতরের সোঁদা গন্ধ দূর হবে। ন্যাপথালিনের পরিবর্তে একটি কাগজে কর্পূর ও বেশ কয়েকটি গোলমরিচ একসঙ্গে মুড়েও রেখে দিতে পারেন আলমারির নানা স্থানে।
16Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশাদারি কাজকর্মে উন্নতি ও আয় বৃদ্ধির যোগ। জ্ঞাতি শত্রুদের থেকে সতর্ক থাকবেন। স্বাস্থ্য খুব একটা...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৭৩ টাকা৮৫.৪৭ টাকা
পাউন্ড১০৫.৮৫ টাকা১০৯.৬১ টাকা
ইউরো৮৭.৮২ টাকা৯১.২১ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা