শরীর নিয়ে চিন্তায় থাকতে হবে। মাথা ও কোমরে সমস্যা হতে পারে। উপার্জন ভাগ্য শুভ নয়। ... বিশদ
চুন প্রয়োগের পনেরো দিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে হাল্কা সেচ দেওয়া দরকার। আখ বসানোর জন্য ৯০ সেমি অর্থাৎ তিন ফুট দূরত্বে ৩০ সেমি চওড়া ও ২২ সেমি গভীর করে নালা কাটতে হবে। নালার মধ্যে ৭-৮ সেমি মাটি কুপিয়ে আলগা করে দিতে হবে। আখ লাগানোর আগে বীজ আখ ভালো করে বাছাই করা জরুরি। বীজ আখ বাছাইয়ের পদ্ধতি হল, আখ গাছের গোড়ার দিকে যতদূর পর্যন্ত শিকড় বের হয়, সেই অংশ বাদ দিয়ে উপরের অংশের পুরোটাই বীজ আখ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে উপরের দিকে এক-তৃতীয়াংশই বীজ আখ হিসেবে সবচেয়ে উপযোগী। তবে ৯ মাস বয়সের আখের ডগার দিকের এক-তৃতীয়াংশ এবং ৬-৮ মাস বয়সের আখের মাঝের অংশ বীজ আখ হিসেবে খুবই উপযোগী। বীজ আখ যেন তাজা ও চোখগুলি যেন সতেজ থাকে। এবং যেন রোগপোকায় আক্রান্ত না হয়। রোগাক্রান্ত বীজ আখ কখনওই সংগ্রহ করা যাবে না। আখের গায়ে লাল ডোরা দাগ দেখা গেলে বীজ আখ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া ফুল এসে যাওয়া আখও জমিতে লাগানো যাবে না।
বীজ আখ জমি থেকে কেটে নেওয়ার ২৪-২৮ ঘণ্টার মধ্যে সরাসরি জমিতে বসাতে হবে। একর প্রতি জমিতে বীজ আখ লাগবে ২০-২৫ কুইন্টালের মতো। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আখ বসানো হয়। তবে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসেও আখ লাগানো যেতে পারে। জমিতে বীজ আখ বসানোর আগে ভালোভাবে শোধন করে নিতে হবে। বীজ আখ বসানোর আগে দুটি বা একটি গাঁট বিশিষ্ট আখের টুকরোকে ২৪ ঘণ্টা পরিষ্কার জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এর পর শোধনের জন্য ৪০ লিটার জলে ১০০ গ্রাম মিথোক্সি ইথাইল মারকিউরিক ক্লোরাইড ওষুধ মিশিয়ে বীজ আখের টুকরোগুলিকে ২০ মিনিট ধরে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে। আখের উন্নত জাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, জলদি প্রজাতি (১০ মাস মেয়াদি) সিওজে, সিও-৭২১৮, মতি (সিও ৮৭২৬৩), সিও ৬২১৯৭, রসভরি, রশ্মি প্রভৃতি। মাঝারি নাবি জাত (১০-১২ মাস মেয়াদি) সিও-৯১, সিও ৬২০৩৩, সিও ৭২০২, সিও ৭২২৪, সরযূ (সিও ৮৭২৬৮), রাজভোগ, মাধুরী প্রভৃতি। পানীয় রসের উপযোগী জাতগুলি হল, সিও ৯৯৭, সিও ৭২১৮, সিও ৭২০২, সিওজে-৬৪ প্রভৃতি। আখের জমিতে সারের প্রয়োগ করতে হবে সঠিক নিয়ম মেনে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আখ চাষের জমিতে বেশি করে জৈবসারের প্রয়োগ করা দরকার। এজন্য জমি তৈরির সময় একর প্রতি চার কুইন্টাল জৈবসার বা চার কুইন্টাল নিমখোল এবং ৬ কেজি অ্যাজোটোব্যাক্টর ও পিএসবি প্রয়োগ করতে হবে। মূলসার হিসেবে ২৭ কেজি নাইট্রোজেন, ৪০ কেজি ফসফেট ও ১০ কেজি পটাশ একরে প্রয়োগ করা উচিত। চাপান সার হিসেবে ২৭ কেজি নাইট্রোজেন ও ২০ কেজি পটাশ বীজ লাগানোর ৪৫ দিন পর এবং ২৭ কেজি নাইট্রোজেন ও ১০ কেজি পটাশ বীজ আখ লাগানোর ৯০ দিন পর প্রয়োগ করতে হবে। ঘাটতিযুক্ত জমিতে ১৬ কেজি সালফার ১০ কেজি জিঙ্ক সালফেট ও ৪ কেজি বোরাক্স জৈবসারের সঙ্গে মিশিয়ে জমি তৈরির সময় একরে প্রয়োগ করতে হবে।
রোগপোকার আক্রমণ দেখা দিলে কৃষি আধিকারিকদের পরামর্শ মতো ওষুধ প্রয়োগ করা দরকার। মাটিতে রসের অবস্থা বুঝে আখের জমিতে সেচের ব্যবস্থা করতে হবে। আখ বসানোর ২-৩ দিনের মধ্যে একবার সেচ দেওয়া দরকার। এর পর বর্ষা শুরুর আগে পর্যন্ত ১৫ দিন অন্তর এবং বর্ষার পর অবস্থা বুঝে এক মাস অন্তর সেচের প্রয়োগ করতে হবে।